www.nahidlink.com
সমপ্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পাতায় একটি খবর ছাপা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার দুটি ফার্মেসীতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় নিষিদ্ধ ওষুধ আটক করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা কিছু ফার্মেসীতে আমদানী নিষিদ্ধ ও অবৈধ ওষুধ বিক্রির ঘটনা ওপেন সিক্রেট। দীর্ঘদিন থেকেই মুনাফাখোর ওষুধ ব্যবসায়ীরা চোরাইপথে নিষিদ্ধ ওষুধ আমদানী করে তা বিক্রি করে আসছে। কয়েকদিন আগে আরেকটি দৈনিকে কুমিল্লা সীমান্ত এলকার চোরাকারবারের স্বর্গরাজ্যেও চিত্রটি তুলে ধরেছে।
বলাবাহুল্য যে, শুধু নিষিদ্ধ ওষুধ নয়, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর সবই আসছে ভারত থেকে চোরাচালানীর মাধ্যমে। চিনি ব্লেড, বাল্ব, ডাল, আয়োডিনবিহীন লবণ, পেয়াজ, হরেক রকম মশলা, বাসমতি চাল, মাথার তেল, পানের মশলা, বড় মাছ, গরু, আঙ্গুর, বেদানা,নাশপাতি, নিম্নমানের সার, আম প্রতিদিন আসছে। চোরাইপথে আসছে বিভিন্ন নেশার সামগ্রী। তার মধ্যে ফেনসিডিল অন্যতম। আসছে নানারকম মেয়েলী প্রসাধনী, সেীখিন কাচের, মাটির, পুতির অঙ্ডিাইজড্ গয়না।
চোখ জুড়ানো মনকাড়া হরেক রকম জুতা, বাজার ভর্তি ভারতীয় মূল্যবান শাড়ী, শিশু, পুরুষ মেয়েদের তৈরী পোষাক। বাজার ঘুরলেই বোঝা যায়, এদেশের বাজার পুরোপুরি ভারতীয় পন্যের দখলে। মুক্তবাজার অর্থনীতির কারনে এমনিতেই বিদেশী পন্যের অবাধ দখল- তার উপর চোরাচালানের এই আত্নঘাতী প্রবণতা। এভাবে চলতে থাকে তবে দেশের অর্থনীরি মেরুদন্ড ভেঙ্গে যেতে বেশী সময়ের প্রয়োজন হবে না। দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিদেশ থেকে আনা সয়াবিন তেল, পেট্রোল, ডিজেল ছাড়াও সোনা, মুল্যবান ওষুধ, কেমিক্যাল দ্রব্য পাচার হয়ে যাচ্ছে ওপারে।
সীমান্ত রক্ষীবাহিনী-স্থানীয় প্রশাসন বলতে গেলে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। প্রত্রিকায় এমন খবরও রয়েছে যাতে বলা হয়েছে যে, উব্ধর্তন কমকর্তার ফোন পেয়ে আটক চোরাকারবারীকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। ছেড়ে না দিলে ওএসডি কওে ঝুলিয়ে দেবে।
সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত যে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের রুই কাতলাদের সাথে চোরাকারবারীদেও উধ্বর্তনদের যোগাযোগ ঘনিষ্ঠ। বিদেশী পন্যের এই অবাধ বাজার দখল যে কর্তৃপক্ষেও জানা নেই তা বলা যাচ্ছে না।
তাই এই অর্থহীন এই স্লোগান যারা চোরাচালানের সাথে জড়িত তারা দেশের শত্রু। চোরাচালানী পন্যের কারনে এ দেশের কুটির শিল্পেগুলোর অধিকাংশ বন্ধ হয়ে গেছে। সরকার এদিকে শিল্পের বিনিয়োগের জন্য তাগিদ দিচ্ছেন। ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনের জন্য ব্যাংক ঝৃন গ্রহনের পরামর্শ দিচ্ছেন অথচ ওদিকে চোরাচালানের মরণঘাতী এই স্রোত ঠেকাতে কঠোরতম উদ্যেগ নিচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতিকে শুধু পঙ্গুই হবে না, সাথে সাথে এদেশের লাখ লাখ মানুষ বেকার হবে এবং হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু এভাবে যে চলতে পারে না, এ কথাটি যেমন একজন সাধারন মানুষ পারছে তেমনি যারা প্রশাসনে আছেন তারাও বুঝতে পারছেন। তাই প্রায়ই স্বরাষ্টমন্ত্রীসহ জ্বালানী উপদেষ্টা সীমান্তে চোরাচালান বন্ধের আদেশ-নির্দেশ দিচ্ছেন। আর যারা ঐসব আপকর্মের হোতা তারা বুঝতে পারছেই। কিন্তু ব্যক্তিস্বার্থের কাছে গোষ্ঠি স্বার্থ, দেশের স্বার্থ আজ পরাভূত। চোরাচালান অসামঞ্জস্য আদার-প্রদান দেখলেই বোঝা যায়- দেশকে, দেশের অর্থনীতিকে কিভাবে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হচ্ছে।
একমাত্র সরকারের পক্ষেই সম্ভব এসব অশুভ শক্তিকে শনাক্ত কওে দৃষ্ঠান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। যদিও কথাটা চর্বিত চর্বণ। তবুও বলতে হচ্ছে, একমাত্র সরকারই পাওে দেশের অর্থনীতিকে চোরাকারবারীদের লোভের থাবা থেকে বাঁচাতে, সাথে সাধারন মানুষের এই মনেবৃত্তি বদলাতে হবে যে, বিদেশী জিনিস হলেই ভালো হবে। দেশীয় সামগ্রীর প্রতি প্রয়োজন মমতার। পন্য প্রস্তুতকারী ব্যবসায়ীদেরও সচেষ্ট হতে হবে ভালো জিনিস আরো ভালোভাবে জনগনের দরজায় পৌঁছে দেয়ার।
কোন কিছুর বিনিময়ে আমরা দেশকে চোরাকারবারীদের হাতে ছেড়ে দিতে পারি না....।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।