এ বিষয়ে শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগ গঠনের আদেশের জন্য এই দিন ঠিক করে দেয়।
এদিন এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিরোধিতা করে ট্রাইব্যুনালে শুনানি করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
“আমরা জানি ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ গণহত্যা শুরু হয়। অথচ প্রসিকিউশন অভিযোগে উল্লেখ করেছে ২৪ মার্চ এটিএম আজহার গণহত্যা চালায়।
একইসঙ্গে ওই বছরের মার্চ মাসে আজহার আলবদরের নেতৃত্ব দিতেন বলা হয়েছে, কিন্তু আলবদর বাহিনী গঠিত হয়েছিল জুন মাসে। ”
এই আইনজীবী দাবি করেন, একাত্তরে আজহারের বয়স ছিল ১৯ বছর। ওই বয়সে তার পক্ষে আলবদরের নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব ছিল না।
শুনানির সময় এটিএম আজহারও ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট শিশির মুহাম্মদ মুনির ও ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকীও এটিএম আজহারের পক্ষে শুনানি করেন।
আজাহারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি শুরু হয় গত ২৯ অগাস্ট। ওইদিন প্রসিকিউটর একেএম সাইফুল ইসলাম অাজহারের বিরুদ্ধে ছয় অভিযোগের বর্ণণা উপস্থাপন করেন। এছাড়া ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন ১৯৭৩’ এর বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী সংঘঠিত অপরাধগুলোর ধরনও ব্যাখ্যা করেন।
এ মামলায় জব্দ তালিকার সাক্ষী ও তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মোট ৩৪ জনকে সাক্ষী করার কথা জানান তিনি।
প্রসিকিউটর এ কে এম সাইফুল ইসলাম ও নূরজাহান বেগম মুক্তা গত ১৮ জুলাই আজহারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন, যার হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনাও রয়েছে।
সেদিন প্রসিকিউশনের ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, রংপুর অঞ্চলে ১ হাজার ২২৫ ব্যক্তিকে হত্যা, চারজনকে হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও নির্যাতন এবং শতশত বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের অভিযোগ আনা হয়েছে জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের বিরুদ্ধে।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, আজহার তখন রংপুরের কারমাইকেল কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র এবং জামায়াতে ইসলামীর তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের রংপুর শাখার সভাপতি। জেলার আলবদর বাহিনীরও নেতৃত্বে ছিলেন তিনি।
আজহার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র ও তা বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকে অপরাধ সংঘটন করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।
সে সময় ৬০ জনেরও বেশি ব্যক্তির বক্তব্য শোনেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তবে প্রতিবেদনে তারা সাক্ষী করেছেন ২৭ জনকে।
গতবছর ২২ অগাস্ট মগবাজারের বাসা থেকে এটিএম আজহারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।