আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কফির পেয়ালা হাতে তিশানের কাব্য

কফির পেয়ালা হাতে নিজের অফিস রুমের জানালায় দাড়িয়ে তিশান শেষ বিকেলের বিষণ্ণ আকাশ দেখছে । আকাশের বিষণ্ণতার রক্তিম আভাটুকু খুব অদ্ভুত ভাবে তিশান কে আদর করে দিচ্ছে যেন । চা, কফি কখনোই পছন্দ না করলেও মাঝে মাঝে কোল্ড কফি টা পান করার অভ্যাস করতে হয়েছে প্রফেশনের কারনেই । জীবনের সব সম্পর্কগুলো নিজেদের মতো করে সুখ খুঁজে নিয়েছে , সেই অর্থে তিশান নিজেও বেশ সুখী । কোন অপূর্ণতার রেশ নেই ।

মাঝে মাঝে বাবা-মা কে খুব বেশী মিস করে,এই যা । খুব কম কিন্তু তারপরও মনের গহীনে একজনের অস্তিত্ব টের পায় । তবে তার খোঁজ নিতে কখনো ইচ্ছে হয় না অথবা ইচ্ছে করে না । একটা সময় ছিল ভয়ঙ্কর রকমের পাগল ছিল তার জন্য । ভালোবাসা নামক অনুভূতিতে খুব বাজে ভাবে আসক্ত ছিল ।

এই জাগতিক অংশের বাইরে শুধুমাত্র তাকে নিয়েই একটা আলাদা জগত তৈরি করেছিল । সেই জগতেই বসবাস ছিল । মুহূর্তগুলোকে অবাক ভালোবাসার অনুভূতিতে সিক্ত করায় ভীষণ রকমের ব্যাস্ত ছিল । কি করে নি তখন, আজ ভাবলে হাসি পায় । যখন তখন একটু খানি দেখা করার জন্য রাতের ট্রেনে অথবা বাসে করে খুলনা থেকে ঢাকায় চলে আসা, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা, রাতের পর রাত ফোনে কথা বলে সকালে ক্লাশে যাওয়া, ঝড়ের সন্ধ্যা গুলোতে একই সময়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ফোনে কথা বলা, ছোট্ট ছোট্ট বিষয়গুলোতে যত্ন নেয়া , ভীষণ রাগী মেয়েটাকে মাঝে মাঝে রাগিয়ে সরি বলা, ঘুম কাতুরে মেয়েটার আধো ঘুমের ঘোরের আদুরে কণ্ঠ শোনার জন্য অপেক্ষা করা, প্রতি রাতে রাজকন্যা কে ঘুম পাড়িয়ে দেয়া , রাগের মাথায় যা ইচ্ছে তাই বলার পর চুপ হয়ে যাওয়া, নিজের সব কিছু শেয়ার করা (বন্ধুদের কথা, বাবা-মা'র কথা, ভাইয়ার কথা), সম্পূর্ণ নিজেকে তুলে ধরা, তার আহ্লাদের কাছে নিজের কষ্টগুলো কে বিসর্জন দেয়া ।

বিয়ের সব ঠিকঠাক হলে হটাত দুইজন পালিয়ে বিয়ে করার পরিকল্পনাও প্রায় হয়ে গিয়েছিলো । ছোট্ট- খাটো খুনসুটি গুলো করার পরিকল্পনা মাথায় অবিরত বিচরন করতো । আরও কতশত অনুভূতি জড়িয়ে রয়েছে সেই পৃথিবী জুড়ে , এখন আর মনে পড়ে না সেইসব অথবা মনে করতে ইচ্ছে জাগে না । ভালোবাসার রংধনুর মধ্যে কালো রং মিশিয়ে দিয়েছে সেই মানুষটি । পারে নি আমাকে ভালবাসতে ।

শুধুমাত্র অলীকের পেছনেই ছুটে গেছে । আমার ভালোবাসাই আমাদের পরিপূর্ণ করার জন্য যথেস্ট ছিল । হয়তো তারপরও আমার ভালোবাসা কে ধরে রাখার যোগ্য ছিল না সে । তার নিজের জীবনে পূর্ণতা - অপূর্ণতা নিয়েই ভীষণ দ্বন্দ্ব ছিল বলেই সে এই পৃথিবীতে বেমানান ছিল । এখন তিশান নিজেই এই পৃথিবীকে মনের গহীনে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে এই জাগতিক পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করছে ।

(অনেক দিন আগে তিশান কে নিয়ে কিছু লেখার জন্য বলেছিল, আজ লিখলাম) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।