‘‘সরকার নাকি গ্যাস বাড়াইছে? এক ঘণ্টা লাইনে খাড়াইয়া সিলিণ্ডারের অর্ধেক গ্যাসও পাইলাম না। রাইতে আবার লাইনে খাড়ান লাগবো। গ্যাসের এমন আকালতো জীবনে দেহি নাই। বিকাল থাইকা তেল দিয়া গাড়ি চালান লাগবো। ৫টা থাইকা ৯টা পর্যন্ত পাম্প বন্ধ।
জামালের মাইক্রোতে গ্যাস ধরে এক হাজার ১৮০ টাকার। গ্যাস ঢুকেছে ৫২০ টাকার।
গ্যাসের চাপ কম থাকায় সবাইকেই কম গ্যাস নিয়ে ফিরতে হচ্ছে। দিনের ভেতর একাধিকবার ফিলিং স্টেশনে লাইন দিতে হচ্ছে। এতে ফিলিং স্টেশনগুলোকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে যানজট। শুধু সিএনজি স্টেশনেই নয়, কল-কারখানা ও আবাসিকে চলছে তীব্র গ্যাসের সংকট। কমে গেছে বিদ্যুৎ উৎপাদনও।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহাব খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাকে গ্যাস দেন, আমি বিদ্যুৎ দিচ্ছি। গ্যাসের অভাবে প্রায় এক হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদিত হচ্ছে।
এদিকে গ্যাসের অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর আবাসিক বাসিন্দারা। প্রধান সঞ্চালন লাইনের আশপাশে থাকা কিছু এলাকায় দিনের বেলা গ্যাস মিললেও অধিকাংশ এলাকায়ই সকাল ৭টার পর চুলা জ্বলে না। দুপুর পার হলে গ্যাস আসতে শুরু করে।
মধ্যবাড্ডার পোস্টঅফিস গলির ৯৬৫ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা পারভীন সুলতানা বলেন, ক’দিন আগেওতো এত সমস্যা ছিল না। ঈদের পর থেকে খুবই খারাপ অবস্থা। রাতে তিন বেলার খাবার রান্না করে রাখতে হয়। তবে শীঘ্রই ইলেক্ট্রিক চুলা কিনবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন সিএনজি স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে সকাল ৮টা থেকেই কমতে থাকে গ্যাসের চাপ।
স্বাভাবিকভাবে সিএনজি স্টেশনে গ্যাসের চাপ থাকার কথা ১৫ পিএসআই। দিনে তা কখনো এক পিএসআই’র নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে বন্ধ করে দিতে হচ্ছে সিএনজি সরবরাহ। গ্যাসের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও যানবাহনে মিলছে না পর্যাপ্ত গ্যাস। সিএনজি স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা বলছেন, বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চাপ থাকেই না বলা যায়।
সরকারি নির্দেশে বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পাম্ব বন্ধ থাকায় এরপর গ্যাস নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন যানবাহন চালকরা। এতে সিএনজি স্টেশনের সামনে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, গ্যাস দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর মক্কা সিএনজি স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় গ্যাসের চাপ মাপা মিটারের কাটাটি ১ পিএসআই ঘেষে নড়াচড়া করছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, গত ছয় মাস ধরে সমস্যাটা বেশি দেখা দিয়েছে। কিছুক্ষণ পরেই সিএনজি স্টেশন বন্ধ করে দিতে হবে।
কোনো গাড়িতে ৪০০ টাকার গ্যাস ধরলে দুপুরের দিকে ৫০-৬০ টাকার বেশি দেওয়া যায় না। সিটিজেন সিএনজি’র হাফিজুল ইসলাম বলেন, গড়ে ৫-৭ পিএসআই চাপ থাকে। সকাল ৮টা থেকে তা আরো কমতে থাকে।
এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাসের পরিচালক (অপারেশন) মশিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দিনের প্রথম ভাগটাই মূলত তাদের পিক সময়। এ সময় আবাসিকসহ সকল প্রতিষ্ঠানে একযোগে গ্যাস ব্যবহার শুরু হয়।
সরবরাহ না বাড়লে আপাতত এর কোন সমাধান নেই। এ ব্যাপারে পেট্রোবাংলাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।