স্বাধীনতার ৩৮ বছর পর ২০০৯ সালে ‘‘শিয়ালজানি”প্রথম পরাধীনতার শিকল মুক্ত হয়ে প্রবল বেগে প্রবাহমান স্বকীয়তায় উন্মোচিত হল মোহনগঞ্জবাসীর সম্মুখে৷গতিশীলতায় বহমান ‘‘শিয়ালজানির”রূপে মুগ্ধ হয়ে সকলের চোখে-মুখে বইতে লাগল অনাবিল আনন্দের বন্যা৷কৃতজ্ঞ ভরা দৃষ্টি নিয়ে সবাই বলতে লাগল কাজী আবেদ হোসেনের মত নিঃস্বার্থ মানুষের সহায়তায়ই আমরা সক্ষম হয়েছি ভরাট ,মৃত প্রায়‘‘শিয়ালজানিকে” স্রোতধারায় পুনরুজ্জীবিত করতে৷উৎস মুখ থেকে পুরো ৬কি. মিটারের ‘‘শিয়ালজানি”সগৌরবে কলকল শব্দে ছলছলিয়ে বয়ে চলছে স্বাধীনভাবে৷মাতা ‘‘কংস”ও তার সাথে মিতালী করছে সবটুকু মাধুরী দিয়ে গভীর আবেশে৷সক্ষম খালের বুকে বিচরণ করছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ,জলজ প্রাণী নিজ অধিকারে নিঃসঙ্কোচে৷ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে কলার ভেলা বানিয়ে ভেসে বেড়ায় ‘‘শিয়ালজানির”বুক জুড়ে৷খালের উপর দিগন্ত জুড়ে ডানা মেলে উড়ে বেড়ায় গাঙচিল,শঙ্খচিলও যোগ দেয় তাতে৷মাছের লোভে গাছের ডালে বসে থাকে মাছরাঙ্গা,সাদা বকও থাকে পানিতে দাঁড়িয়ে৷খালের স্বচ্ছ পানিতে মনের সুখে জলকেলী করে বালিহাঁস৷ঘোমটা মাথায় গাঁয়ের বধু কলসে ভরে জল৷কেউ বড়শি দিয়ে মাছ ধরে, কেউ বা ফেলে জাল, কেউ বা আবার গামছায় ছেঁকে ধরে ছোট মাছ৷‘‘শিয়ালজানির”অপরূপ রূপ আর কাজী আবেদ হোসেনের মহতি অবদান অবলোকন করতে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের ছোট ভাই ড.জাফর ইকবাল৷ছুটে আসেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের প্রতিনিধি গণ৷তাদের সম্মানে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷অনুষ্ঠান শেষে নব যৌবনে উন্মোচিত,উদ্ভাসিত ‘‘শিয়ালজানির”উৎস মুখে আয়োজন করা হয় নৌকা বাইচের৷‘‘শিয়ালজানির” পুনরুদ্ধার কার্যক্রম আর কাজী আবেদ হোসেন মিলেমিশে শিল্পীর তুলিতে রংয়ের ছোঁয়ায় আঁকা গ্রাম বাংলার অসাধারন অনবদ্য এক ছবি৷বাস্তবতার নিরিখে কবির কলমের আঁচড়ে , লেখকের গোটা গোটা অক্ষরে ছন্দময় গতিতে নান্দনিক মাত্রা যোগ করে সাবলীল ভাবে ফুটে উঠেছে তার মহান,নিঃস্বার্থ দেশপ্রেমের আদর্শ | কাজী আবেদ হোসেন আর ‘‘শিয়ালজানি”খাল বাংলার ইতিহাসে এক কিংবদন্তী কাব্য৷যা যুগ যুগ ধরে মোহনগঞ্জবাসীর হৃদয়ে অমর গাঁথা হয়ে থাকবে৷এই লেখণীর শেষ পর্ব শেষ করতে বড়ই কষ্ট হচ্ছে,তবুও শেষ করতে হচ্ছে ৷অনেক দিন ধরে লিখছি স্ব-চোখে না দেখলেও নিজ জেলা গোপালগঞ্জে বসে ‘‘শিয়ালজানির”নব্য সৃষ্ট রূপের সাথে আনমনে সখ্যতা গড়ে তুলেছি৷যার জন্য এত সখ্যতা গড়ে উঠল সেই মাঠের নায়ক,বাস্তববাদী নায়ক , দেশপ্রেমিক কাজী আবেদ হোসেনের উদ্দেশ্যে বলছি-
‘‘জীবন-মৃত্যুর মাঝে শিয়ালজানি ,
ছিল তোমার স্বপ্নের তরণী৷
শক্ত হাতে ধরেছিলে হাল,
আশা কভু ছাড়নি৷
বিজয় নিশান উড়িয়ে,
করেছ তুমি জয়,
৯০ফুট চওড়া আর,
৬কি. মি. দীর্ঘ মোহনগঞ্জের
‘‘শিয়ালজানি ”খালটি৷
সত্যিই তুমি মহান তাই তো তুমিই করেছ প্রমান-‘‘ভোগে কোন সুখ নেই,সত্যিই যদি থাকে কোন সুখ থাকে তা কেবলই মাত্র ত্যাগে”৷
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।