হাজারটা স্বপ্ন একটি বাস্তবতাকে বদলাতে পারে না
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অনন্ত জলীল, বাংলাদেশের সবচেয়ে সৎ এবং যোগ্য ব্যক্তি। তার প্রতিটা কাজে আছে সততা এবং যোগ্যতার সাক্ষর। যেমন তিনি তিন-তিনটি নামী-দামী কম্পানীর মালিক হয়েও তিনি এখনো পাব্লিক বা লোকাল বাসেই চলাফেরা করেন। তার কথা হল, -"যে দেশের আশি ভাগ লোক প্রাইভেট কারে চলার সুযোগ পায় না, সেই দেশে আমি প্রাইভেট কারে চলার মত বিলাসীতা পছন্দ করি না। "
দেশ ও দশের প্রতি তার এত দরদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা ১ মিনিট নিরবতা পালন করি আসুন।
এক মিনিট শেষ, এখন আসুন মূল গল্পে ফিরে যাই।
সেদিন অন্যান্য দিনের মতই বাসে চড়ে অফিস যাচ্ছিলেন অনন্ত জলীল। জানালার কাছে বসে আছেন তিনি হাসি হাসি মুখে, বাতাসে চুলটা যেন একটু উড়ছে। ঠিক এমনি সময় কিছু চ্যাংরা পোলাপান বাসের হাত বাসটি থামিয়ে ফেলে। এরপর একটা পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করা হয়।
ভিজুয়াল এফেক্টের কল্যাণে মুহুর্তেই আগুন ধরে যায় বাসে এবং ধোয়ায় ছেয়ে যায়। জান বাচাতে যাত্রীরা কাশতে কাশতে হুড়মুড় করে নেমে যে যেভাবে পারে দৌড়ে পালিয়ে যায়। জলীল বাস থেকে নিরাপদে নামার পর দেখে পিকেটারগুলা বাসের কছেই দাঁড়িয়ে ছাগুর মত ম্যাত কার করছে। এহেন ম্যাতকার শুনে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে অনন্ত এক হুংকার...
- হেই, ইউ পম ঘানা?
ম্যাতকার-রত এক চ্যাংরা বলে উঠল, - ঐ ব্যাটা, ইংরেজী মারাছ কে? বাংলা বল।
- তোমরা যে এভাবে দেশের সম্পদ নষ্ট করছ, দেশের প্রতি কি কোন ভালোবাসা নেই তোমাদের? এভাবে আগুন জ্বালিয়ে মানুষ মারছো কেন? তোমাদের এতটুকু মানবতা নেই?
এক চ্যাংরা পোলা হাস্তে হাস্তে বলে, - মানবতার কথা বলেন যে? আপনে কি মানব-ধর্ম পালন করেন নাকি?
পাশ থেকে আরেকজন বলে বসে, - মানব-ধর্ম কিরে? এ দেখি একটা নাস্তিক!
সাথে সাথে কয়েকজন বলে উঠে, - ধর শালা নাস্তিকটারে!!
অবস্থা বেগতিক দেখে অনন্ত পিছু হটার উদ্যোগ নেয়।
উলটো ঘুরে যখন অনন্ত দৌড়াতে শুরু করে তখন তার চারপাশে বৃষ্টির মত ককটেল ফুটতে থাকে। ভিজুয়াল এফেক্টের কারণে সেই ককটেল আর্জেস গ্রেনেডে রূপ নেয়। পিছুন থেকে ম্যাতকারের ন্যায় স্লোগান আসে, - ফাসি ফাসি ফাসি চাই, নাস্তিকের ফাসি চাই। তবে ফকির বাবার তাবিজের কল্যাণে এ যাত্রায় অনন্ত বেঁচে যায়।
***
অফিসে ডুকে অনন্ত সব কর্মচারীর খোজ খবর নেয়।
তিনি একজন আদর্শ বস, সবার সাথেই তার সমান ব্যবহার। কাউকে ছোট করে দেখেন না তিনি। সিকিউরিটি গার্ড থেকে শুরু করে সবার সাথে তার কি অমায়িক ব্যবহার!
তো এই গল্পের নায়িকা বর্ষা সেই অফিসেই কাজ করে। নায়িকার প্রতি নায়কের স্বাভাবিকভাবেই বিশেষ নজর। সেদিন কোন কারণে বর্ষার দেখা পাওয়া যাচ্ছে না।
তাকে না পেয়ে অনন্তর কাজে মন বসছে না। অগত্যা বর্ষাকে ফোন দিল...
- হেলো বর্ষা,আজ আসলে না যে?
তারপর ওপাশের কথা কথা শুনে হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠে, - হয়াট, তোমার বাবা এক্সিডেন্ট করেছে!
***
বর্ষার বাবা পিকেটারদের দেয়া আগুনে পুড়ে হাসপাতালে ভর্তি। জবরজং গ্রাফিক্সে অনন্তের চেহারা হয়েছে বিভিৎস। তার বেডের কাছে বসে কাদছে পরিবারের সবাই। অনন্ত তাদের সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করে।
ডাক্তারকে খুজে বের করে তাকে ধরে বলে,
- ডাক্তার সাহেব, প্লিজ কিছু একটা করুন। বর্ষার বাবাকে বাচান! যত টাকা লাগে আমি দিব...
- শান্ত হোন জলীল সাহেব। আপনি একজন সম্মানিত ব্যক্তি। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব। কিন্তু পেসেন্টের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়।
ষাট শতাংশ পুড়ে গেছে, শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আল্লাহ্র কাছে দোয়া করুন তাকে যেন সুস্থ করতে পারি।
অনন্ত আসস্ত হলেও তার ভিতর তখন আগুন জ্বলে গেল। এভাবে আর কত? এখনি এর বিহিত করতে হবে। সেইদিন অনন্ত শপথ নিল ছাগু-বধ করার।
এশার নামাজ আদায় করে আল্লাহ্র কাছে দোয়া করল, - হে আল্লাহ্, আমাকে শক্তি দেও আমি যেন সফল হতে পারি!
***
গভীর রাত। ঢাকার একটি জনশুন্য এলাকায় এক বাড়িতে ককটেল আর পেট্রল বোমা বানাচ্ছে কিছু ছাগু। দাত কেলিয়ে একজন বলছে, - সবকয়টাকে পুইড়া ছারখার কইরা দিমু। বলে আলিফ লায়লার জ্বীন মার্কা একটা একটা হাসি দেয়।
ঠিক সেই সময় সেখানে উপস্থিত হয় ক্রিশের মুখোশ পরা অনন্ত জলীল।
হুংকার দেয়, - হেই, ইউ পম ঘানা অর ইউ পম পাকিস্তান?
ভয় পাওয়া গলায় তারা জানতে চায়, - কে রে তুই?
- আমি তোদের যম।
সাথে সাথে শুরু হয়ে যায় এনিমেটেড এক্সন। এক পর্যায়ে অনন্তের হাতে উঠে আসে দুটি পিস্তল। এরপর দুটি পিস্তল থেকে বের হয়ে আসে স্ট্যানগানের মত গুলি। মুহূর্তে সব ছারখার।
একসময় স্তুপ করা বোমার উপর গুলিবর্ষণে ঘটে যায় বিস্ফোরণ।
ভিজুয়ালের কমলা শিখায় জ্বলছে একটি বাড়ি। সেই বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে একটা ছায়ামূর্তি। দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে আসে। সামনে এলে দেখা যায় এ হল ক্রিশের মুখোশ পরা অনন্ত জলীল!
***
খবরে প্রকাশ পায় বোমা তৈরী করতে গিয়ে বিস্ফোরণে মারা গেছে কয়েকজন দুর্বৃত্ত।
বিভিন্ন স্থানে হাত-পা বাধা অবস্থায় ধরা পরছে অনেকে। শহরে গুজব ছড়িয়ে যায় কে একজন মুখোশ পরে ছাগু-বধ করে বেড়াচ্ছে। জনজীবনে নেমে আসে স্বস্তি। মানুষের মুখে তখন সেই মুখোশ পরা ব্যক্তির প্রসংশা। ফেসবুক, ব্লগ, এমনকি পত্রিকায় তাকে ধন্যবাদ জানানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এই অবস্থায় এক ছাগু সম্রাট সকলের চোখে ধূলো দিয়ে দেশ ছেড়ে পালাবার চেষ্টা করে। সবার চোখে ধূলো দিলেও সুপার হিরো অনন্তের চোখে ধূলো দিতে পারেনি। মুখোশ পরা অনন্ত তার পথ রোধ করে দাঁড়ায়, - কোথায় যাচ্ছ?
ভয়ে ভয়ে ছাগু সম্রাট বলে, - এই দেশে আর থাকবো না। আমি পালিয়ে যাব।
- কোথায় পালাবে? ইউ পম পাকিস্তান।
যাও পাকিস্তানেই ফিরে যাও।
- না, ওখানে ধ্রোন হামলা হয়। আমি অন্য কোথাও যাব।
- তোর পাকিস্তানেই যেতে হবে। আয় তোকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেই।
- আমাকে তুই ভয় দেখাতে পারবি না। আমার কাছে ককটেল আছে, বোমা আছে, তোকে উড়িয়ে দেব। আর তোর কি আছে?
জলীল তখন একটা বাংদেশের পতাকা মাথায় বেধে বলে, - আর আমার আছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
এরপর ফকির বাবার তাবিজে হাত দিয়ে জলীল বলে, - হে আল্লাহ্, তুমি সর্বশক্তিমান, আমাকে শক্তি দাও!
বলেই ছাগু সম্রাটের পুটুতে গদাম চালায় অনন্ত। রাম গদাম খেয়ে ছাগু সম্রাট ফুটবলের মত উড়ে উড়ে পাকিস্তানের একটি মাঠে গিয়ে পরে।
জলীল তখন দাঁড়িয়ে আছে দৃঢ় প্রত্যয়ে। ব্যাক গ্রাউন্ডে লাল-সবুজ পতাকা। দৈববানী শোনা যায়, "বাংলার ঘরে ঘরে জন্ম নিক অনন্ত জলীলের মত সন্তান!!"
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।