দেশে অনিষ্পন্ন ১৪ হাজার চোরাচালান মামলার শতকরা ৬০ শতাংশই মাদকদ্রব্য-সংক্রান্ত। মাদকের অনিষ্পন্ন মামলার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেলেও সে অনুপাতে প্রতিরোধে সরকারি তৎপরতায় আশানুরূপ অগ্রগতি নেই। এ তথ্য চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের। একই সঙ্গে তিনি মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনাসহ বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ারও সুপারিশ করেছেন। মাদকদ্রব্য-বিষয়ক সভা সামনে রেখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সি কিউ কে মুসতাক আহমদকে লেখা এক প্রতিবেদনে গতকাল এ তথ্য তুলে ধরেন বিভাগীয় কমিশনার। প্রতিবেদনে কমিশনার উল্লেখ করেন, দেশের সিংহভাগ মাদকদ্রব্য চোরাচালানের রুট হচ্ছে চট্টগ্রাম বিভাগের কঙ্বাজার জেলার টেকনাফ ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকা। এ দুই উপজেলার সীমান্ত দিয়ে ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য নিয়মিত দেশে প্রবেশ করছে। বিভিন্ন সময় চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম, কঙ্বাজার ও বান্দরবানের জেলা প্রশাসক এবং গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন দফতর থেকে চোরাচালানের রুট, পদ্ধতি, মাদক ব্যবসায় জড়িত প্রভাবশালী চক্র, পরিবহন ও এর ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়ে ঊধর্্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও প্রতিরোধে এবং এর প্রভাব নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসেনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে প্রাপ্ত চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের ওই প্রতিবেদনে মাদকের বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, চট্টগ্রামের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ইয়াবাসহ অন্যান্য চোরাচালান রোধে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ও সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হলে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে মাদকের বিরুদ্ধে আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যাবে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মাদকের চোরাচালান রোধে যেসব প্রস্তাব করেছেন এর মধ্যে রয়েছে- মাদকের মামলা নিষ্পত্তির জন্য প্রতিটি জেলায় বিশেষ আদালত স্থাপন করা, জমে থাকা মাদকের মামলা এখনই নিষ্পত্তি করা, মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০-এর মোবাইল কোর্ট আইনের ১১ ধারা অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা যাতে দণ্ড প্রদান করতে পারেন সে জন্য বিধির সংশ্লিষ্ট অংশ সংশোধন করা, আটক মাদকদ্রব্যের রাসায়নিক পরীক্ষার সামগ্রী বিভাগ ও জেলায় পর্যায়ক্রমে সরবরাহ করা, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত সিল ও রাস্তা নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং মাদক প্রতিরোধে পারিবারিক ও সামাজিক অনুশাসনের আদলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে কি না তা শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়মিত তদারক করা। এদিকে গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এসব বিষয় আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ-সংক্রান্ত এ সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, স্কুল-কলেজে মাদকবিরোধী প্রচার চালানো, অভিভাবকদের সচেতন করা ইত্যাদি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।