দেশের প্রধান রেলস্টেশন কমলাপুরে টিকিট কাউন্টার থেকে বুকিং সহকারীকে হত্যা করে ১৭ লাখ টাকা লুট হয়েছে। ঈদ ও পূজার টিকিটের জন্য টিকিট কাউন্টারের চারদিকে যখন শত শত মানুষের পদচারণা তখন র্যাব, রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সতর্ক পাহারার মধ্যে টিকিট কাউন্টারের সংরক্ষিত এলাকায় কীভাবে খুন ও টাকা লুট হলো তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বুকিং সহকারী ইস্রাফিল মুন্সী টিকিট বিক্রি করে কাউন্টারের সংরক্ষিত এলাকায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তিনি যেখানে ছিলেন সেখানে বাইরের কারোর প্রবেশ নিষিদ্ধ। তালা লাগানো তিনটি গেট পার হয়ে সেখানে যেতে হয়।
পুলিশের ধারণা, যারা এ হত্যাকাণ্ড ও লুটের সঙ্গে জড়িত তারা রেলওয়েরই লোক এবং নিহত বুকিং সহকারীর পরিচিত। দুর্বৃত্তরা তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে এবং আলমারি খুলে টাকা লুটে নেয়। তারা অপরাধ সংঘটিত করে তিনটি কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে টিকিট কাটার জন্য অপেক্ষমাণ শত শত লোক এবং পুলিশ, র্যাব ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সামনে দিয়ে পালিয়ে যায়। হত্যাকারীরা সম্ভবত রেলওয়ের লোক হওয়ায় কেউই তাদের সন্দেহ করেনি। গোয়েন্দারাও বলেছেন, এ ঘটনায় রেলওয়ের কর্মীরা জড়িত থাকতে পারে।
টিকিট বিক্রির টাকা কোথায় থাকে তা দুর্বৃত্তদের জানার কথা নয়। তাদের পক্ষে তিনটি তালা খুলে সবার চোখের সামনে ভেতরে প্রবেশ ও টাকা নিয়ে বের হওয়াও সম্ভব নয়। দেশের প্রধান রেলস্টেশনের আলো ঝলমলে পরিবেশে হাজার হাজার লোকের উপস্থিতিতে খুন ও টাকা লুটের ঘটনায় দেশের আইনশৃঙ্খলার হতাশাজনক চিত্রই ফুটে উঠেছে। র্যাব, রেল পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রহরার মধ্যে শত শত লোকের উপস্থিতিতে যদি হত্যা ও লুটের ঘটনা ঘটতে পারে তবে দুর্বৃত্তদের কাছে মানুষ কতটা অসহায় তা সহজে অনুমেয়। এ হত্যাকাণ্ড ও লুটের সঙ্গে রেলওয়ের কর্মীরা জড়িত থাকতে পারে বলে ব্যাপকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ঘটনার তদন্তে রেলওয়ের পক্ষ থেকে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেল পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, সন্দেহভাজনদের নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। আমরা মনে করি রেলওয়ের ভাবমূর্তির স্বার্থে এ খুন ও লুটের ঘটনার রহস্য উন্মোচন এবং দোষীদের বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। রেলওয়ের ওপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এ রাষ্ট্রীয় সংস্থাকে দুর্বৃত্তমুক্ত করারও উদ্যোগ নিতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।