"রাজনীতি মানুষের কাজ, ছাগুদের উচিৎ কাঁঠাল পাতা চিবানো, লোকালয় থেকে দূরে গিয়ে!"
পদ্মা নদীর উপর ব্রীজ করলে নদীতে পলি জমে নতুন চরের সৃষ্টি হবে । নদীর নাব্যতা কমে যাবে যার কারনে শুষ্ক মৌষুমে নৌযান চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ব । হারিয়ে যাবে পদ্মার গৌরব রূপালী ইলিশ । বাস্তুহারা হবে হাজার হাজার মানুষ । এদের পূনর্বাসনের জন্য আবার খরচ করতে হবে শত শত কোটি টাকা ।
তাই আমি মনে করি ব্রীজ ট্রীজ সবই ইন্ডিয়ান ষড়যন্ত্র বাংলাদেশকে তাদের অঙ্গরাজ্যে পরিনত করার জন্য...
পদ্মা সেতু সফল হয় নি, তাই এর ক্ষতিকারক দিকগুলো নিয়েও কেউ কোনদিন কথা বলে নি, যাই হোক, এ লেখায় ফাজলামু করার ইচ্ছেটা দমনই করলাম! এখানে কথা বলবো রামপালের টেকনিক্যাল দিকগুলো নিয়ে।
রামপাল নিয়ে যা হচ্ছে তার পুরোটাই মুলত ইমোশনাল এবং একটি বা দুইটি নির্দিষ্ট দলের ফায়দার জন্য, আওয়ামীলীগকে চাপে রাখার জন্য। দেশের জন্য অতি জরুরী এই প্রোজেক্ট ক্ষতিকর কিনা তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণটুকু আমাদের বুঝতে হবে, শুধু চিলে কান নিয়ে গেছে বলে চিলের পেছনে দৌড়ানোটা হবে অনুচিত!
নীচের লেখাটির অংশ বিশেষ Hoque Polash এর ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেয়া, বাকীগুলোও সংগৃহীত ও সম্পাদিত। পোস্ট দেবার প্রয়োজনে যা সামান্য পরিমার্জন করা হয়েছে, পুরোটা পড়ুন, প্রশ্নত্তরগুলো বিপ্লবীদের কমন পড়ার কথা। কোন টেকনিক্যালি সমর্থিত প্রতিমন্তব্য কি "অতি-বিপ্লবীদের" কাছে থাকলে এখানে দিয়ে যেতে পারেন! আশা করি তারও সঠিক ও সমুচিত উত্তর দেয়া সম্ভব হবে।
Hoque Polash, 'রামপাল ইস্যুতে আর কিছু বলার ইচ্ছা ছিল না। কারণ রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরোধীতাকারীরা জেগে জেগে ঘুমাচ্ছেন। কোনভাবেই তাদের ঘুম ভাঙ্গানো সম্ভব না। তারা কোন যুক্তিই শুনতে রাজিনা। একজন ভাইয়ের লেখায় রামপাল ইস্যুতে সম্ভাব্য সব ধরণের প্রশ্নের উত্তর পেলাম।
প্রতিটি উত্তরই টেকনিক্যাল দিক বিবেচনা করে লিখা হয়েছে। চাইলে পড়ে দেখতে পারেন। আর হ্যাঁ, আমি নিজে একজন কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ার, অতএব বিরোধীতা করে কমেন্ট করতে চাইলে যৌক্তিক ব্যাখ্যা নিয়ে আসবেন। '
প্রশ্ন ১. প্রস্তাবিত প্রকল্পটি কি সুন্দরবন এবং ইউনেস্কো "ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট" থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থিত? এই প্রকল্পটি কি 'এনভায়রনমেন্টাল কনজারভেশন রুলস (ECR) ১৯৯৭ এর পরিপন্থী?
উত্তর:প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সুন্দরবনের নিকটতম সীমানা থেকে ১৪ কিলোমিটার এবং নিকটতম ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট থেকে ৬৯.৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। "এনভায়রনমেন্টাল কনজারভেশন রুলস (ECR) ১৯৯৭" এর মোতাবেক কোনো স্থাপনা সুন্দরবনের সীমানার ১০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে নির্মাণ করা যাবে না।
এই ১০ কিলোমিটার জায়গাকে “ইকোলজিকেলি ক্রিটিক্যাল এরিয়া” হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেহেতু প্রস্তাবিত প্ল্যান্ট এর দূরত্ব সুন্দরবনের সীমানা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, সেহেতু এই প্রকল্প “ECR 1997” এর সাথে সম্পূর্ণরূপে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্রশ্ন ২:প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রকল্পের চিমনি থেকে নির্গত ধোঁয়া কি স্থানীয় এলাকার তাপমাত্রায় কোনো প্রকার প্রভাব ফেলবে?
উত্তর: না। চিমনি থেকে নির্গত "ফ্লু গ্যাস" এর তাপমাত্রা হবে সর্বোচ্চ ১২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড যা অন্যান্য সমসাময়িক প্রযুক্তি থেকে অনেক কম। পরিবেশ অধিদপ্তরের মান অনুযায়ী চিমনির মুখ ২৭৫ মিটার উচ্চতায় রাখার কারণে এই ফ্লু গ্যাসকে সহজেই বায়ুমন্ডলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
যেহেতু প্রস্তাবিত প্রকল্পের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ভৌগলিক প্রতিবন্ধক নেই, যেমন পাহাড়-পর্বত, উঁচু দালান বা ঘনবসতি, সেহেতু উষ্ণতা আটকা পরে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই।
প্রশ্ন: ৩
ক) মজুদ করে রাখা কয়লা থেকে সূক্ষ্ম চূর্ণ (কোল ডাস্ট) কি আশেপাশের এলাকায় বা স্থানীয় জনসাধারণ পর্যন্ত পৌছাবে?
খ) কয়লা পরিবহনের সময় সূক্ষ্ম চূর্ণ (কোল ডাস্ট) কি হাওয়ায় মিশে সুন্দরবনের বাতাস দূষিত করবে?
উত্তর: না। ·প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিভিন্ন স্তরে (যেমন কয়লার টার্মিনাল, স্টক ইয়ার্ড, মূল প্রকল্প ও অ্যাশ ডিসপোজল পন্ড) অত্যাধুনিক 'ডাস্ট সাপ্রেশন সিস্টেম' থাকবে যা সয়ংক্রিয় সেন্সর এর মাধ্যমে বাতাসে ছাই এর পরিমান তদারক এবং নিয়ন্ত্রণ করবে। কনভেয়র বেল্ট (যা দ্বারা কয়লা প্রকল্পের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তর করা হবে) সম্পূর্ণভাবে আবৃত বা ঢাকা থাকবে। স্থানান্তরের জায়গাগুলোতে "Water Sprinkler" (পানি ছিটানোর যন্ত্র) থাকবে।
"ওয়াটার স্প্রিন্কলার" যখনই দরকার তখনই নিয়ন্ত্রণ করার স্বার্থে "ওয়াটার স্প্রিন্কলার জেট" থাকবে। যেখানে কয়লার মজুদ রাখা হবে (স্টক ইয়ার্ড), সেই পুরো এলাকা সয়ংক্রিয় আর্দ্রতা সেন্সর সম্বলিত "ওয়াটার স্প্রিন্কলার" এর আওতায় থাকবে। সুতরাং, জাহাজের খোল থেকে, বা কয়লা নামানোর সময়, বা মজুদ থেকে অথবা কনভেয়র বেল্ট থেকে সূক্ষ্ম চূর্ণ আশেপাশের এলাকায় বা সুন্দরবনে পৌছানোর সম্ভবনা নেই বললেই চলে।
প্রশ্ন ৪- বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত ছাই আশেপাশের জনবসতি কিংবা সুন্দরবনের বায়ু দুষিত করবে কি?
উত্তর- না।
শক্তিশালী Electrostatic Precipitator (ESP) যন্ত্র লাগানো হবে যার ফলে উৎপন্ন ফ্লাই অ্যাশ এর ৯৯.৯% গ্যাসীয় জ্বালানী থেকে শোষণ করে নেয়া যাবে।
এই ESP ২৭৫ মিটার উঁচু চিমনি থেকে ফ্লাই অ্যাশ নির্গমন ১০০ মাইক্রোগ্রাম/ Nm³ এ কমিয়ে আনবে। এই মাত্রা ECR 1997 এর নির্ধারিত মানদন্ড- ২০০ মাইক্রোগ্রাম/Nm³ এর চেয়ে অনেক কম। একইভাবে চুল্লীর তলায় জমা হওয়া ছাইও (Bottom ash) স্বয়ংক্রিয় অ্যাশ কালেকশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের দ্বারা সরিয়ে ফেলা হবে।
প্রশ্ন ৫- সালফার ডাই অক্সাইড এবং নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন কি আশেপাশের বায়ুর স্বাভাবিক গুনাগুণ নষ্ট করবে?
উত্তর- না।
সকল গ্যাসের নির্গমন হার পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্ব ব্যাঙ্কের নির্ধারিত মানদণ্ডের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।
প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে সালফার ডাই অক্সাইড ও নাইট্রাস অক্সাইডের নির্গমন হার হবে যথাক্রমে- ৮১৯ g/s এবং ৭৫০ মাইক্রোগ্রাম/Nm³। যেখানে বিশ্বব্যাঙ্কের মানদন্ড অনুযায়ী ১৫৯৭g/s এবং ৭৫০ মাইক্রোগ্রাম/Nm³ পর্যন্ত নিরাপদ। বিদ্যুতকেন্দ্র পরিবেষ্টনকারী পরিবেশের বায়ুর ওপর এই গ্যাসের প্রভাব হবে নগণ্য। এছাড়া বছরের বেশিরভাগ সময় বাতাসের প্রবাহ থাকে উত্তরমুখী, যেখানে সুন্দরবন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। তাই সুন্দরবনে বায়ু দূষণের সম্ভাবনাও খুবই কম।
প্রশ্ন ৬- নির্গত ছাই কি আমাদের দেশে কোনও কাজে ব্যাবহার করা যাবে? উত্তর- হ্যা।
বর্তমানে আমাদের দেশের সিমেন্ট কারখানা গুলোতে প্রতিবছর ২.১ মিলিয়ন টন ছাই প্রয়োজন হয়। ২০২০ সাল নাগাদ এই চাহিদা দাঁড়াবে ৩.৭৫ মিলিয়ন টন। প্রস্তাবিত বিদ্যুত কেন্দ্র হতে প্রতি বছর উৎপাদিত ছাইয়ের অনুমিত পরিমান ০.৭৫ মিলিয়ন টন। তাই উপজাত ছাই সহজেই সিমেন্ট কারখানায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যাবহার করা যাবে।
এছাড়াও এই ছাই সার হিসেবে, মাটি ও বালির সাথে মিশিয়ে বাঁধ তৈরী, মাটি ভরাট ও ইট তৈরিতে কাজে লাগানো সম্ভব।
প্রশ্ন ৭- গ্লোবাল ওয়ারমিং বা বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কি ভুমিকা হবে?
উত্তর:প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে সুপারক্রিটিকাল বয়লার প্রযুক্তির ব্যাবহার করা হবে যেখানে পানিকে উত্তপ্ত করে বিদ্যুৎ উপাদন করা হবে। এ প্রযুক্তি ব্যাবহারের ফলে প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বছরে প্রায় ৭.৯ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত করবে, যা প্রচলিত কয়লাভিত্তিক প্রযুক্তির বিদ্যুতকেন্দ্র থেকে ১০ শতাংশ কম। প্রস্তাবিত বিদ্যুতকেন্দের কার্যক্রম পরিচালনার কারনে জাতীয় কার্বন নির্গমনের বৃদ্ধির পরিমাণ অতি সামান্য হবে বলে নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলস্বরূপ প্রচলিত কয়লাচালিত তাপীয় বিদ্যুতকেন্দ্র অপেক্ষা এ বিদ্যুতকেন্দ্রের আবহাওয়ার তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে কম ভূমিকা থাকবে।
তবে, কার্বন নির্গমনের ক্ষতিপূরণস্বরূপ সবুজ বেষ্টনী (Green belt) স্থাপন করা হবে, অর্থাৎ বিদ্যুতকেন্দ্রের চারপাশে বন, খোলা মাঠ, গাছপালার জন্য নির্দিষ্ট জমির ব্যাবস্থা করা হবে।
প্রশ্ন ৮- বিদ্যুতকেন্দ্রটি কি ভারী ধাতু নির্গমন করবে?
উত্তর: না।
কয়লায় ভারী ধাতুর ঘনত্ব খুবই সামান্য। ভারী ধাতুর মৌলিক অংশ কয়লার ছাইয়ের মধ্যেই রয়ে যাবে , পরবর্তীতে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সেই ছাই নিয়ন্ত্রন ও নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা করা হবে। সুতরাং, ভারী ধাতু দ্বারা পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা অনেক কম।
প্রশ্ন ৯- বিদ্যুতকেন্দ্রটির জন্য কি এ্যাসিড রেইন বা ক্ষারীয় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে?
উত্তর: এ্যাসিড রেইনের কোন সম্ভাবনা নেই। যেহেতু প্ল্যান্টটির চারপাশে ২০ কিমি পর্যন্ত কোন ভূখন্ডের প্রভাব এবং বিল্ডিং, জনবহুল শহরের মত বাধা নেই তাই জ্বালানী ও অন্যান্য কার্য পরিচালনা করার জন্য সৃষ্ট দূষিত ধোয়া (এসিড বৃষ্টি ঘটাতে সক্ষম এমন দূষিত পদার্থ) সহজেই অপসারণ করা যাবে।
প্রশ্ন ১০- মইদারা ও পশুর নদী ভরাট বা দখলের কোন পরিকল্পনা কি আছে?
উত্তর: না।
উল্লেখিত ২টি নদীর একটিরও কোন অংশ দখল করা হবে না। বরং, পশুর নদী ড্রেজিং-এর মাধ্যমে নাব্যতা বৃদ্ধি করে নদীপথে যাতায়াত ব্যাবস্থা উন্নয়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
প্রশ্ন ১১- সুন্দরবনে/ আকরাম পয়েন্টে কয়লার মজুতঘর বানানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে?
উত্তর: না। সুন্দরবনের কোন এলাকাতে এবং ইকলজিক্যালি ক্রিটিকাল এরিয়াতে কয়লার মজুতঘর স্থাপন করা হবে না। কয়লার মজুতঘর প্ল্যান্ট সাইটে নির্মাণ করা হবে।
প্রশ্ন ১২- সুন্দরবনের মাঝ দিয়ে কয়লা পরিবহন কি সুন্দরবনের ক্ষতি করবে?
উত্তর: না। কয়লা পরিবহন করা হবে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের বর্তমানে প্রচলিত (existing) নৌপথ দিয়ে।
কয়লা পরিবহনের উদ্দেশ্যে সপ্তাহে শুধুমাত্র একটি বড় জাহাজ (Mother vessel) আকরাম পয়েন্টে আসবে এবং প্রকল্পের নির্ধারিত স্থানে মালবাহী বড় নৌকার সাহায্যে কয়লা খালাস করবে যা পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (ECR) ১৯৯৭, আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থা (IMO) কনভেনশন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
প্রশ্ন ১৩ - পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে উত্তপ্ত পানি নির্গত হবে কি ?
উত্তর: না।
বিদ্যুৎ প্রকল্পের নকশা এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে উত্তপ পানি বন্ধ থাকা অবস্থায় চক্রাকারে ঘুরে ক্রমান্বয়ে ঠান্ডা হবার পর নির্গমন হবে । এবং কোনভাবেই উত্তপ্ত পানি সরাসরি নদীতে নির্গত হবেনা ।
প্রশ্ন ১৪ - এই প্রকল্পের কারণে পাশুর নদীর পানি দুষিত হবার সম্ভাবনা আছে কি ?
উত্তর : পাওয়ার প্ল্যান্টের করনে পাশুর নদীর পানির গুণগত মান পরিবর্তিত হবেনা, কারন-*একটি সমন্বিত পানি এবং বর্জ্য পানি শোধনাগার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে ।
* ময়লা পানি পুনর্ব্যাবহারের (reusing) লক্ষে পানি বিশুদ্ধকরণ (recycling) প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন হবে । * প্রকল্পটি এমনভাবে সাজানো হবে যাতে এখান থেকে কোনো বর্জ্য পদার্থ এবং ময়লা পানি অব্যাবস্থাপনায় নির্গত না হয় । * কোনভাবেই উত্তপ্ত পানি সরাসরি নদীতে নির্গত হবেনা ।
প্রশ্ন ১৫- ঐখানে কি কোনো কালো ধোঁয়ার সৃষ্টি হবে যার ফলে বায়ুমন্ডল এবং সুন্দরবনের উপর প্রভাব পড়বে ?
উত্তর : কালো ধোঁয়া এবং বাষ্প তৈরির সম্ভাবনা খুবই কম, কেননা-*এটি ECA ১৯৯৫ এর দূষণকারী কেন্দ্রীকরণ মান নিশ্চিত করে । * জ্বালানি গ্যাস বায়ুমন্ডলের স্তর হতে ২৭৫ মিটার উপর থেকে নির্গত হবে যা কালো ধোঁয়াশা কাটাতে সহায়ক* প্রকল্পের আশপাশে কোনো ভৌগলিক বাধা নেই যেমন- পাহাড়, ঘনবসতি শহর যা প্রকল্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
* ঘুর্নিঝড় এবং নিম্নচাপ (সাধারনত যে অঞ্চলে হয় ) এর কারণে দীর্ঘমেয়াদে দূষিত পদার্থ আটকে গিয়ে বা অন্য কোন উপায়ে বায়ুদূষণ ঘটাতে সক্ষম হবে না।
প্রশ্ন ১৬ - পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ কি রপ্তানী হবে ?
উত্তর : না, তবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে এবং তখন বিদ্যুৎ রপ্তানি করা যাবে।
তথ্যসূত্র:
# GOVERNMENT OF THE PEOPLE’S REPUBLIC OF BANGLADESH MINISTRY OF POWER, ENERGY & MINERAL RESOURCES POWER DIVISION BANGLADESH POWER DEVELOPMENT BOARD
[Final Report on Environmental Impact Assessment of 2x (500-660) MW Coal Based Thermal Power Plant to be Constructed at the Location of Khulna Dhaka]
# January 2013Center for Environmental and Geographic Information Services
শেষকথাঃ
যারা দেশের জন্য ভাবেন, তাদের আবেগটা মিথ্যে নয়, এর প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, আপনারা যাদের দ্বারা মিসগাইডেড হয়ে তাদের ফায়দা করে দিতে চাইছেন, এই তারাই আপনার দেশের শত্রু। দেশের উন্নয়নে অসামান্য সাফল্যের সম্ভাবনা নিয়ে আসা রামপাল প্রোজেক্টটিকে সমর্থন না করুন, কিন্তু সে অসমর্থন এর পেছনে 'আওয়ামীলীগ এর প্রোজেক্ট' / নির্বাচন সম্পর্কিত প্রোজেক্ট ভাবলেই চলবে না, অসমর্থনের থাকা চাই সম্পূর্ণ যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক কারণ। আপনারা চাইলে এখনও এসব পয়েন্ট এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নিয়ে আলোচনা করতে পারেন, যে কোন প্রোজেক্টেই পরিবেশের উপরে প্রভাব পরতে পারে, কিন্তু তা যদি নেতিবাচক বা ভয়াবহ না হয় বা সুন্দরবনের জন্য ক্ষতিকারক না হয় তাহলেও সে সবের বিষয়েও গোঁ ধরে থাকলে দেশ এগোবে কীভাবে? দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার বড় অংশই মেটাবে এই প্রোজেক্ট, শিল্পায়নে আসবে দারুন গতি।
তবে আপনার মতো করে আমিও চাইনা আমাদের দেশের সম্পদ সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হোক, যার আশ্বাস উপরের পয়েন্টগুলো থেকে বৈজ্ঞানিকভাবেই পাওয়া যায়।
আর এমন নয় প্রোজেক্ট শুধু রামপালেই হচ্ছে, কক্সবাজারের মহেশখালীতে হবে বিদ্যুৎ উৎপাদন পার্ক।
ইতিমধ্যে জাপানের জাইকা ১৩০০ মেগাওয়াট এবং মালয়েশিয়ার কোম্পানি ১৩০০ মেগাওয়াটের কাজ পেয়েছে। সাথে আরও ২৫০০ মেগাওয়াটের কাজ দেয়া হবে অন্য দুইটি কোম্পানিকে। এর মধ্যে ভারতের এনটিপিসি পেতে পারে ১৩০০ মেগাওয়াট অন্যটা হয়তো বা চায়না।
মোট ৫৫০০ মেগাওয়াটের কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন পার্ক গড়ে তোলা হবে কক্সবাজারের মহেশখালীতে।
মানি আর না মানি, এগুলোরও প্রভাব কিন্তু পড়বেই পরিবেশের উপর, রাশিয়ার সাথে করতে যাওয়া পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথাও না বললেই নয়। এগুলোর সামগ্রিক প্রভাব সমুদ্র সহ সারা দেশের তথা বৈশ্বিক জলবায়ুর উপরেই কমবেশী পড়বে, তাই যদি বলা হয় যে সব বন্ধ করে রাখা হোক, সেটাও তো সমীচীন নয়, এগুলো সারা বিশ্বেই হচ্ছে, প্রয়োজনেই হচ্ছে। দেশের স্বার্থেই তো নিজেদের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে হবে। এই ধরনের বড় প্রোজেক্টগুলোতে সব সময়ই সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হয় পরিবেশ বান্ধব করার জন্য, তার সুফলও নিশ্চই আমরা ভোগ করবো।
রামপানের বিরোধীতা করার যৌক্তিক কোন কারণ নেই, টেকনিক্যাল কোন বেইজ নেই। একটিই ভিত্তি রয়েছে যা পৃথিবীতে অবস্থিত ও নির্মাণাধীন মোটামুটি সব স্থাপনার বিরুদ্ধেই করা যায়। সবগুলোই পরিবেশের উপরে নেতিবাচক প্রভাব রেখে চলেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।