আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কফির সাতকাহন



আমি নিজে কফি পছন্দ করি বলেই কফির পক্ষেই ইতং-বিতং জোগাড় করলাম
কফি (ইংরেজি: Coffee) বিশ্বব্যাপী খুবই জনপ্রিয় পানীয়। পানির সাথে ফুটিয়ে রান্না করা "কফি বীজ" নামে পরিচিত এক প্রকার বীজ পুড়িয়ে গুঁড়ো মিশিয়ে কফি তৈরি করা হয়। এই বীজ কফি চেরি নামক এক ধরনের ফলের বীজ। প্রায় ৭০টি দেশে এই ফলের গাছ জন্মে। সবুজ কফি বিশ্বের সব থেকে বেশি বিক্রীত কৃষিপণ্যের মধ্যে একটি।

কফিতে ক্যাফেইন নামক এক প্রকার উত্তেজক পদার্থ রয়েছে। ৮ আউন্স কফিতে প্রায় ১৩৫ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। [১] কফির উপাদান ক্যাফেইনের জন্যে কফি মানুষের উপর উত্তেজক প্রভাব ফেলে ও উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। এখন, চায়ের পর কফি বিশ্বের অত্যধিক জনপ্রিয় পানীয়।
খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাৎসরিকভাবে ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখে জাতীয় কফি দিবস পালন করা হয়।



উৎপত্তি
প্রাচীন মতবাদমতে, তেরই শতকে পূর্ব আফ্রিকার একটি স্থানীয় জনগোষ্ঠী প্রথম ব্যবহার করে। কফি প্রথম চাষ শুরু হয়, চোদ্দ শতাব্দীতে আরবদের দ্বারা। পরবর্তীতে পনের শতকের মাঝামাঝিতে ইয়েমেন, ষোল শতাব্দীতে মধ্যপ্রাচ্য, পারস্য, তুরস্ক এবং উত্তর আফ্রিকার বাকিস্থানে পৌঁছে যায়। তারপর ইন্দোনেশিয়া থেকে, বালকানস, ইতালি এবং ইউরোপ ও সর্বশেষে আমেরিকায় কফি চাষ ছড়িয়ে পড়ে।
১৬৬৮ সালে উত্তর আমেরিকায় প্রথম বাণিজ্যিকভাবে কফি খাওয়া হয়, এরপরই নিউ ইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া, বস্টন এবং অন্যান্য শহরগুলিতে কফি হাউস প্রতিষ্ঠিত হয়।



কফির নানা সুবিধা
সবথেকে মজার বিষয়, বেশি কফি পান করলে আত্মহত্যা প্রবণতা অনেকাংশে কমে যায়। হার্ভাড স্কুল অফ পাবলিক হেলথ, তাদের পত্রিকা দ্য ওর্য়াল্ড জার্নাল অফ বায়োলজিক্যাল স্যাইকিয়াট্রি জানাচ্ছে যে সব মানুষ প্রতিদিন কফি পান করেন তাঁদের আত্মহত্যা করার প্রবণতা কম থাকে। তাঁরা ১৬ বছর ধরে দু লাখ মানুষের উপর গবেষণা করে দেখেছেন কফি মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। স্নায়ু অনেক বেশি সজাগ থাকে। মানুষের কাছে কফি নেশার বস্তু হলেও হতাশা, বুক ধরফর কমাতে সেরোটিন, ডোপামিনের মতো হরমনগুলিকে সক্রিয় করে তোলে।

তখন আপনার ভাবনা, চিন্তাশক্তি করার ক্ষমতা সঠিক সময়ে ঠিকঠাক কাজ করে।
ক্যাফেইন এমন এক ধরনের উদ্দীপক উপাদান যা আপনার হৃৎপিণ্ড এবং বিপাক ক্রিয়ার গতি বাড়ায়। দৈনিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যাফেইন গ্রহণ করলে ক্লান্তি দূর হয়ে সজাগ থাকবে আপনার শরীর, একঘেয়েমি কাটিয়ে উঠে প্রাণশক্তি ফিরে পাবেন আপনি আর কর্মক্ষেত্রে হবেন বেশ চটপটে। চা এবং কফি ছাড়াও এনার্জি ড্রিংকস প্রায় সব ধরনের পানীয়, কোকো এবং চকলেটেও প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলে তা উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে।

গর্ভাবস্থাতেও অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করা উচিত নয়। এছাড়া স্বল্প সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলে মাথা ঘোরানোসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। মাত্রাতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণের অভ্যাস পরিণত হতে পারে আসক্তিতেও। তাই শরীর যতোই ক্লান্ত হোক না কেন, ক্যাফেইন গ্রহণ করা উচিত পর্যাপ্ত মাত্রায়।
সাধারণ আকৃতির এক কাপ কফি থেকে আপনি পাবেন ৮০ থেকে ১৮৫ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন, আর চা থেকে পাবেন ১৫ থেকে ৭০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন।

আর স্বাভাবিক অবস্থায় একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ দৈনিক ক্যাফেইন গ্রহণ করতে পারেন দুইশ’ মিলিগ্রাম পর্যন্ত। অর্থাৎ মানের উপর ভিত্তি দৈনিক এক থেকে দুই কাপ কফি কিংবা তিন/চার কাপ চা চলতেই পারে স্বচ্ছন্দে। একটি আপেল যতটুকু ক্যালরি পোড়ায়, এক কাপ কফি পোড়ায় তার দ্বিগুণ ক্যালরি। ফলে ওজন থাকে আয়ত্তের মধ্যে। নিয়মিত কফি পান করলে দূরে থাকে বার্ধক্যও।


অর্থাৎ ক্যাফেইন বা চা-কফি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে যেমন অবসাদ, ইনসমনিয়া, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে, তেমনি পর্যাপ্ত পরিমাণে নিয়মিত গ্রহণ করলে অবসাদজনিত সমস্যা কেটে যাওয়ার পাশাপাশি বাড়বে কর্মশক্তি ও কর্মস্পৃহা। এমনকি নিয়মিত ব্যায়াম করার সময়ে পেশীর সংকোচন-প্রসারণের গতিও বাড়বে এতে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, স্বাভাবিক অবস্থায় পূর্ণবয়স্ক একজন পুরুষ দৈনিক চার কাপ কফি কিংবা ছয় কাপ চা এবং একজন নারী তিন কাপ কফি অথবা চার কাপ চা খেতে পারবেন।
কফি প্রধানত উষ্ণতা প্রদান করে বা মনকে চাঙ্গা করে। এটি মানষিক ও শারীরিকভাবে শক্তিকারকও হতে পারে।

সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় আরো কিছু চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া গিয়েছে যা নিম্নে বর্ণিত হলো-

কফি হাট এ্যাটাকসহ অন্যান্য হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায় : কফি পান হাট এ্যাটাক ও হাট এ্যাটাকের কারণে মৃত্যুর হার কমাতে পারে এমন তথ্য পাওয়া গিয়েছে অনেক গবেষণায়। ১৫ বছর ব্যাপী ৪১,০০০ (একচলিশ হাজার) মহিলার অংশগ্রহণে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রত্যহ ৩ কাপ করে কফি পান হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সক্ষম। পুরুষদের ক্ষেত্রেও অনুরূপ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। কফিতে ক্যাভনয়েড নামক শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
কফি রক্তের কলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে, রক্তনালীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে : চা বা চকোলেটের চেয়ে কফিতে অধিক পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে।

এ ক্যাফেইন রক্তের এলডিএল (ক্ষতিকারক কলেস্টেরল) কমাতে এবং এইচডিএল (উপকারী কলেস্টেরল) বৃদ্ধি করতে ভূমিকা রাখে। এ দু’টির অস্বাভাবিক উপস্থিতি রক্তনালীকে সরু করে (বক) যা এর দূরবর্তী অংশে রক্ত সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করবে। এর ফল স্বরূপ হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোক বা পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ হতে পারে। যারা এ সবের ঝুঁকিতে আছেন তাদের প্রত্যহ ৪ কাপ কালো কফি পান খুবই উপকারী হবে।
কফি মেটাবলিক সিন্ড্র্রোমের ঝুঁকি কমায়: মেটাবলিক সিন্ড্রোম বলতে বহিঃস্থুলতা (অতিরিক্ত কোমরের মাপ) ইনসুলিন রেজিষ্ট্রান্স উচ্চ রক্তচাপ গুকোজ অসহিষ্ণুতাকে বুঝায়।

এর যে কোনো একটি বা সমন্বিত ভাবে হৃদরোগ, স্ট্রোক বা অন্যান্য কার্ডিও ভাস্কুলার রোগ ঘটাতে পারে। নিয়মিত কফি পানে রক্তের কলেস্টেরলের উন্নতি, দৈহিক কাঠামোর উন্নতি ফলস্রুতিতে মেটাবলিক সিন্ড্রোমের উন্নতি ঘটতে পারে।
কফি আলঝেইমার্স ও পারকিনসন রোগের ঝুঁকি কমায় :যৌবনকালে কফি পানে শুধু স্মার্টনেস বৃদ্ধি করে তাই নয়, বৃদ্ধ বয়সেও কফি পান মস্তিস্কের কার্যকারীতা সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতে পারে। বৃদ্ধ বয়সে মস্তিস্কে স্নায়ুকোষের সংখ্যা কমে যাবার কারণে স্মৃতি শক্তি লোপ পেতে থাকে, আলঝেইমার্স রোগ হয়। বিভিন্ন দেশের গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কফি পানে আলঝেইমার্স, স্মৃতি শক্তি লোপ পাওয়া এবং পারকিনসনিজম রোগের ঝুঁকি ৬০ শতাংশ কমতে পারে।

শুধুমাত্র পারকিনসনিজম হবার ঝুঁকি কমে ২৩-৬০ শতাংশ। কফি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি দুই ধরনের স্মৃতি বাড়াতে সাহায্য করে। ২০০৫ সালে উত্তর আমেরিকার রেডিওলজিক্যাল সোসাইটিতে উপস্থাপিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, নিয়ন্ত্রিত মাত্রার ক্যাফেইনসমৃদ্ধ কফি দিনে দুই কাপ পান করলে স্বল্পমেয়াদি স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের তাত্ক্ষণিক সাড়া দেয়ার সক্ষমতা বাড়ে। ২০১১ সালে ফ্লোরিডার বিজ্ঞানীরাও জানান, মধ্য বয়স থেকে নিয়মিত চার-পাঁচ কাপ কফি পান অ্যালঝেইমার (বয়স বাড়ার কারণে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া) রোগের ঝুঁকি কমায়।
বিষণ্নতা প্রতিরোধ: ২০১১ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, দিনে দু-তিন কাপ কফি পান করেন, এমন নারীদের মধ্যে বিষণ্নতা জন্মানোর প্রবণতা ১৫ শতাংশ কম এবং চার কাপ বা তারও বেশি কফি পান করা নারীদের ক্ষেত্রে বিষণ্নতায় আক্রান্ত হওয়ার এ হার ২০ শতাংশ কম।


ঘর্ষণযুক্ত পিত্তথলির পাথর হবার হার কমায় কফি: হার্ভাট স্কুল অব পাবলিক হ্যালথ্ একটি গবেষণায় পেয়েছে, যে সব ভদ্র মহিলা দিনে ৩ কাপের মতো কফি পান করেন তাদের ঘর্ষণযুক্ত পিত্তথলির পাথর হবার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।
কফি খাদ্যের বিপাকীয় কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে: কফি নিয়মিত ভাবে খাদ্যের বিপাকীয় ক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করে এবং যাদের হজমজনিত সমস্যা আছে তাদের জন্য কফি উপকারী। বিশেষ করে যাদের দিনে কয়েকবার মল ত্যাগ করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে, তাদের ক্ষেত্রে কফি পান অতি দ্রুত দৃশ্যমান উন্নতি ঘটাতে পারে।
কফি দন্ত স্বাস্থ্য সহায়ক:সুন্দর দাঁতের সুন্দর হাসি সবার ভাল লাগে, কিন্তু দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ায় এখানে বাধা স্বরূপ। নিয়মিত কফি পান (রোস্টেট কফি) এই ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।


কফি মাথা ব্যথা প্রতিরোধ বা সারাতে পারে: আমার মনে হয় এই তথ্যটি অনেকেরই জানা যে, মাথা ব্যথা করলে কফি পানে তা সেরে যায়। যে কোনো ধরনের মাথা ব্যথা হলে কফি পান করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে। মাথা ব্যথার সময় রক্তনালী প্রসারিত হয়, কফির ক্যাফেইন সংকুচিত হতে সহায়তা করে। যার ফলশ্রুতিতে মাথা ব্যথা কমে।
কফি পান সুগঠিত ও সবল মাংসপেশি অর্জনে সহায়ক হতে পারে: মাংসপেশির সঠিক গঠন অর্জন করা ও তা বজায় রাখার জন্য কোষীয় ডিএন- এর প্রভাব ব্যাপক।

যারা নিয়মিত শারীরিক শ্রম বা ব্যায়াম করেন তাদের ক্ষেত্রে ডিএন- এর এ ভূমিকাকে প্রভাবিত করতে পারে কফির ক্যাফেইন। আরো মজার ব্যাপার হলো- ক্যাফেইনের এ প্রভাবটি সহসাই দৃশ্যমান হয়।
কফি পানে মৃত্যুর সামগ্রিক ঝুঁকি কমে: পৃথিবীর বিভিন্ন জনগোষ্ঠীতে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত কফি পানে সামগ্রিক মৃত্যু ঝুঁকি কমপক্ষে ৫ শতাংশ কমতে পারে। ৪ লক্ষ বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপর ১৪ বছর ব্যাপী পরিচালিত গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, কফি পায়ীদের মৃত্যু ঝুঁকি কম। যারা দিনে ২-৩ কাপ কফি পান করেন তাদের ১০ শতাংশ এবং যারা ৪-৫ কাপ কফি পান করেন তাদের ১৪ শতাংশ মৃত্যু ঝুঁকি কমে।

গড় ৬ কাপ বা ততোধিক কাপ কফি পানে আরো ১০ শতাংশ মৃত্যু ঝুঁকি কমতে পারে। মহিলারা কফি পানে আরো বেশি উপকৃত হবে (গর্ভাবস্থায় বাদে)।
ডায়াবেটিস: দিনে চার কাপ বা তারও বেশি কফি পানের অভ্যাস আছে যাদের, তাদের ক্ষেত্রে টাইপ-২ ডায়বেটিসের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কম থাকে। ২০১২ সালে জার্নাল অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রিতে এর ব্যাখ্যা দেয়া হয়। কফির বিভিন্ন উপাদান শরীরে এইচআইএপিপি নামে এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান প্রতিরোধ করে, যার প্রভাবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতেও কফির প্রভাব রয়েছে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক উপাদানের (কার্সিনোজেন) মাত্রা কমায় কফি। ২০০৮ সালে সুইডেনে এক গবেষণায় দেখা যায়, দিনে দু-তিন কাপ কফি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। হার্ভার্ডে সম্প্রতি আরেক গবেষণায় পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে দৈনিক চার-পাঁচ কাপ কফি পানের সুফল দেখানো হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে কফি পায়ীদের মধ্যে কোলন ক্যান্সার হবার ঝুঁকি যারা কফি পান করে না তাদের তুলনায় চার ভাগের এক ভাগ।

নিয়মিত কফি পান ফুসফুস, প্রোস্টেট, স্টোন, জরায়ু, যকৃৎ, পাকস্থলি এবং অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার হবার ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। সবচেয়ে উপকৃত হবেন ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকিতে বসবাসকারী জনগণ (প্রান্তীয় অঞ্চলের জনগণ)।

হজম: খাদ্য শরীরে কাজে না লাগিয়ে সরাসরি চর্বিতে রূপান্তর হওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়ায় কফির ভূমিকা রয়েছে। ১৯৮০ সালেই এটি জানান বিজ্ঞানীরা। তবে ক্যাফেইন নাকি অন্য কোনো উপাদান এ কাজে সহায়তা করে, তা নিশ্চিত বলা যাচ্ছিল না।

২০০৬ সালে জানা যায়, ক্যাফেইনবহির্ভূত অন্যান্য উপাদানের কারণে হজমে দক্ষতা বাড়ে। জাপানের গবেষকরা সম্প্রতি জানান, কফির ক্লোরেজেনিক এসিডের কারণে শর্করা কাজে লাগানোর দক্ষতা বাড়ে দেহে। সবুজ কফিতে উপাদানটি সবচেয়ে বেশি থাকে।


অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট: হার্ভার্ডের গবেষকদের মতে, আমেরিকায় সব ধরনের উদ্ভিজ্জ খাদ্যের মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের সবচেয়ে বড় উত্স হচ্ছে কফি।

গেঁটে বাত: শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে হাড়ের জোড়ায় জোড়ায় প্রদাহ, ফুলে যাওয়া ও ব্যথার সমস্যাই গেঁটে বাত।

ক্যাফেইনের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত কিংবা নিয়মিত কফি দুটোই ইউরিক এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। দৈনিক গড়ে ছয় কাপ কফি পান করলে এ ঝুঁকি প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসে।

তবে অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। অতিরিক্ত ক্যাফেইন ঘুমে ব্যাঘাত ঘটানো থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদে উল্টো বিষণ্নতা ও অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে। তিন-চার কাপে সীমাবদ্ধ থাকাই ভালো হবে।

তাছাড়া যাদের ঘুমে সমস্যা বেশি হয়, তারা দুপুরের পর কফি এড়িয়ে চলবেন।

 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।