আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেটামরফোসিস 2

যারা উত্তম কে উচ্চকন্ঠে উত্তম বলতে পারে না তারা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে শুকরকেও শুকর বলতে পারে না। এবং প্রায়শই আর একটি শুকরে রুপান্তরিত হয়।

কয়েকটা আমদানী করা বৈদেশিক বিদগ্ধ , স্থানীয় কিওপেট্রা, রাজমাতা, রাজঋষি, মহারাজ ও যুবরাজ নিয়ে সেমিনার হচ্ছে। প্রসঙ্গ শিশু অধিকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সহিংসতা। ব্যাপ্তী দুদিনের ।

অর্থপ্রদানকারী খাজাঞ্চি বার কয়েক মঞ্চে ওঠে নিজেদের খাজাঞ্চি বাদ্য বাজালেন আর আমরা স্রুত অসু্রত প্রজারা বাধ্য হয়ে হাত তালি দিলাম। উদ্দেশ্য নিখূঁত, মহত্ত্বে বিশ্বব্রম্মান্ড ছাড়িয়ে যাওয়া। দলনেতাদের নিরন্তর ছুটোছুটিতে ক েক্ষ আপ্যায়ণের ঝড় অন্যদিকে বিনয়াবত শিক্ষার্থীরা বক্তাদের গলা ভেজাতে ভেজাতে নিজেরাই কাষ্টশুষ্ক। যদিও কয়েকটা উচ্চাভীলাসী বেজী এই গন্ডগোলের মধ্যেই লবিংয়ের দক্ষতা নিয়ে বিবাদপ্রবণ। কিন্তু কিছুতেই সেমিনার জমছে না।

বক্তরা তাদের ক্ষণমিলনের অপুষ্ট শিশু নিয়ে ব্যতিব্যস্ত কিন্তু জরায়ুতে পুষ্ট না হওয়ায় তারা মাইক্রোসফটের পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টশনেও নিজেদের মেলে ধরতে পারছে না। অর্থাৎ মঞ্চ তখনো নিষ্প্রাণ। এমনি সময় কালেসর পেছনের সারির এক প্রান্তিক স্বরের আত্মপ্রকাশে বৌদ্ধিক আকাশে উড়াল দিল একটা লোভনীয় প্রসঙ্গ, সম্পূর্ণ সংগতিপূর্ণ এবং খুবই মেধাবী। ভাষার দূরত্বে বিদগ্ধরা একটু নড়েচড়ে বসলেন, কিওপেট্রা একটানে খুলে ফেললেন অনর্্তবাস এবং মাজা দোলাতে দোলাতে নিচের দিকে নির্দেশ করে ইঙ্গিত করলেন কোথায় হবে প্রসঙ্গটির উপযুক্ত স্থান। রাজমাতা বুড়ো শরীর নিয়ে বুক খুলে দিয়ে বললেন এস এস স্নেহের আশ্রয়ে এস, রাজঋষি ডানবামে তাকিয়ে প্রসঙ্গটা ধরার জন্য একটা উড়াল দিলেন কিন্তু বাড়ন্ত ভুরির ভারে মাঝপথেই মুখ থুবরে পড়লেন।

যুবরাজ ল্যাপটপের বাটন টিপতে টিপতে মহারাজের দিকে তাকিয়ে বললেন এ আপনারই প্রাপ্য। মহারাজ উত্তরাধীকারীর দূরদর্শিতায় মুগ্ধ হয়ে খোশ মেজাজে তরবারি বের করে প্রসঙ্গটিকে গাঁথতে যেয়ে অবশেষে আটকে গেলেন মেনকার শুভ্র নাভীতে। শাড়ি আর রাজপোষাক জড়িয়ে যেয়ে হুমরী খেলেন মাউথ পিসে। প্রসঙ্গটা তখনো উড়ছিল, প্রান্তিক মেধাবী ইতোমধ্যে নিজের বিবস্রকারী মেধায় লজ্জিত হয়ে আসনে বসে পড়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জরী কমিশনের বুড়ো শকুনটা তখনো তক্কে তক্কে ছিল কিন্তু তাকে ফাঁকি দিয়ে প্রসঙ্গটা বেরিয়ে গেল জানালার ফাঁক দিয়ে আর যেয়ে পড়ল খাবারের বাক্স কুড়ানো একটা পথ শিশুর হাতে।

এতক্ষণ টানটান উত্তেজনার পর অবশেষে স্তব্ধ প্রজারা আবার প্রাণ ফিরে পেল, প্রান্তিক মেধাবী একটু মুচকি হেসে বোকার মুখোশটা সবার অগোচরে পড়ে নিল। স্থির থাকতে না পেরে আমি তখনই ছুটে গেলাম বাথরুমে। বেসিন ভরে বমি করার পর একটু শান্তি পেলাম। বাইরে এসে একটা সিগারেট ধরিয়ে পথ শিশুটাকে একটা খাবারের বাক্স দিয়ে ঘুড়ি বানিয়ে দিতে সাহায্য করলাম। নতুন ঘুড়ি পেয়ে ও বলল ভাইজান আর ভিতরে তাকাইয়েন না, আমি বললাম কেন? ও বলল ভেতরের সবাই এখন কাপড় খুলতাসে একটু পর আর কোন কাপড় থাকবো না।

আমি জানালার ফাঁক দিয়ে তাকালাম দেখি কথা সত্য। আমি প্রথম বর্ষের একটি বালিকার দিকে তাকিয়ে উত্তেজনা বোধ করতে শুরু করলাম আর পথ শিশুটাকে বললাম তুই একটু অন্যদিকে তাকায়া থাক। ও বলল আমার সময় নাই, অনেক দেখছি আপনে দেখেন আমি ঘুড্ডি উড়াইতে যাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।