আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রোহিঙ্গারা এবারও কৌশলে ভোটার।

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। ইয়াঙ্গুন, ১৯ নভেম্বর- মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রোহিঙ্গা মুসলমানদের রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল সমাজে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া এবারও ঠেকানো যায়নি। কাজে লাগেনি বিশেষ তথ্য ফরম ব্যবহারের কৌশল। ২০০৮ সালে যেসব রোহিঙ্গা পরিচয় গোপন করে ভোটার হয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছিল, সেই পরিচয়পত্র দেখিয়েই এবার হালনাগাদের সময় তাদের সন্তানরা ভোটার হয়ে গেছে।

এ ক্ষেত্রে বিশেষ সমন্বয় কমিটিগুলো যথাযথ দায়িত্ব পালন করেনি। ভোটার তথ্য ফরম যাচাইসংক্রান্ত বৈঠকে উপস্থিত না হয়েই উপস্থিতির স্বাক্ষর দিয়েছেন কমিটির অনেক সদস্য। কমিটিতে থাকা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও রোহিঙ্গাদের ভোটার হতে সহযোগিতা করেছেন। কম বয়সী অনেক রোহিঙ্গা বয়স বাড়িয়ে ভোটার হয়েছে। গত ২৪ ডিসেম্বর প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর নির্বাচন কমিশনকে এসব তথ্য জানায়।

এ তথ্যের ভিত্তিতে কমিশন সচিবালয় ১০ জানুয়ারি বিষয়টি কক্সবাজারের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলে। কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক কালের কণ্ঠকে এ তথ্য সঠিক বলে জানিয়েছেন। তবে তিনি বলেন, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের দুটি জেলায় রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পরিচয়ে ভোটার হওয়া চেষ্টার অভিযোগ অনেক আগে থেকেই। ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গারা অন্তর্ভুক্ত থাকলে এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কক্সবাজারের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল হাসান ভুঁইয়া গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে জানান, তিনি এ বিষয়ে কমিশন সচিবালয়ের চিঠি পেয়েছেন।

নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, দেশের যেসব এলাকায় রোহিঙ্গাসহ অন্য বিদেশিরা ভোটার হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে সেসব এলাকায় এবার বিশেষ ফরমের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বিশেষ ফরমে ভোটারদের মা, বাবা, দাদা ও আত্মীয়স্বজনের ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে তারা আসলেই বাংলাদেশি কি না, তা জানা হয়। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে সেসব তথ্য যাচাইয়েরও ব্যবস্থা রয়েছে। এর আগেও এ পদ্ধতি গ্রহণ করে ওই সব এলাকার ভোটার তালিকা থেকে রোহিঙ্গা ভোটারদের বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০০৯ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে জানায়, বান্দরবান জেলার সদর, নাইক্ষ্যংছড়ি, আলীকদম ও লামা উপজেলায়, কক্সবাজারের সদর, উখিয়া, টেকনাফ, রামু, চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় এবং রাঙামাটির কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলার ভোটার তালিকায় অনেক রোহিঙ্গাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন এ তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে। কমিটিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের সদস্য করা হয়। ওই কমিটির মাধ্যমে হালনাগাদ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তদের তথ্য বিশেষ ফরমের মাধ্যমে নতুন করে যাচাই শুরু হয়। এসব ভোটারের মা, বাবা, দাদা ও আত্মীয়স্বজনের ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং ওই তিন জেলার ১২টি উপজেলার তালিকা থেকে রোহিঙ্গা ও ভুয়া সন্দেহে ৪৮ হাজার ৬৭৩ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বান্দরবানের চার উপজেলায় দুই হাজার ২২০ জন, কক্সবাজারের ছয় উপজেলায় ৪৫ হাজার ৮৬৬ জন এবং রাঙামাটির দুই উপজেলা থেকে ৫৮৭ জনকে বাদ দেওয়া হয়।

ভোটার তালিকা থেকে রোহিঙ্গাদের বাদ দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের এক পরিপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ এমনিতেই একটি জনবহুল ও দরিদ্র দেশ এবং হাজারো সমস্যায় জর্জরিত। ছলে-বলে-কৌশলে অন্য দেশের নাগরিকদের এ দেশের নাগরিক হওয়ার চেষ্টা আগ্রাসনের শামিল এবং তা সর্বোতভাবে প্রতিরোধ করা দরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, দেশের কিছু ব্যক্তি তাদের ওপর অর্পিত সরকারি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে জাতীয়তার সনদসহ নানা সনদ দিয়ে ভিনদেশি নাগরিকদের ভোটার হওয়ার পথ সুগম করে দিচ্ছে। এদিকে ওই তিন জেলার ভোটার তালিকা থেকে রোহিঙ্গাদের বাদ দেওয়ার কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ওই সময় হালনাগাদ ভোটার হওয়াদের মধ্যে ৪৮ হাজার ৬৭৩ জনকে রোহিঙ্গা বা ভুয়া ভোটার সন্দেহে বাদ দেওয়া হলেও ২০০৮ সালের মূল ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গারা অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল কি না, তা যাচাই করে দেখা হয়নি। সে সময় কক্সবাজারের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁদের ওপর নির্দেশ ছিল হালনাগাদ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়া ভোটারদের তথ্য যাচাই করার।

সেটাই করা হয়েছে। মূল তালিকাটি যাচাই করা হয়নি। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.