আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রম্য কথা - জীবন থেকে নেয়া

ঘাটের এই পারে বসে আছি ঐ পারে যাওয়ার অপেক্ষা।

ক্যাটরিনা, রিটা আর আইলার মতো ধেঁয়ে আসছে আমার অডিট। তাই আমি হাসিখুশী থাকার চেষ্টায় আছি। জীবনে যত হাসির ঘটনা আছে, তা মনে করার চেষ্টা করছি। আজকে একটা হাসির ঘটনা মনে পড়লো।

ডঃ তারেক মুসলেহ উদ্দীন স্যার যিনি কিছুদিন সিলেট ভার্সিটির ভিসি ছিলেন। স্যার আর আমি প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর ঢাবি'র মল চত্বরে হাঁটাহাঁটি করতাম । কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে স্যার উনার বাসায় যেতেন । আর আমি আমার রুমে চলে আসতাম। মাঝে মাঝে আবার স্যারের বাসায় ও যেতাম।

একদিন স্যারের বাসায় গেছি। স্যার বললেন- ভালা মিষ্টি আছে, খাইলে ভিতরে থাকি লইয়া আও। আমি একটা প্লেটে করে মিষ্টি নিয়ে আসলাম। স্যারের সামনে বসে আছি। আর মিষ্টি দেখেই কিছুক্ষণ পর পর আমার হাসি আসে।

স্যার বলেন, কিতাবা ওতো আসো খেনে? স্যারের এই কথা শুনে আমার হাসি আরো বেশি আসে। আমি কিছুতেই হাসি থামাতে পারিনা। স্যার আবার জিগ্গাসা করেন। কিন্তু আমি স্যারকে বলি কেমন করে? ঘটনা হলো। আমাদের এক দুষ্টু বন্ধু আছে।

সবাই যখন আড্ডা দেয় ক্যাম্পাসে বসে ও তখন মুখে তালা দিয়ে হাতে চাবি নিয়ে বসে থাকে। কিন্তু কোনো স্যার যখন ক্লাস নেয়, তখনই ও পিছনের বেন্চে বসে ফুসুর ফুসর আলাপ শুরু করে। দুনিয়ার সব গপ। ওর ক্লাস করতে ভালো লাগেনা। ক্লাসে তার শুধু গপ করতে ভালো লাগে।

তো এক সিলেটি স্যার ক্লাস নিচ্ছেন। এতো রসিক স্যার জীবনে দেখিনাই। আর স্যারের ক্লাস মানে মজা আর মজা। আর স্যার বেশী গু শব্দ ব্যবহার করতেন। যেমন-ক্লাসে যে খারাপ করতো।

তাকে কান ধরে বলতেন- পড়ালিখা পারবি কীভাবে? মাথাতো গু এ ভর্তি। ষাঁড়ের গু হলো কথা ছিলো, তোর মাথার ভিতরতো একেবার বলদের গু। কেউ একজন তখন বলতো, স্যার বলদের গোবর হয় । গু না স্যার। স্যার বলতেন, গোবরের একটা ইজ্জত আছে না, এর মাথায় গু-ই ভালো।

বন্ধু ওর গপের দোকান খুলে বসেছে। বললো, দোস্ত। গত সপ্তাহে তোদের সিলেট গেছিলাম। আমি আস্তে করে বললাম, চুপ কর। স্যার, খেয়াল করলেন।

আমাদের দু জনকেই দাঁড় করালেন। বললেন-কী ব্যাপার এতো ফুসুর ফুসর করো কেন? কি বলছিলা বলো। আমি বললাম, স্যার আমি কিছু বলছিলাম না। ও যাই বলার বলছিলো। স্যার, এবার ওকে বললেন, এই কী বলছিলা বলো।

বন্ধু বললো, স্যার আপনাদের সিলেট গেছিলাম। স্যার বললেন- সিলেট গেছিলা। এইটা গপের কী হলো। তুমিতো আর চান্দে যাও নাই? আসল গপ কি সেইটা বলো। তো স্যার, মিষ্টির দোকানে গেলাম মিষ্টি খেতে।

স্যার বললেন- মিষ্টির দোকানে মিষ্টি খেতেই তো যাবা। গু খেতেতো আর যাবানা। একথা বলে, স্যার ক্লাসের সবার দিকে এক নজর দেখেন। মনে মনে ভাব, জায়গামতো দারুন একটা কথা বলেছেন। কথাটি বলতে পেরে স্যার খুব খুশী।

দোকানে ঢুকে দিলাম মিষ্টির অর্ডার। দোকানের ছেলেটি বললো- কিতা মিষ্টি খাইবায়। আমি বললাম, যেকোন একটা নিয়ে আসো। ছেলেটি আবার বললো- খউকা কিতা খাইবায়। সাদাগু খাইবায় না কি লাল গু খাইবায়? এবারতো স্যার ।

আমি তব্দা। দিলাম মিষ্টির অর্ডার । আর বলে কিনা, সাদাগু খাইবায় না লালগু খাইবায়। স্যার বলেন- তা তুমি কি খেলা? বন্ধু বলে, স্যার। খিদাও লেগেছে।

খেতেও হবে। আর গু যখন খেতেই হবে। তখন কি আর করা। ছেলেটিকে বললাম, তুমি লালগুই নিয়ে আসো। পুরো ক্লাসে সবাই হো হো করে হাসছে।

স্যার, এবার বলেন- বানিয়ে বানিয়ে গপ করাতো তুমি ভালোই শিখেছো। তারেক স্যারের বাসায় আমি মিষ্টির প্লেট নিয়ে বসে আছি। আর বারবার আমার বন্ধুর সিলেটি দোকানে মিষ্টি খাওয়ার কথা মনে পড়ে হাসতেই আছি,কিন্তু স্যারকে কিছুই বলতে পারছিনা। ( সাদাগু খাইবায় না কি লালগু খাইবায়- এর মানে হলো সাদাটা খাবেন নাকি লালটা খাবেন) সিলেটে ভাষায় টা বুঝাতে গু ব্যবহার করা হয়। যেমন- ই গু ইন কিতা খরে ।

মানে হলো-এই ছেলেটা বা মেয়েটা এখানে কি করে? এরে ইগু ইন থাকি হরাও- মানে হলো -এটা এখান থেকে সরাও । ইত্যাদি।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.