আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন পতিতা ও একটি নাম: জীবনের অন্তরালে.........

আমি তোমার পথ চেয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকবো, দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে আমার পায়ে শিকড় গজাবে, আমার শাখা-প্রশাখা গজাবে, আমি বৃক্ষমানব হয়ে যাবো তবুও আমি অধৈর্য্য হবো না... ... ...

সোহরাওয়ার্দি উদ্যান। সময় প্রায় সন্ধ্যা। হাতে নষ্ট ঘড়ি! এক কিশোরী টাইপ মেয়ে। লাল শাড়ি পড়ে বউ সেজেছে! হেটে হেটে ঠিক আমার সামনে এসে থামলো। মুখে মৃদু হাসি দিয়ে বলল, "ভাইজান লাগবো না'কি?" আমি অপ্রস্তুতভাবে, " না না, কিছু লাগবে না আমার।

" "না লাগলে এইহানে আইছেন ক্যান?" আমি লজ্জায় হিসু করার উপক্রম! ঝটপট করে একটা সিগারেট ধরালাম। মেয়েটি মুখ ভেংচি কেটে চলে গেল। ভাবটা এমন যে আমি তার কোন ক্ষতি করে ফেলেছি! সিগারেট টান দিতেই আমার বন্ধু হাজির। এখানেই থাকে। মানুষের বিষ্টা খায়! এখানে বিষ্টার অভাব হয়না।

ভাবছেন আমার বন্ধু বিষ্টা খায়! খেতেই পারে। কারণ সে একজন নেড়ি কুত্তা। গায়ের লোম পড়ে গেছে। আমি আদর করে ডাকি "অমি"। এসেই ঘ্যাউ ঘ্যাউ চো চো.... করে সম্বোধন করতে লাগলো।

কুত্তার ডাকে কিশোরী পিছনে ফিরে তাকলো। আমি ইশারায় তাকে ডাকলাম। কিশোরীর মুখে হাসি। হয়তো ভাবছে কাস্টমার জুটে গেছে! অতি দ্রুত কাছে এসে বলল, "ভাইজান কি বলবেন বলেন?" "তোমার নাম কী?" "নাম দিয়া কি করবেন, আপনার দরকার কাম, কাম করবেন টেকা দিবেন। " "দরকার আছে।

আগে নাম বলো। নাইলে কাম করব না" "আমার নাম সুইটি। " পঞ্চাশ টাকার একটা নোট বের করে বললাম, "নাও এইটা রাখো। " "আমি এমনি এমনি কারো কাছ থেকে টেকা নেই না। কাম করি টেকা নেই।

" "এইগুলো তোমার কাছে কাজ!" "হুম কামই তো..... কাম করি টেকা লই। " "আচ্ছা ঠিক আছে একটা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে ৫০০ টাকা পাবে। " "পশনো কন। " "নারী মানুষ কত প্রকারের?" "২ প্রকারের। " "কি কি?" "একজনের পতিতা আর অনেকের পতিতা।

" "হয়্যাট ! সব নারী তোমার কাছে পতিতা! এক জনের পতিতা মানে?" "বউ। বউ হলো একজনের পতিতা। সে শোয়ামীর সাথে কাম করে বিনিময়ে থাকা খাওয়া পায়!" "চুপ.......চুপ। আর একটাও কথা বলবি না। " "টেকা দেন।

" "কিসের টাকা?" "উত্তরের টেকা। উত্তর দিসি টেকা দিবেন। ব্যাস। " টাকা দিয়ে ঝামেলা বিদায় করলাম। অমি'র গায়ে বিকট গন্ধ।

মনে হয় মরা গরুর নারিভুরি খাইছে। বমি আসার অবস্থা। জিগাইলাম, "কিরে মরা গরুর গোসত খাইছোস?" "ঘ্যাউ ঘ্যাউ ঘা ঘা" (মানে না) "তাইলে ডাস্টবিনের পঁচা খাবার খাইছোস?" "ঘ্যাউ ঘ্যাউ চু চু" (মানে হ্যা) অমি আমার কথাবার্তা বোঝে। আমি তার কথা কিছু কিছু বুঝতে পারি। অনেক দিনের বন্ধুত্ব তো।

"এই চা সিগরেট চা সিগরেট" করতে করতে এক ছেলে যাইতেছে। বললাম, "২জনের ২কাপ চা দে। " "২জন কৈ, আমি তো শুধু আফনারে দেখতাছি। " "আমার পাশে একজন জীব বসে আছে। " "চা বেচুম না।

" "ক্যান বেচবি না?" "নেড়ি কুত্তার জন্যে কোন কাপ নাই। " "চা তোর বেচতে হবে। " বেচারা দিলো এক দৌড়। অমিও ওর পিছন পিছন দৌড়ানি দিলো। বেচারা ঠাশ্ করে আছাড় খেল।

উঠে ফ্লাস্ক রেখেই ঝাইরা দৌড়! অনেক্ষণ আড্ডা মেরে বাসায় ফিরলাম। ছোট বোন উত্তেজিত ভাবে কাছে আসলো। সে অতি উত্তেজিত। জন্মের পর বাচ্চারা ওয়া ওয়া করে কান্দে। ও হাত পা নাড়াচ্ছিল আর খিল খিল করে হাসছিল।

ভাবটা এমন যে সে পৃথিবীতে এসে মহাকিছু করে ফেলেছে! পারে তো ঝাড়া দিয়া দাড়ায় যায় এরপর সামনে যারেই পায় ঠাশ ঠাশ চড় বসায় দেয়! ভয়ংকর ব্যপার হয়ে যেত না! "ভাইয়া ভাইয়া তোর জন্য একটা সুখবর আছে। " "শুনবো না। " "ক্যান শুনবি না, শুনতেই হবে। " "আমি জানি। " "জানলে বলতো কী?" "আম্মু আমার জন্য পাত্রী নির্বাচন করতে সক্ষম হয়েছেন।

এই তো!" "হুম.....। " ওর মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। সবাই সারপ্রাইজ দিতে চায়। সারপ্রাইজ দিতে না পারলে মন খারাপ করে। জিগাইলাম, "মেয়ের নাম কিরে?" "নাম সুইটি দেখতেও সুইটি।

" "এই বিয়ে হবে না। " "ক্যান কি সমস্যা?" "সমস্যা আছে সুইটি নামের কোন মেয়ে আমার বউ হতে পারে না। " "ক্যানো সুইটি নামের কোন মেয়ের সাথে তোর কোন ঝামেলা আছে না'কি?" সুইটি যে একজন পতিতার নাম তা ওর কাছে কিভাবে বলি! পতিতার নাম আমি কিভাবে জানি তা নিশ্চয় অনেক বড় প্রশ্ন হয়ে যাবে। মান ইজ্জত নিয়া টানাটানি পড়ে যাবে। এই সমাজ আমার নেগেটিভ ভাবতে ভালবাসে! ছোটবোনের কাছে লজ্জা করতে হয়।

লজ্জা করতে হয়না বউ এর কাছে। তাও আবার লাইট বন্ধ করা সাপেক্ষে! পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠলাম। এক বড়লোক বন্ধুর সাথে দেখা করতে হবে। বারিধারায় এক বিশাল বাড়ির মালিক সে। সকাল সকাল কাজে বের হয় সে।

ফেরে রাত্রি ১০টায়! এই জন্যই ওর এত উন্নতি। কবি বলেছেন "পরিশ্রমই সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। " সে পেশায় একজন ভিক্ষুক। মতিঝিল এলাকায় ভিক্ষা করে। ওর বাসা থেকে একটা দুর হয়ে যায় বটে কিন্তু এখানে ভিক্ষা বেশি পাওয়া যায়।

ওর ২ বউ। ২ বউ এর জন্য ২টা বাড়ি। গুলিস্তানে আরেকটা বাড়ি। ওর সাথে অনেক্ষণ কথাবার্তা বললাম। চা খেলাম।

ও যা বলল তার সারমর্ম হল, " পতিতারা কখনও আসল নাম বলেন না। তুই যে পতিতার সাথে কথা বলেছিস তার আসল নাম অবশ্যই সুইটি না। " সাড়াদিন হাটাহাটি করে দুপুরে "বিসমিল্লাহ" হোটেল থেকে লাঞ্চটা সেরে নিলাম। বিকেল সময়টা পথশিশুদের সাথে কাটাবো ভাবলাম। বাচ্চাদের সাথে খেললে মন ভাল থাকে।

বাচ্চাদের মনে সবচেয়ে বেশি ফ্লাকচুয়েশন। এরপর মেয়েদের মনে! মন বদলাতে মুরগীর ডিম পাড়ার চেয়ে কম সময় লাগে! পথশিশুরাও এখন অনেক ব্যস্ত। সবাই টোকাই হয়ে গেছে। একহাত দিয়ে প্যান্ট ধরে রাখে নয়তো খুলে গিয়ে কেলেঙ্কারী অবস্থা হয়ে যেতে পারে। কিছু আছে ভিক্ষাবৃত্তিতে।

এইটাই সবচেয়ে সোজা। অর্থনীতির ভাষায় মানি সার্কুকেশনের সবচেয়ে ক্ষুদ্র পথ হচ্ছে ভিক্ষাবৃত্তি। একজন ভিক্ষুক দেখি বলতেছে, "আল্লা নবিজীর নাম ১০টা টেহা দিয়া যান" এই গানটা একটু মডিফাইড হইছে। বিবর্তনের ফল। ডারউইন বেঁচে থাকলে বড়ই খুশি হতো! গানটা আগে ছিল, "আল্লা নবিজীর নাম ১ টা টেহা দিয়া যান" কাছে যেতেই গান গাওয়া বন্ধ করে দিল।

আমার সামনে গান গাইতে লজ্জা পাচ্ছে। মুখে দাড়ি মাথায় টুপি। এতে ভিক্ষা করতে সুবিধা হয়। জিগাইলাম, "ওই মিয়া ১০ টাকা ভিক্ষা চাও ক্যান! টাকার কি কোন দাম নাই?" "কি করবো বাবাজী, বাড়ি ভাড়া বাইরা গেছে, চাইলের দাম বেশি। " "বাচ্চা কাচ্চা কয়জন?" "আশটো জন.....।

" "ভিক্ষা কইরা এত বাচ্চা ক্যান নিছো?" "কি করবো বাবাজী খোদার ইচ্ছা। " "খোদার ইচ্ছা ঠিক আছে। টাকা দিয়া খালি চালই কিনো না, অন্য কিছুও কিনো। " "আপনার বউ এর নাম কি?" "সুইটি বেগম। ক্যান নাম দিয়া কি অইবো!" ভিক্ষুকের বউ এর নাম সুইটি, পতিতার নাম সুইটি হলে আমার বউ এর নাম সুইটি হতেই পারে না।

নাম পরিবর্তন না করলে বিবাহ নয়। সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে বন্ধু অমির সাথে আড্ডা মারতে মারতে কখন যে রাত ১২ টা বেজে গেল বুঝতেই পারি নাই! হাটছি একা। কাটাবন মোড়। কি মনে করে যেন একটু দাড়ালাম। হঠাৎ পো পো করতে করতে পুলিশের একটা গাড়ি থামলো।

এস.আই টাইপ মনে হল বলল, "গাড়িতে উঠুন"। "ক্যান স্যার আমার কি অপরাধ?" "ডলা খেলেই বুঝতে পারবে। " রাত ১টা। আমি বসে আছি থানার গারদখানায়। দেখলাম কয়েকজন পকেটমার টাইপ তরুন।

কুকুকের বাচ্চার পড়ে রয়েছে। মনে হয় কেবলই ডলা খাইছে। আমার ডাক পড়ল ওসি সাহেবের কক্ষে। ওসি সাহেবের হাতে সিগারেট। রক্তাক্ত চোখ।

কুৎসিত চেহারা। জিজ্ঞাসা করলো, "তোর নাম কী?" "ঘাউ ঘাউ কাউ কাউ। " "তোর নাম জিজ্ঞাসা করেছি। " "ঘাউ ঘাউ কাউ কাউ। " ওসি সাহেব কষে একটা চড় বসিয়ে দিয়ে বলল, "হারামীর বাচ্চা তোর নাম বল।

" "ঘাউ ঘাউ কাউ কাউ তুমি গু খাও। " ওসি সাহেব আরেকটা চড় বসালেন। চোখে মুখে অন্ধকার দেখতেছি। পুলিশদের মনে হয় চড় মাড়ার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়! পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি চড় মাড়ে পুলিশরা। আর সবচেয়ে বেশি চড় খায় নিরীহ মানুষ! যতবেশি নিরীহ হবেন ততবেশি চড় খাওয়ার সম্ভাবনা! ওসি সাহেব এস.আই কে ডাকলো।

ডেকে আচ্ছা ঝাড়ি দিতে লাগলো। বলতে বলতে লাগলো, "কই থেকে পাগল ছাগল ধইরা নিয়া আসেন! ব্যাটারে বিদায় করেন। " দু:খ প্রকাশ না করে আমাকে ছেড়ে দেয়া হলো। দু:খ প্রকাশ ব্যাপারটা পুলিশের সাথে যায় না। আমি বারান্দা পর্যন্ত গেলাম।

এত রাত্রে কোথায় যাব। ভাবলাম তারচেয়ে বরং রাতটা থানায়ই থেকে যাই। নিরীহদের সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা থানা আর সন্ত্রাসীদের জন্য মসজিদ! ৭টা খুন করেও তাবলিগে গেলে একদম সেইফ! থানার বারান্দার একপাশে বসে রইরাম। গার্ডের পুলিশ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পাহাড়া দিচ্ছে! সরকারী চাকরীর এই এক সুবিধা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ডিউটি করা যায়। সকালে বাসায় ফিরলাম।

মায়ের বকাবকি খেতে হলো না। বরং সে খুশি! কারণ মাঝে মাঝে ৩-৪ দিন পর পর বাসায় ফিরি। সে তুলনায় আজকে অনেক ভাল। হাসিমুখে বললো, "শোন আজকে কন্যাপক্ষের বাড়িতে যাব। রেডি থাকিস।

" "আমি বিয়া করুম না। " "ক্যান বিয়া করবি না। " "আমার লইজ্জা লাগে। " "ইশ আমার লাজুক রে....... পার্কে সাড়াদিন বসে থাকতে লজ্জা লাগে না!" আমরা দুপুরের আগেই রওনা দিলাম। কণ্যাপক্ষের বাড়িতে দুপুরে খেতে হবে।

মেয়ে অনার্স সেকেণ্ড ইয়ারে পড়ে। বড়ই সৌন্দর্য্য কণ্যার। কন্যার পিতা শুধালো, "তোমার নাম কি বাবা?" "ঘাউ ঘাউ কাউ কাউ। " "মানে?" "মানে আপনি আমার নাম তো জানেন। " "তুমি কোথায় জব কর?" "ঘাউ ঘাউ তুমি গু খাও।

" "ছি:...... কি বলছো!" একজন প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ীর ছেলে এমন পাগল হবে তা সে মেনে নিতে পারছে না। মা কি যেন চাইনিজ ভাষা টাষার কথা বলে বেটাকে শান্ত করলো। শান্ত হতে বাধ্য কারণ টাকার লোভ। বিশাল ব্যবসায়ীর একমাত্র ছেলের শশুর হওয়াটা সৌভাগ্যের ব্যপার। বের হলাম।

মাকে বিদায় করে দিয়ে আমি হাটতে থাকলাম। ভাবলাম এই সুযোগে এই এলাকার কুকুরগুলোকে দেখে যাই। শত হলেও আমার ফ্রেণ্ডের ফ্রেণ্ড ওরা। কিছুদুর যেতেই গাজাখোর টাইপ এক ছেলে কুকুরের মত হাপাতে হাপাতে সামনে এসে পড়ল। এসেই ২ হাতে পা ধরে ফেলল, "ভাইয়া....... আপনিই পারেন আমাকে বাঁচাতে।

" "আরে আরে কি করছেন! পা ছাড়ুন। আমি আপনাকে কিভাবে বাচাবো?" "আপনি আমার প্রেমিকারে বিয়া করবেন না প্লিজ। " "আচ্ছা করবো না। এবার শান্তিতে ঘুমান গিয়া। " বিকেল বেলা।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বন্ধু অমির সাথে। বিশাল আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। গাছের ফাকা দিয়ে আকাশে নীল দেখার চেষ্টা। হঠাত ফোনে ঘ্যাউ ঘ্যাউ শব্দ।

ফোনের রিংটোন কুকুরের ডাক। ওপাশে এক পুরুষ কণ্ঠ বলে উঠলো -হ্যালো মাহির সাহেব বলছেন? -হ্যা মাহির বলছি। আপনি কে বলছেন? -আমাকে আপনি চিনবেন না। -তাহলে ফোন রেখে দেই। -আপনি যে মেয়েটা দেখতে গিয়েছিলেন আমি তার প্রেমিক।

-ওহ্ আপনার সাথে রাস্তায় দেখা হলো আপনি কি সেই? -রাস্তায় কার সাথে দেখা হয়েছিল? -তার আর এক প্রেমিকের সাথে। -বলেন কি! বেচারা ফোন রেখে দিল। নারী জাতির বিশ্বাসঘাতকতায় হয়তো তার সরল মন কষ্ট পেয়েছে। এই ধরণের আরো কয়েকটি ফোন আমার কাছে এসেছিল। সবাই মোটামুটি হতাশা বুকে নিয়ে ফোন রেখেছিলো।

সুন্দরী মেয়েদের একাধিক সম্পর্ক না থাকলে সে আর কিসের সুন্দরী! যত বেশি সুন্দরী তত বেশি চাহিদা তত বেশি বয়ফ্রেণ্ড! বিয়ের আগে ছেলে মেয়ের মধ্যে বোঝাপড়া হওয়াটা এযুগের চাহিদা। ব্যপারটা ভালই লাগে। কোন দেশে না'কি পাত্র পাত্রীকে দেখবে একদম নির্জন কক্ষে। পাত্রী যদি পাত্রকে সন্তুষ্ট করতে পারে তবে সে সামনের দড়জা দিয়ে বের হবে। মানে বিয়ে হবে।

নয়তো পিছনের দরজা! কেমন মাদার-ফাকার দেশ বলেন! স্যরি বেফাস কথা বলে ফেললাম। নিজগুনে ক্ষমা না করলেও কোন ক্ষতি নাই! ধানমণ্ডিতে ভূত নামে একটা রেষ্টুরেন্ট আছে। খুব সুন্দর ভৌতিক পরিবেশ এখানে। "আগুন খা কাচা খা" ওদের ডাইলগ। আমার সাথে আমার মা।

আর মেয়ের সাথে তার বাবা আর ছোট বোন। ছোট বোন মিষ্টি মিষ্টি হাসে। ছোটরা বুঝে কম হাসে বেশি। আর বড়রা বুঝে বেশি হাসে কম। খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষ হলো।

এবার আমাদের নির্জন টেবিলে কথপকথনের পালা। দু'জন সামনা সামনি। একটা নির্জন রুম হলে ভাল হতো! জিগাইলাম- -আপনার নাম কি? -আমার নাম ফারিহা জাহান সুইটি। -বাহ্ কি মিষ্টি নাম.... ! -আপনার কি কোন বয়ফ্রেণ্ড ছিল? -নাহ্ আমার কোন বয়ফ্রেণ্ড নেই। -কেন নাই জানতে পারি।

-গালফ্রেণ্ড বয়ফ্রেণ্ড সম্পর্কে আমি বিশ্বাসী না। বাহ্ কি সুন্দর কথা! আসলে প্রত্যেকটা মেয়েকেই সুন্দর করে মিথ্যা বলার অসীম ক্ষমতা দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে। বিয়ের কার্ড ছাপা হয়েছে। আমার একান্ত বন্ধুদের জন্য ২টা কার্ড নিলাম। প্রথম বন্ধু অমি, দ্বিতীয় বন্ধু ভিক্ষুক কাশেম।

ওসি সাহেবকে এক কার্ড দেয়া দরকার। থানায় গিয়ে জানতে পারলাম ওসি সাহেব কয়েকদিন ধরে অফিসে আসেন না। সাড়াদিন শুধু ঘাউ ঘাউ কাউ কাউ করতে থাকে। পরিবার তার চিকিৎসা করাচ্ছেন। আজই বিয়ে।

এই জন্য আমাকে চোখে চোখে রাখা হয়েছে। শুনেছি মা আমার পিছনে গোয়েন্দা লাগিয়ে দিয়েছেন। যাতে করে আমি পালিয়ে বাঁচতে না পারি! আমার উপর গোয়েন্দা নজরদাড়ি। ভাবতেই ভাল লাগছে। নিজেকে ভি.আই.পি মনে হচ্ছে।

হয়তো বিয়ে বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমাকে খোজাখুজি করার করা টিম গঠন করা হয়েছে। সাড়া শহরে গরু খোজার মত খোজা হচ্ছে। আমি হাটছি অচেনা গন্তব্যে। এক সময় ক্লান্ত হয়ে রাস্তায় বসে পড়লাম।

কখন যেন ঘুমিয়ে পড়লাম। শান্তির ঘুম........। ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার মাথার নিচে একটা বালিশ। উঠে আবারও হাটা শুরু করলাম। শক্তি শেষ হয়ে যায় রাস্তা শেষ হয় না।

রাস্তার কোন শেষ নেই, রাস্তার দৈর্ঘ্য অসীম.............

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.