আমার পরিচিত অনেকেই বলে আমার সাথে নাকি মানুষের চেয়ে জানোয়ারের মিল বেশী। তাই দয়া করে কেউ আমার কাছ থেকে মানুষের ব্যাবহার আশা করবেননা। সংখ্যাত্বত্ত
অনেক সুযোগসন্ধানী এবং বিবেকহীন এখানে সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক করতে চাইছে। কিন্তু এখানে সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক করাটা চরমভাবে অমানবিক। কিন্তু এটা এখানে পরিস্কার, বিরূধীদলের দাবী করা ২৫০০ সংখ্যাটা যেমন হাস্যকর সরকারী ভাষ্যমতে যে সংখ্যা বলা হচ্ছে তাও চরম মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।
তবে মৃতের সংখ্যা যে শত শত হবে সেটা খুবই স্বাভাবিক একটি অনুমান। কারন এরকম গিজ গিজ করা জনসমাবেশে ফায়ার ওপেন হলে কি অবস্থা হয় সহজেই অুনুমেয়।
মিডিয়া মিডিয়া এবং মিডিয়া........................................................
মিডিয়ার ভূমিকা ছাড়া এই লেখাটা শেষ করা অসম্ভব। ঐ ভয়াবহ রাতে মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে যেমন এক পক্ষে রয়েছে চরম সমালোচনা তেমনি অন্যপক্ষে রয়েছে মিডিয়াকে এফিশিয়েন্টলী হ্যান্ডেল করতে পারার চরম তৃপ্তি। সো মিডিয়ার ব্যপারটা যে অন্যতম প্রাসংগিক হবে তাতে আর অবাক হবার কি আছে? আসুন তাহলে মিডিয়া নিয়ে যতটুকু আলোচনা করলেই নয় ততটুকুই করি।
কয়েকদিন আগে যখন সাঈদীর রায় নিয়ে জামাত শিবির সারাদেশ ব্যাপী প্রচন্ড তান্ডব চালালো এবং তা প্রতিহত করতে গিয়ে পুলিশ গুলি চালিয়ে প্রায় ২০০ বা ততোধিক লোকজন'কে হত্যা করে তখনও দেশী মেইনষ্ট্রিম মিডিয়া এসব নিউজ কাভার করেনি। তখনও সবাই একব্যাক্যে বলছিলো সবই প্রোপাগান্ডা। পরে যখন একের পর এক ভিডিও প্রকাশ পেতে লাগলো তখন সরকার বিব্রত হয়ে পড়লো। এমনিকি আওয়ামী ভাবাপন্ন মেইনষ্ট্রীম মিডিয়াও বাধ্য হয়ে পুলিশ বাহিনীর এই অতি আক্রমনাত্বক ভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে লাগলো। বলা যায় অন্তত নিজেদের সুশীল সত্ত্বাটুকুর অস্তিত্ব যাতে বিপন্ন না হয় সেইজন্য।
আবার তাকে ব্যাল্যান্স করার জন্য পুলিশ বাহিনীর উপর শিবিরের নির্যাতন গুলোকেও চরমভাবে হাইলাইট করা হলো যাতে পুলিশের কর্মকান্ড কিছুটা জাস্টিফায়েড করা যায়। প্যাটার্ন'টা মনে রাখুন কিন্তু। এইখানে বলা অপরিহার্য যে বাংলাদেশের ৪২ বৎসরের ইতিহাসে আমরা একদলীয় শাসন কিংবা স্বৈরসাশন দেখেছি কিন্তু রাজপথে ২০০ লোক কে এভাবে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়নি। এখানে আরেকটু কথা বলা দরকার যারা মনে করছেন শিবির ২০০ মরলো কি ২০০০ মরলো তাতে কিছু যায় আসেনা তাদের জ্ঞাতার্থে বলি, প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুসারেই অন্তত ৪৪ জন সাধারন লোক নিহত হয় পুলিশের গুলিতে। আরো ভয়াবহ চিত্র হলো যেই পাকিস্তানকে আমরা সারাক্ষন ফাকিঁস্তান ফাকিস্তান বলে গালি গালাজ করি সেই ফাকিঁস্তানেও পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে গুলির ঘটনা আলোচিত হলে তাতে শাস্তি কার্যকর হয় কিন্তু আমাদের এইখানে ঐ একই ঘটনার পরে কি হয়েছে তার কোন আপডেট আমার অন্তত নলেজে আসে নাই।
এখানে আবারো আরেক প্রশ্নের অবতারনা করি যেখানে এই ঘটনায় প্রায় ২০০ লোক মারা যাবার পরেও পুলিশের নৃশংসতায় যেখানে বিরোধী পক্ষকে কোনভাবেই হত্ব-বিহ্ববল বা কমজোর মনে হয়নি বরং অনেক বেশী উজ্জিবীত মনে হচ্ছিলো সেখানে ৬'ই মের ঘটনায় বিরোধী জোটগুলোতে কি ধরনের নীরবতা নেমে এসেছে এবং তারা কতটুকু নমনীয় হয়েছে সেটা দিনের আলোর মতই পরিষ্কার। খালেদা জিয়া ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েও তার সেই সময় শেষ হওয়ার পরেও একটা সমাবেশ মাত্র করার ক্ষমতা দেখাতে পারেননি। যা তাকে রাজনীতির অঙ্গনে হাসির পাত্রে পরিনত করেছে। তাহলে ৬'ই মের ঘটনার তাৎপর্য কতটা ভয়াবহ ছিলো?
আরো লক্ষ্যনীয় যে ৬'ই মে সকাল থেকে সারাদিনে সংঘর্ষের ঘটনায় কিন্তু প্রায় ১০-১৫ জনের মৃত্যু হয়েছিলো যা অন্য সময় হলে সেটাই একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যা হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু রাতের তীব্রতার কাছে এটি মিলিয়ে গেছে খুব সহজেই।
এবং তাতে এটা খুবই স্পষ্ট যে সবাই আসলে স্বীকার করেই নিয়েছে যে রাতের আধাঁরে একটি ভয়াবহ হত্যাকান্ড ঘটে গিয়েছে আর তার কাছে বাকি সব সংখ্যাই ম্লান হয়ে গিয়েছে।
আর যারা মিডিয়ায় কিছু আসলোনা করে চিল্লাচ্ছেন তাদের কে বলবো একটু চিন্তা করুন নিজেই। যেখানে সরকার একের পর এক বিরোধিমতের মিডিয়া বন্ধ করে চলেছেন এবং ঐদিন নুন্যতম কোন প্রাথমিক ঘোষনা না দিয়ে দুটি চ্যানেল কেন বন্ধ করে দিলেন? কারন এই কাজটা সরকারের জন্য করা দরকার ছিলো। এরকম একটা ভয়াবহ অভিযানের পর সরকার বিব্রত হবার মত এভিডেন্স হয়তো অনেকের কাছেই ছিলো যেটা সরকার কোনভাবেই চায় নাই যে প্রকাশ হোক। এজন্যই সরকার বরং এই দুর্নাম কাধেঁ নিয়েছে যে তারা বিরোধিমতের টেলিভিশন বন্ধ করেছে।
কারন তাদের পরিস্কার এই উপলবদ্ধি ছিল, টেলিভিশন বন্ধ করে দেওয়াটাই বরং কম ক্ষতিকারক। শুধু তাইনা, এর মাধ্যেমে বরং অন্যদের কাছেও এই বার্তা চলে গেল যে সরকার এই ব্যাপারে জিরো টলারেন্স শো করবে। দেখুন সরকার রাতের আধাঁরে অভিযান চালালো, লাইট নিভিয়ে দিলো, লাইভ কাভারেজ করতে দিলো না, সাংবাদিক দের কে সুষ্ঠভাবে সংবাদ প্রচার করতে দিলো না, বিরোধীমতের দুটো টেলিভিশন বন্ধ করে দিলো আর তারপরে আপনারাই আবার প্রমান কই প্রমান কই বলে অবিবেবচকের মত চিল্লাতে লাগলেন। হাওয়া ভবন যে দুর্নীতির খেতাব অর্জন করেছে এবং সাধারন মানুষের মধ্যে একটা প্রবল পারসপেশন ছিলো যে হাওয়া ভবন তখন দুর্নীতির একটি আখড়াতে পরিনত হয়েছে তখন তো আপনাদের ঐ পারসেপশন গ্রহন করতে বাধেঁনি। তখন তো আর আপনারা পদে পদে প্রমান প্রমান কই বলে সোরগোল করেননি।
আমার এই মুহুর্তে আরেকটা প্রশ্ন মাথায় আসলো। এই ঘটনার পরেই খুব সম্ভবত ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি'তে একটি টক'শোতে আলীগের তরুন এমপি শাহরিয়ার'কে প্রশ্ন করা হলো যে কেন লাইভ টেলিকাস্ট করতে দেওয়া হলো না আর কেনইবা দুটি টেলিভিশন চ্যানেল'কে বন্ধ করে দেওয়া হলো? শাহরিয়ারের উত্তর ছিলো, এরকম একটি বড় অভিযানে অনেক কিছুই ঘটতে পারতো। তাই সর্তকতার জন্য হয়তো এরকম পদক্ষেপ নিয়ে থাকতে পারে। তার বক্তব্যর সুত্র ধরেই এটা পরিস্কার যে উনি আসঙ্কা করছেন কিছু ঘটতে পারতো। তাহলে সেই কিছুটা যে ঘটেনি তার গ্যারান্টি কোথায়? আমাদের কাছে যে টুকরো টুকরো ছবি বা ভিডিও আছে তার নমুনা তো ঐ আশঙ্কার দিকেই দিক নির্দেশনা দেয়
আর যারা নিহতের লিষ্ট কই লিষ্ট কই বলে সরব হয়ে উঠছেন তাদের মনে হয় সামগ্রিক ভাবে চিত্রটা মুল্যায়ন করা উচিত।
আজকে কিন্তু আমাদের স্বাধীনতার ৩০ লাখ শহীদের প্রমান স্বরুপ কোন লিষ্ট দেখাতে পারবোনা। এই উদাহরন যদি আপনার কাছে পছন্দ না হয় তাহলে চিন্তা করেন লঞ্চ ডুবির কথা। একটা লঞ্চডুবিতেও নিহতের লিষ্ট করা ডিফিকাল্ট হয়ে পড়ে। আর হেফাজতের সমাবেশে যারা এসেছিলো তাদের পরিপ্রেক্ষিত টা আমাদের চিন্তা করা উচিত। এরা বাসা-বাড়িতে থাকেনা।
আর এরা বলতে গেলে সমাজের অনেক নিচু শ্রেনীর বাসিন্দা। যারা কখনো নিজে থেকে এসে আমার আপনার সামনে দাড়াতে পারবেনা। অনেকেরই হয়তো দীর্ঘসময় পরিবারের সাথে যোগাযোগ এমনিতেই হয়না। এইবার একটি প্রাসংগিক বিষয়ও বিবেচনা করা দরকার, ৭/৮ ই মেতে কোন একটি পত্রিকায় দেখলাম, যারা যারা দুই দিন ধরে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত ছিলো তাদের একটা লিষ্ট করা হচ্ছে। এর মানেটা খুবই পরিস্কার।
তো যেখানে এই অবস্থা সেখানে আপনি কিভাবে আশা করেন তারা এবং তাদের পরিবার দৌড়াতে দৌড়াতে এসে বলবে, তাদের কে কে নিখোঁজ? বরং তারা বলবে যে মারা গেছে যাক অন্তত আমি আমার বাকি সন্তান-সন্ততিদের নিয়ে বেচেঁ থাকি। কয়জন মানুষের বুকে সাহস আছে যে সরকার মহাশয়ের সাথে বাহাদুরি করতে যাবে?
তারপরেও যারা নাদানের মত বুঝতে চান্না তাদের কে আরো একটু খেয়াল করিয়ে দেই। সেইদিন বিরোধীজোটের হেভীয়েট নেতারা যারা ঐ হত্যাকান্ডের কথা সাহস করে জোর গলায় প্রতিবাদ করেছিলেন তাদের অবস্থা আপনাদের মনে করিয়ে দেই। জনাব এম, কে আনোয়ার যিনি তখন পলাতক ছিলেন এবং এখন জেলে, জনাব সাদেক হোসেন খোকা তখন গা ঢাকা দিয়েছিলেন এবং জনাব আন্দালিব রহমান পার্থ যার বাসা নকি তখন পুলিশ ঘিরে ছিলো এবং সেই ঘটনার পরে এখন পর্যন্ত তাকে আর টকশোতে দেখা যায়নি। যেটা নাকি খুবই আশ্চর্য।
আর বাবুনগরী তো রিমান্ডের অত্যাচারে এখন লাইফ সাপোর্টে। যখন আমার এই লেখা পাবলিশ হবে তখন হয়তো মারা গিয়েও থাকতে পারে। তো এদেরই যখন এই অবস্থা তখন ভিতরে ভিতরে অবস্থা আরো কি হয়ে থাকতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
শাপলা কিলিংয়ের ব্যাপারটাতে অনেকেই অবিশ্বাস করছে শুধু এই ভেবেই যে এরকম ভয়াবহ ব্যাপার কি আসলেই ঘটতে পারে বাংলার মাটিতে দেশি কোন বাহিনীর দ্বারা? তাদের জন্য বলছি স্মরন করুন মাত্র চার বৎসর আগেই সংঘটিত ভয়ংকর হত্যাযজ্ঞের কথা। যেখানে নৃশংতার মাত্রা ছিলো ভয়াবহ রকমের, সেখানে শুধু হত্যাই করা হয়নি বরং অসহায় নারীদের প্রতি চালানো হয় চরম পাশবিক নির্যাতন।
যদিও তখনকার কোন মিডিয়াতে আসেনি সেই খবর, আমাকে জানতে হয়েছিলো বিবিসির খবর এবং ব্যাক্তিগত সুত্র থেকে। তবে পরবর্তীতে যখন পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়ে আসে তখন কিছুটা ডিসক্লোজ হয়। এবং এই কারনেই সেনাকুঞ্জে অফিসাররা প্রধানমন্ত্রীর সাথে মিটিংয়ে অসদাচারন করে যে কেন পিলখানায় অভিযান চালানো হয়নি। তো যেটা বলার জন্য এই প্রসংগের অবতারনা, বিডিআর হত্যাযজ্ঞও ছিলো আমাদের কল্পনার বাইরে। কিন্তু যে কারনেই হোক তা ঘটেছে।
ঐখানেও যদি মিডিয়া ব্ল্যাকআউট করা যেত তাহলে আজকে হয়তো বিডিআর হত্যাকান্ড নিয়েও বলা হত গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তখন অনেকের কাছেই বিশ্বাসযোগ্য হয়নি, যেই দরবার হলে এত উৎসবমুখর পার্টি হয়েছে সেই জায়গাটি নাকি অফিসারদের তাজা রক্তে প্লাবিত হয়েছে। অবিশ্বাস্য ছিলো কিন্তু সেটাই ঘটেছে। কিন্তু সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া যায়নি কারন, তারা প্রজাতন্ত্রের অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন দায়িত্বে ছিলো সেখানে হেফাজতের কর্মীরা তো তাদের পায়ের নখের সমানও নয়
আর লাশ গুম কিভাবে হলো বা এত রক্তের দাগ কিভাবে সরিয়ে নেয়া হলো সে প্রশ্নের জবাবে এটি খুবই পরিস্কার যে পুরো অভিযানটি পরিচালিত হয়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কোন সংস্থা থেকে এবং অত্যান্ত সুক্ষভাবেই প্ল্যান করা হয়েছে। সেই প্ল্যান মোতাবেক ৫০০-৬০০ কিংবা যদি এক হাজার লাশও হয়ে থাকে তা গুম করা খুব বেশী কঠিন কিছু কি? মনে রাখা দরকার তাদের প্রিপারেশন ছিল যে লাশের সংখ্যা বেশ ভালোই হতে পারে।
সেক্ষে্ত্রে এই রাতের আধাঁরে এই লাশ গুম করা কি খুব বেশী কঠিন কিছু? লাশগুলো ট্রাকে তুলে দিলে সেই ট্রাকগুলো যদি পুর্ব নির্ধারিত জায়গায় চলে যায় এবং সেখানে অপেক্ষারত টিমের কাছে হস্তান্তর করে তবে তাতে খুব বেশী সময় লাগার কথা বলে আমার মনে হয়না। এবং খুব সম্ভবত লাশ গুম করার জায়গা একাধিক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। এবং এগুলো সকাল হওয়ার অনেক আগেই জায়গামত চলে গেছে বলেই ধারনা। ভুলে যাবেননা কিন্তু, ঐদিন দশ হাজার ফোর্স ছিলো। সেই জীবিত দশ হাজার ফোর্সের জন্য যদি ট্রান্সপোর্টেশনের ব্যাবস্থা থাকে সেই ক্ষেত্রে মৃত ৫০০ লোকের ট্রান্সপোর্টেশনের ব্যাবস্থা করা কি এতই কঠিন? তাদেরকে কে তো কোনমতে স্তূপ করে রাখলেই হয়।
আর রক্তের কথা যদি বলি তাহলে বলব আমি জানিনা কি কারনে ঐদিন পানি দিয়ে রাস্তা এরকম সয়লাব করে দিয়েছিলো। ভিডিও তে পরিস্কার দেখা গিয়েছে সকাল বেলায় রাস্তায় পানি দিয়ে ধোয়া। সরকার নিশ্চই এর অন্য কোন ব্যাখ্যা দিবে কিন্তু সন্দেহ থেকেই যাবে।
এই হত্যাকান্ডের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে অনেকবারই অনেক সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের মুখে শুনেছি প্লীজ দয়া করে গুজব ছড়াবেননা। যেই ঘটনার কোন ভিত্তি নাই প্রমান নেই তাকে অযথা আমলে নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
তাদের উদ্দেশ্য আমার বিনীত অনুরোধ একটি সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন তার দায়িত্ব হয়ে পড়ে দেশের দেখ-ভাল করা। আমি হয়তো সচেতন নাগরিক হিসেবে সহায়তা করতে পারি কিন্তু মুল দায়িত্ব থাকে সরকারেরই। আর আমাদের সরকার বাহাদুরের অন্তত বুদ্ধির প্রয়োজন নেই। না হলে এই সরকারের আমলে বিভিন্ন অপকর্মের পরেও তারা এখনো পর্যন্ত ফেরাউনের মত শক্তিশালী হয়ে থাকতে পারতোনা। তো আমার সেই পরাক্রমশালী সরকার কি বুঝতেই পারলোনা যে এইভাবে অভিযান চালালে সুযোগের অপেক্ষায় থাকা আমার প্রানপ্রিয় বিরোধি দল গুজব ছড়ানোর সুযোগ পাবে? সরকার তো ইচ্ছা করলেই খুব সহজেই বির্তক'টা এভয়েড করতে পারতো।
স্রেফ দুটো কাজ করলেই অন্তত আজ যে গুজব ছড়াচ্ছে তার ৭৫% নাই হয়ে যেত। এক হচ্ছে, ফজরের নামাযের পর পরই হালকা আলোতেই পুর্ব ঘোষনা দিয়ে যদি অভিযান চালাতো আর সকল টিভি চ্যানেল কেই স্বাধীনভাবে লাইভ টেলিকাস্ট করতে দিত। না আপনাদের সরকার মহশয়ও ঐকাজ করতে যায়নি আবার আমারাও মুখ খুলে সরকারের সমালোচনা করবো তাও আপনাদের মুখ ভারী করে দেয়।
অনেকেই আছেন যারা ঠিক বিশ্বাস করতে পারেনা যে গনতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকার এবং যেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হলেন গনতন্ত্রের মানসকন্যা সেই সরকার কি এতটা নির্দয়, নির্মম এবং নিষ্ঠুর হতে পারে? তাদের উদ্দেশ্যে আবারো বলছি যেহেতু ঐদিন রাতের প্রমান মাষ্টার প্ল্যান মাফিক গায়েব করা ফেলা হয়েছে তাই আমাদেরকে একটু অতীতাশ্রয়ি হতে হবে।
একটু ফিরে দেখি এই সরকারের পথচলা।
আপনাদের হয়তো মনে থাকবে সরকারের প্রথম দিকে যখন সরকার তার মধুচন্দ্রিমা উদযাপন করছে তখন তেল, গ্যাস, বন্দর রক্ষা কমিটির একটি মিছিলি হয়েছিলো। আপনারা যেকোন মানুষই জানেন এইসব নিরীহ বাম'দের মিছিল কেমন হয়। সেই মিছিলেই সরকারী পুলিশ হামলা চালিয়ে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদের পা ভেংগে দেওয়া হয়। উনাকে তখন রাস্তা থেকে চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। তারপরে দেখুন শেয়ার বাজারে ৯৬ এর মত একই ভাবে চরম ভাবে ডাকাতি করে সাধারন মানুষ'কে সর্বশান্ত করে তাদের কে প্রতিবাদ টাও করতে দেয় নি।
রাস্তার ছিচঁকে হাইজ্যাকার'রাও তো ৫০০ টাকা ছিনতাই করে ২০ টাকা গাড়ী ভাড়া দেয়। আর এরা রাষ্ট্রের সহযোগিতায় ডাকাতি করে আবার প্রতিবাদী মানুষ গুলেকেই লাঠি পেটা করে ভাগিয়ে দিচ্ছে। আমি বুঝিনা এইগুলোই কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কিনা। আরো বলবো? বিরোধী দলের চিফ হুইপ'কে রাস্তায় লাঠি পেটা করে কিভাবে ধাওয়া দিয়েছে এবং তার ফল স্বরূপ নাকি ঐ পুলিশ অফিসার রাষ্ট্রেপতি পদকের জন্য মনোনীত হয়েছে। এখন সেই ঘটনাও যদি রাতের আধারেই হত তখন তাকেও হয়তো গুজব বলেই উড়িয়ে দেওয়া হত।
আর সর্বশেষ যে ঘটনা উল্লেখ করবো তা হলো শিক্ষকদের একটি সমাবেশ ছিলো কিছু দাবী দেওয়া নিয়ে। সেখানেও এই পুলিশ হামলা চালায় এবং নিষিদ্ধ পিপার স্প্রে প্রয়োগ করে। শুনেছিলাম সেখানে ১ জন অথবা ২ জন মারা গিয়েছিলো। এছাড়াও বিভিন্ন সময় প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের সামনেই মিছিল কারীদের উপর পুলিশের পাশাপাশি ছা্ত্রলীগের পালিত গুন্ডারা যেই ভাবে অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে তারা যদি রাতের আধাঁর আর ফুল লোডেড গান পায় তারা কি পরিমান হিংস্র হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
লেখাটা আরো বড় করার ইচ্ছে ছিলো।
কারন সরকার সমর্থক তাবৎ মিডিয়া গোষ্ঠি, বুদ্ধিজীবি, গলাবাজ নেতা এবং সাংবাদিক নেতারা যখন দিনের পর দিন মিথ্যাচার করে বেড়ায় তখন তার বিপরীত স্রোতে দাড়াঁতে হলে লেখাটা একটু বড় হয়েই যায়। কিন্তু পাঠকের সময় স্বল্পতার কথা চিন্তা করে হঠাৎ এখানেই থেমে গেলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।