The only person u should try to be better than, is the person u were yesterday.
নামকরণের সার্থকতা বলে একটা কথা আছে। তবে মানুষের নামের সাথে নাকি তার চারিত্রিক গুণাবলির তেমন একটা মিল পাওয়া যায় না। সাহিত্যিকদের ভাষায় যে ছেলের নাম হবে ‘শান্ত’, সে মোটেও শান্ত স্বভাবের হবে না, আবার যার নাম হবে ‘দুরন্ত’, সে আবার হয়ে থাকে শান্ত স্বভাবের। কিন্তু নিরব আহমেদের নাম অনেকটাই তার চরিত্রের সাথে যায়। সে তার বয়সী অন্যান্য ছেলে-মেয়েদের তুলনায় অনেকটাই সময়ই নিরব থাকে।
তবে এই নিরবতা তার স্বভাবে প্রাকৃতিক ভাবে আসেনি, এসেছে অন্য ভাবে... কারণ স্কুল বন্ধের গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে যখন তার বয়সী ছেলেরা মামা বাড়ীতে যাওয়ার বায়না নিয়ে মায়ের কান ঝালাপালা করে ফেলে তখনও সে নিরব ছিল। দারিদ্রের করাঘাতে যখন তার পেটে ৩ বেলা খাওয়া যেত না, সে নীরব থাকতো। যখন তার মা রাতের বেলা ছেলেকে আড়াল করে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করার চেষ্টা করতো, তখনও সে নিরব ছিল। মায়ের কান্না দেখেই হোক বা পেটের দায় থেকেই হোক কখনো মুখ ফুটে বলা হয়নি তার ‘অন্যায় আবদার’ গুলোর কথা। যেখানে তার অভাবের সংসারে পড়াশোনা চালিয়ে যাবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছিল দিনের পর দিন, সেখানে তার ‘অন্যায় আবদার’ করাও পাপ।
তাই হয়তো চুপচাপ থেকেছে দিনের পর দিন...
তবে ‘নীরব আহমেদ’ নিরব থাকলেও, থমকে যায়নি তার চলার পথে। তাই গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে যখন তার স্কুলের বন্ধুরা গিয়েছিল তাদের মামাবাড়ী বেড়াতে তখন সে তার মাথায় করে বিক্রি করতে নেমেছে ‘আলুর দম’। সে তার ছোট দেহের সঞ্চিত শক্তিটুকু দিয়েই গ্রীষ্মকালীন ছুটিকে বুড়া আঙ্গুল দেখিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ নিজেই উপার্জন করছে। তার বিক্রি করা ‘আলুর দম’ হয়তো তার বয়সী ছেলেরা তার সামনে দাড়িয়ে দাড়িয়েই তৃপ্তি সহকারে খেতে থাকে... তারও হয়তো মাঝে মাঝে খেতে ইচ্ছে করে এক দুই পিস ‘আলুর দম’। কিন্তু খাওয়ার আগ মূহুর্তে হয়তো সে ভাবে যে এক পিস আলুর দম খেলে তার পড়াশোনা চালানোর খরচ থেকে ৫ টাকা চলে যাবে... তা যে কিছুতেই হতে দেওয়া যায় না... কিছুতেই না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।