আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াত নেতা আজহারের বিরুদ্ধে ছয় অভিযোগ গঠন

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগসহ ছয়টি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টাইব্যুনাল-১ অভিযোগ গঠন করে এ আদেশ দেন। আগামী ৫ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়েছে।

আদেশে বলা হয়, রাষ্ট্রপক্ষের আনা অভিযোগ অনুসারে, আজহারুল ইসলাম একাত্তরে জামায়াতের তত্কালীন ছাত্রসংগঠন ছাত্রসংঘের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

তিনি বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে আলবদর বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগসহ ছয়টি অভিযোগ গঠন করেন।

ট্রাইব্যুনাল আদেশে বলেন, এজলাসে যখন বিচারকেরা আসন গ্রহণ করেন এবং আসন ছেড়ে চলে যান, তখন এ টি এম আজহারুল ইসলাম আসামির কাঠগড়ায় বসে থাকেন। তিনি দাঁড়িয়ে বিচারকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন না। এ জন্য আগের দিন মামলার কার্যক্রম চলার সময় তাঁকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।

আজহারের বিরুদ্ধে আনা রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ

রাষ্ট্রপক্ষ এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ আনে। আসামির বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ, একাত্তরের ২৪ মার্চ রংপুরের আইনজীবী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মাহফুজ আলীসহ ১১ জনকে অপহরণের পর আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন। পরে তাঁদের ৩ এপ্রিল শহরের দখিগঞ্জ শ্মশানে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। তবে তাঁদের মধ্যে একজন বেঁচে যান। ২৫ মার্চ রাতে ‘অপারেশন সার্চলাইটের’ মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি নিধনের যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছিল, এ ঘটনা তারই অংশ ছিল।

গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ধারাবাহিকতায় একাত্তরের ১৬ এপ্রিল রংপুরের বদরগঞ্জের ধাপপাড়ায় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে এ টি এম আজহারুল ইসলাম এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। ওই ঘটনায় শহীদদের মধ্যে ১৪ জনের নাম-পরিচিতি শনাক্ত করে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এ অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের সাতজন সাক্ষী রয়েছেন।

১৭ এপ্রিল রংপুরের ঝাড়ুয়ার বিল এলাকায় নারকীয় গণহত্যার ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনায় প্রায় এক হাজার ২০০ জন মারা যান, যাঁদের মধ্যে ৩৬৫ জনের নাম-পরিচিতি পাওয়া গেছে। শিশু থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধ, কেউ ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাদ যাননি। হত্যাকাণ্ডের শিকারদের মধ্যে ২০০ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন, যা প্রমাণ করে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসের উদ্দেশে ওই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল।

একাত্তরের ৩০ এপ্রিল রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষক কালাচান রায় ও তাঁর স্ত্রী মঞ্জুশ্রী রায়, সুনীল বরণ চক্রবর্তী, রামকৃষ্ণ অধিকারী ও চিত্তরঞ্জন রায়কে পাকিস্তানি সেনারা দমদমা সেতুর কাছে নিয়ে হত্যা করে। শিক্ষকদের ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় আজহারুল ইসলামকে পাকিস্তানি সেনাদের গাড়ির পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখা গেছে, এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী রয়েছেন।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.