আহমেদ বায়েজীদের ব্লগ
আমার এক মামা আছে। একটু সুশীল শ্রেনীর জীব।
খালি উপদেশ খয়রাত করে। একদিন বললো- ভাগনে কলম চালাতে শেখ, কলম সৈনিক হও। দেশ,জাতির উপকার হবে।
আজাইরা ফেসবুক চালাইয়া কোন লাভ নাই।
বললাম- মামা জীবনে বহুত কলম চালাইছি। স্কুল জীবনে কলম চালাইয়া কত ছেলের শরীর থেকে যে রক্ত ঝড়াইছি তা আপনি জানেন না। কলম সৈনিক হিসেবে স্কুলে আমার বেশ সুনাম ছিল।
মামা কিছু বললো না।
শুধু তার গলা দিযে অদ্ভুত একটা শব্দ বের হলো।
মাইন্ড করলো কিনা বুঝতে পারছি না। এই মামার একটাই গুন। কোন কিছুতেই রাগেন না। আর আমরা ভাগনেরা এই কারনেই তাকে বেশি পছন্দ করি।
সারাদিন যত উপদেশই দিক না কেন-আমরা তা গায়ে লাগাই না। মামারও মনে হয তার কথা কেউ শুনলো কিনা তা নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নাই।
চুপচাপ আধা মিনিট কেটে গেল। তারপর মামা আবার মুখ খুললো।
বললো- আরে বোকা সেই কলম চালানো না।
কাগজের উপর কলম চালাইতে হবে। মানে লেখালেখি করা আর কি। বুঝলে......
মামা লাইন শেষ করার আগেই আমি বুঝে ফেললাম তিনি কোন লাইনে আগাবেন। কিন্তু জবাবটা দিতে গিয়েও থেমে গেলাম।
স্কুল জীবনের কলাম চালানের কথা কি তার কাছে বলা ঠিক হবে।
শত হোক মুরুব্বি তো।
রঙিন ডাইরির পাতা,ওষুধ কোম্পানীর কত প্যাড এমনকি অংক খাতার পৃষ্ঠা ছিড়ে যে কত কলম চালিয়েছি তার খবর কি মামা জানে। রুম্পার জ্যামিতি খাতায় 'প্রমান কর যে আমি ইকুয়ালটু তুমি' লিখে নগেন স্যারের সেই ধোলাইটাও মনে পড়লো। বন্ধুদের হয়েও কলম চালিয়েছি কত তার হিসেব নেই। রবিন আর সীমার মন চালাচালির মাঝে রবিনের পক্ষে কলমটা আমাকেই চালাতে হত।
মামাকে তো এত কিছু বোঝানে যাবে না।
মুখে শুধু বললাম- জ্বী মামা। চেষ্টা করবো।
মামা বললো- শুধু চেষ্টা করলে হবে না। লেখায় বৈচিত্র আনতে হবে।
মানে ভেরিয়েশন। যেমন ধরো প্রবন্ধ লেখার মাঝে কবিতা কোট করতে হবে। কিংবা বড় কোন ব্যক্তির বানী।
- জানি তো যেমন 'পুকুরেতে পানি নাই পাতা কেন ভাসে...' নিজের অজান্তেই মুখটা ফসকে গেল। লাইটা শেষ না করেই জিহবা কামড়ে থেমে গেলাম।
চোরা চোখে চাইলাম মামার দিকে। তিনিও চুপচাপ বসে আছে। কয়েক সেকেন্ড পর বললেন- ঠিক আছে। আজ তাহলে চলি। তুমি ফেসবুক চালাও।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।