পুষ্প, বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ
ব্যাপারটা অত্যন্ত দু:খজনক। এবং অবশ্যই আপত্তিকর।
ব্রাত্য রাইসু এখানে কবিতা লেখেন। তার কবিতা অনেকের পছন্দ, অনেকের নয়। কেউ সেগুলো নিয়ে কটুক্তি করছেন, কেউ প্যারোডি বানাচ্ছেন।
সেটায় সমস্যা নেই।
প্যারোডি খুব খারাপ কিছু নয়। মুখফোড়, বা রাসেল (....) ভাই- এর প্যারোডিগুলো পড়লে বেদম হাসি পায়। রাসেল ভাই সবাইকেই ওয়েলকাম জানান প্যারোডি করে, আমাকেও করেছেন- পুরো ব্যাপারটিই এত মজার ছিল যে আমি অনেকক্ষন হাসি থামাতে পারি নি।
মুখফোড়ের লেখার আমি ভিষন ভক্ত।
সামহোয়্যারইন ব্লগ থেকে এখন পর্য্যন্ত একটা মাত্র কবিতাই আমি আমার ডায়রিতে তুলে রেখেছি- সেটা মুখফোড়ের লেখা- বিশ্বব্যাংক নিয়ে। অসাধারন কবিতা। সে কবিতার অকুণ্ঠ প্রশংসাও করেছি।
রাইসুকে নিয়ে লেখা প্যারোডিগুলোও মজার। রাইসু নিজে কেমন বোধ করেন জানি না, কিন্তু উনার আর রাসেল (....) ভাইয়ের কথা চালাচালির ভেতর একটা ছেলেমানুষি ব্যাপার আছে।
সেটা , আমার ধারণা, ব্লগের সবাই এনজয় করেন।
কিন্তু কালপুরুষ, আপনার কবিতা , যেটাকে আপনি বলেছেন - অ্যাবসার্ড কবিতা: শূন্য থেকে শুরু...., ওটা পড়ে খুব খারাপ লাগলো। রাইসুকে নিয়ে লিখেছেন, লিখতেই পারেন, তার কবিতা আপনার খারাপ লাগে, তিনি নিজেও যেহেতু এখানে আসেন, তাকে নিয়ে লিখুন, সমস্যা নেই। আপনার কথার জবাব দেয়ার জন্যে তিনি নিজেই কলম ধরতে পারবেন, ধরবেন হয়ত, হয়ত না, এটা পুরোপুরিই রাইসুর ব্যাপার।
কিন্তু কালপুরুষ, আপনি বলবেন কি- আপনি কেন আপনার কবিতায় "শালা গোমেইজ্জা" শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন? রাইসুর লেখায় সুব্রত অগাষ্টিন গোমেজের নামোল্লেখই কি আপনার ক্রোধের কারন?
এখানে সুব্রত-র অপরাধটা কি জানতে পারি? আপনি রাইসুকে গাল দিতেন,(যদি সত্যিই সে সাহস আপনার থাকে), তিনি তা ফিরিয়ে দিতে পারতেন।
কিন্তু যে ব্যক্তিটি এখানে আসেন না, নিজের পক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগই যার নেই, তাঁর ক্ষেত্রে আপনি কি বুঝে ঐ শব্দগুলো ব্যবহার করলেন বলবেন কি? শুধু তাই নয়, তার আগে পরের বাক্যগুলো আরেকবার পড়ে দেখুনতো কি লিখেছেন আপনি?
ভেবে দেখুন, কখনো যদি সুব্রত, যিনি একজন কবি, তিনি এখানে এসে তাঁকে নিয়ে আপনার কবিতাটা পড়েন, কেমন লাগবে তাঁর?
আপনি নিজে কবিতা লেখেন। অথচ আরেকজন কবির প্রতি আপনার বিন্দুমাত্র সম্মানবোধ নেই। একবার দয়া করে সুব্রত-র জায়গায় নিজেকে বসিয়ে দেখুন। মনে করুন, কোথাও আপনার পরিচিত কেউ কবিতা পড়ছে, তার কবিতাকে অনেকে খারাপ বলছে, যেগুলোকে হয়ত আপনি ভালো বলেছিলেন, এখন ওদের কেউ যদি আপনাকে শালা বলে গাল দেয়, আপনার কেমন লাগবে? আপনাকে যারা পছন্দ করে, বা সম্মান করে, তাঁদের?
আপনি একবার জানিয়েছেন যে আপনি হুমায়ুন আজাদের লেখা কখনো পড়েন নি ( এবং তাতে আপনার জীবন বৃথা হয়ে যায় নি), আমার মনে হচ্ছে আপনি সুব্রত অগাষ্টিন গোমেজের লেখাও কখনো পড়েন নি ( এবং অবশ্যই তাতেও আপনার জীবন বৃথা হয়ে যায় নি)। বিনীতভাবে জানাচ্ছি- আপনার লেখা পড়লেই সেটা বোঝা যায় যে আপনি কাদের কাদের লেখা কখনো পড়েন নি।
মনে রাখবেন কালপুরুষ- লেখার শেষে " ইহা কাল্পনিক" জাতীয় ডিসক্লেইমার হয়ত নিজেকে আইনত: নিরাপদ করে, কিন্তু নিজের মনের দীনতাকে ঢেকে রাখতে পারে না।
এগুলো রাগ করে বলিনি। অত্যন্ত দু:খ পেয়ে ঠান্ডা মাথায় লিখছি। এবং তাঁর লেখার একজন পাঠক হিসেবে তীব্রভাবে আপনার কবিতায় সুব্রত অগাষ্টিন গোমেজের নামের আপত্তিকর ব্যবহারের প্রতিবাদ করছি। ( ঠিক একইভাবে প্রতিবাদ করতাম যদি কেউ আপনাকে ওভাবে গালাগাল করত।
)
এই ব্লগটাকে খুব পছন্দ করি, ব্লগের মানুষগুলোকেও। নিজেদের মধ্যে সেই ভালোলাগা কমে না যায় যেন, সেই চেষ্টাও আমাদেরই করতে হবে। নিজের সম্মানটুকু ধরে রাখার জন্যেই অন্যকেও তাঁর প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে হবে আমাদের।
মনে রাখবেন, প্রকৃতি সব কিছু ফিরিয়ে দেয়, অসম্মান বা অপমানও তার বাইরে নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।