সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাটা জরুরি
গত শনিবার চামড়া শিল্পের সঙ্গে জড়িত তিন সংগঠন চামড়াপণ্য ও জুতা প্রস্তুতকারী সমিতি, বাংলাদেশ ট্যানার অ্যাসোসিয়েশন এবং কাঁচা চামড়া আড়তদারদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এ বছর কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে। নির্ধারিত দাম অনুযায়ী এবার ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, ঢাকার বাইরে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, খাসির লবণযুক্ত চামড়া ঢাকায় প্রতি বর্গফুট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, বকরি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং মহিষ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ বছর চামড়ার মূল্য নির্ধারণের পরেও গত বছর চামড়ার বাজারে যে বিশৃঙ্খলা দেখা গিয়েছিল তা ফিরে আসার শঙ্কায় আছে মানুষ। আন্তর্জাতিক বাজারে মন্দার অজুহাতে গত বছর ফড়িয়ারা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের ঠকিয়ে পানির দামে চামড়া কিনে বেশি দামে ট্যানারি শিল্প মালিকদের কাছে বিক্রি করে। আবার দাম তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণ চামড়া পাচার হয়ে যায়।
এ বছরও এ আশঙ্কা রয়েছে। কারণ এবার ভারতের মুদ্রা রুপির অবমূল্যায়ন হয়েছে শতকরা ২৭ ভাগ। সেজন্য ব্যবসায়ীরা বৈঠকে ঈদের পর টানা দুই মাস সীমান্তে কঠোর নজরদারির আহ্বান জানিয়েছেন। তবে আন্তর্জাতিক বাজারের অবস্থা এখন সার্বিকভাবে ভালো। ইউরোপ মন্দা কাটিয়ে উঠছে, সেখানে চামড়ার চাহিদাও বাড়ছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চামড়া শিল্পের সঙ্গে জড়িত সংগঠনগুলোকে ডেকে চামড়ার যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করতে বলে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দাম নির্ধারণ না হলে কিংবা কৃত্রিম উপায়ে দাম কমিয়ে নির্ধারণ করলে কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে বাণিজ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন। এভাবে যদি অন্য মন্ত্রীরা নিজেদের মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সংগঠন বা ব্যক্তিবর্গের অনিয়ম বা অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতেন তাহলে দেশের চেহারা পাল্টে যেত। তবে এ কথাও ঠিক, অনেক সময় মন্ত্রীর হুশিয়ারিকেও পাত্তা দেওয়া হয় না। হুশিয়ারি মাফিক ব্যবস্থা নিলে সবাই সতর্ক হয়ে যেত।
প্রতিবছর দেশে ১ কোটি গরু এবং ১ কোটি ২০ লাখ ছাগল জবাই হয়। এর মধ্যে শতকরা ৫০ ভাগ হয় কোরবানির সময়। এ সময় চামড়ার মূল্য অন্যান্য সময়ের চেয়ে প্রতি বর্গফুটে ১০ থেকে ২০ টাকা কম থাকে। এ বছর চামড়ার বাজার ঘিরে দুই হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ইতোমধ্যে ৪৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করেছে।
যদিও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন ঋণের এ পরিমাণ যথেষ্ট নয়। এবারের সার্বিক পরিস্থিতি ভালোর আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় ৮৫ লাখ ডলারের বেশি চামড়া রফতানি হয়েছে। বাংলাদেশের চামড়ার বড় ক্রেতা হচ্ছে চীন এবং ইতালি।
প্রায় প্রতিবছর চামড়ার দাম নিয়ে যে অনিশ্চয়তা দেখা যায় তার একটি স্থায়ী সমাধান হওয়া জরুরি। এই শিল্প এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে বলে চামড়া ব্যবসায়ীরা মনে করছেন।
তবে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা গেলে সঙ্কট কাটিয়ে চামড়া শিল্প আবার দাঁড়াতে পারবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এবার চামড়ার দাম নির্ধারণের বিষয়টি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু তা যেন কথার কথা না থেকে বাস্তবায়ন হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। - See more at: Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।