আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বোমা ফাটালেন সাবের

এনএসসি টাওয়ার প্রকম্পিত স্লোগানে স্লোগানে: ‘পাপন ভাই এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে। ’ সামনে বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান (পাপন)। পেছনে তাঁর পারিষদ, তারও পেছনে থাকা ছোটখাটো সমর্থকের দলটা দিচ্ছিল ওই স্লোগান।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন এনএসসি টাওয়ারে নাজমুল হাসান যতই নির্বাচনী আমেজ ছড়ান না কেন, রূপসী বাংলা হোটেলে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাবের হোসেন চৌধুরীর ফাটানো বোমায় সেই নির্বাচন বোধ হয় কেঁপেই গেল একটু। সাবেক বোর্ড সভাপতির দাবি, অ্যাপিলেট ডিভিশনের রায়ের প্রত্যায়িত কপি অনুযায়ী বিসিবির নির্বাচন ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বরের গঠনতন্ত্রে হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

হলে সেটা হবে আদালত অবমাননার শামিল।
সাবের চৌধুরীর সংবাদ সম্মেলন হয়েছে বিকেলে। তার আগে নাজমুল হাসান যখন সদলবলে এনএসসিতে এসে মনোনয়নপত্র কিনছিলেন, গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ল সাবের চৌধুরী আর তাঁর সঙ্গীরা নাকি নির্বাচন বর্জন করবেন। গুঞ্জনটা আরও ডালপালা মেলল নাজমুল হাসানের কথায়। এনএসসির সংবাদ সম্মেলনে একপর্যায়ে তিনি বললেন, ‘নির্বাচন করলে তো নির্বাচনের জন্য কাজ করতে হয়।

ওনাদের তাহলে ক্লাবগুলোর কাছে যাওয়ার কথা, সমর্থন চাওয়ার কথা। আমার মনে হয় না ওনারা এ রকম কিছু করছেন। ’
সাবের হোসেন চৌধুরী তুরুপের তাসটা ফেললেন এর কয়েক ঘণ্টা পর। নির্বাচনে অংশ নেবেন কি নেবেন না, সেই প্রশ্নে না গিয়ে সরাসরি নির্বাচনের বৈধতা নিয়েই তুলে দিলেন প্রশ্ন, ‘অ্যাপিলেট ডিভিশনের রায়ের কপিতে বলা আছে, বিসিবির নির্বাচন হতে হবে ২০১২ সালের ২১ নভেম্বরের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী। কিন্তু বিসিবি, এনএসসি ও নির্বাচন কমিশন যেসব নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে, তার সবই ২৯ নভেম্বরের গঠনতন্ত্র মোতাবেক।

কাজেই নির্বাচনে অংশ নিলে সেটা আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়বে। আদালত অবমাননা হয় এমন কিছু আমরা করতে পারি না। ’ সাবের চৌধুরীর দাবি, ‘এই মুহূর্তে নির্বাচনের সব কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। ভোটার তালিকাসহ এখন পর্যন্ত হওয়া নির্বাচনের সব কার্যক্রম বাতিল করে রায় অনুযায়ী সবকিছু নতুনভাবে শুরু করতে হবে। ’
প্রত্যায়িত কপিতে ২১ নভেম্বরের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করতে বলা হলেও সেই গঠনতন্ত্র আসলে কোনটা, সেটা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধূম্রজাল।

বাস্তবে ২০১২ সালে গঠনতন্ত্র হয়েছিল দুটি—১ মার্চের গঠনতন্ত্র ও ২৯ নভেম্বরের গঠনতন্ত্র। তাহলে রায়ে ২১ নভেম্বরের গঠনতন্ত্রের কথা কেন বলা হলো, সেটা নিয়ে বিস্মিত সবাই। তবে প্রত্যায়িত কপির শুরুতে ২৯ নভেম্বরের গঠনতন্ত্রের কথাই বলা আছে। এ ব্যাপারে জানতে বারবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানকে। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

তবে বিসিবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সতর্ক অবস্থানে থেকে বললেন, ‘বিষয়টা আমাদের নজরেও এসেছে। আমাদের আইনজীবী এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। ’
বিসিবি ও এনএসসি রায়ের প্রত্যায়িত কপি না দেখেই নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে অভিযোগ সাবের চৌধুরীর, ‘বিসিবি, নির্বাচন কমিশন বা এনএসসি—কেউই রায়ের কপি আগে দেখেনি। এনএসসি আমাকে যে কপি দিয়েছে, সেটি ৩০ সেপ্টেম্বর তোলা। অথচ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তার অনেক আগে।

’ সাবের চৌধুরী রায়ের প্রত্যায়িত কপি চাইলে পরশু রাতে তাঁকে সেটা সরবরাহ করে এনএসসি। রায় দেখার পর নির্বাচন সম্পর্কে তাঁর বক্তব্যও সাবের চৌধুরী কালই জানিয়ে দিয়েছেন এনএসসিকে।
সংবাদ সম্মেলনে রায়ের আরও একটা দিক তুলে ধরে সাবের চৌধুরী বলেছেন, ‘আদালতে বলা হয়েছে, আইসিসির নির্দেশনা অনুযায়ী এই গঠনতন্ত্র হয়েছে। এটা নাকি আইসিসির আদর্শ (মডেল) গঠনতন্ত্র। কিন্তু আইসিসি ক্রিকেট প্রশাসনকে সরকারি প্রভাবমুক্ত করার কথা বললেও এই গঠনতন্ত্রে সরকারি হস্তক্ষেপকে আরও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছে।

’ বিসিবির বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলর মনোনয়ন দেবেন জেলা প্রশাসক। বিসিবিতে সরকারি প্রভাব এতে যেমন বাড়বে, তেমনি এনএসসি থেকে একজনের জায়গায় তিনজন পরিচালক আসার নিয়ম করেও অবজ্ঞাই করা হলো আইসিসির নির্দেশনাকে। সাবের চৌধুরীর শঙ্কা, আইসিসিকেও মামলায় ভুলভাবে জড়িয়ে ফেলায় ভবিষ্যতে আইসিসিও বাংলাদেশকে সন্দেহের চোখে দেখতে পারে।
বিসিবির নির্বাচনে এনএসসির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও তুলেছেন সাবের চৌধুরী। সে সঙ্গে চাপের কাছে নতিস্বীকার না করে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কাউন্সিলর মনোনয়ন করায় ধন্যবাদ দিয়েছেন গুলশান ইয়ুথ ক্লাব ও সিসিএসকে।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।