একটি জাতীয় দৈনিকের ২১ অক্টোবর সংখ্যায় প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত প্রধান খবরের শিরোনাম ছিল_ ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় পেল বাংলাদেশ। ওই খবরের মূল কথা ছিল এ রকম : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিশেষ রপ্তানি সুবিধা বা জিএসপি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানপত্র জমা দিতে ১৫ নভেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান (ইউএসটিআর)। এ তথ্য জানিয়ে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে মার্কিন দূতাবাস। মার্কিন দূতাবাসের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রস্তাবিত জিএসপি অ্যাকশন প্ল্যান ২০১৩-এর আলোকে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানপত্র প্রণয়নের লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা আহ্বানের জন্য তাগিদ দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) চলতি বছরের নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে জিএসপি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার সংক্রান্ত শুনানির আয়োজন করতে যাচ্ছে।
সে লক্ষ্যে আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানপত্র জমা দিতে হবে। মার্কিন দূতাবাসের চিঠিতে বলা হয়েছে, জিএসপি সুবিধার স্থগিতাদেশ যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে সে দেশের সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। তবে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অ্যাকশন প্ল্যান সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলো কিনা তা দেখতে চান তারা। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাকশন প্ল্যানে ১৬টি শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে। জিএসপি ফিরে পেতে হলে এসব শর্তের বাস্তবায়নের অগ্রগতিসহ শ্রমমান নিশ্চিত করার বিষয়টি ইউএসটিআরকে জানাতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
অ্যাকশন প্ল্যানের শর্তগুলোর মধ্যে অধিকাংশই বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। সূত্র জানায়, ১৬টি শর্তের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন, শ্রমিক নেতা বাবুল ও কল্পনা আক্তারের মামলা প্রত্যাহার, ইপিজেড এলাকায় দুটি এনজিও বিসিডবি্লউএস ও সেইফের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়াসহ মোট তিনটি শর্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
বাকি শর্তগুলো পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বেশির ভাগই আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে আছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়। বিশেষ করে শ্রমিক নেতা আমিনুল হত্যাকাণ্ডের মতো মর্মান্তিক ও নৃশংস ঘটনা তদন্তে এখন পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। যুক্তরাষ্ট্রের হারানো জিএসপি সুবিধা পুনরুদ্ধার ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে এ সুবিধা অব্যাহতভাবে ভোগ করার জন্য শ্রম অধিকার রক্ষায় মনোযোগী হয়েছে বলে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষ বেপজা জানায়।
অ্যাকশন প্ল্যানের বাকি শর্তগুলো পূরণ করার দায়িত্ব পুরোটাই বাংলাদেশের। বিশেষ করে কলকারখানা পরিদর্শক কার্যালয়ে ৮০০ পরিদর্শক নিয়োগ করে অধিদফতরে রূপান্তরের শর্ত দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ শর্ত পূরণে জনবল কাঠামো অনুমোদনের জন্য ফাইল পাঠানো হয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে। সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরই পরিদর্শনের কাজ শুরু হবে বলে শ্রম মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। সূত্র আরও জানায়, শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে ২০০ শ্রম পরিদর্শক নিয়োগ দেওয়ার শর্ত রয়েছে।
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রয়েছে মাত্র ৩৫ জন। অন্য প্রকল্পের আওতায় ২৩ পরিদর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পরিদর্শকের সংখ্যা ৫০ জন থেকে বাড়িয়ে ৩১০ জনে উন্নীত করতে সুপারিশ রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। ফায়ার সার্ভিসের এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানায়।
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শ্রম অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না মর্মে আমেরিকার ফেডারেশন অব লেবার অ্যান্ড কংগ্রেস অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্গানাইজেশন বা এএফএল-সিআইও ২০০৭ সালে ইউনাইটেড স্টেট ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ বা ইউএসটিআর এ অভিযোগ উত্থাপন করে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল করার আবেদন জানায়।
সে পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭, ২০০৯, ২০১২ ও ২০১৩ সালে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছরের ২৭ জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে প্রদত্ত জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে। শ্রমিক কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চলতি বছরের ৮ জুলাই জেনেভায় বাংলাদেশ ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন (ইইউ) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মধ্যে একটি 'সাসটেইনেবল কম্প্যাক্ট গৃহীত হয়। এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেও গত ১৯ জুলাই জিএসপি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে' বাংলাদেশ অ্যাকশন প্ল্যান ২০১৩ ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে পত্রিকায় প্রকাশিত ভিন্ন একটি খবর 'শ্রমমান দেখতে আইএলও প্রতিনিধি এখন ঢাকায়' শীর্ষক প্রতিবেদনটিও প্রণিধানযোগ্য।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও শ্রমমান উন্নয়নে গৃহীত কর্মসূচির উদ্বোধনীতে অংশ নিতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) একটি প্রতিনিধি দল এখন ঢাকায় এসেছে উপমহাপরিচালক গিলবার্ট ফো মুন হুংবোর নেতৃত্বে। প্রতিনিধি দলটি তিন সদস্যবিশিষ্ট।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আইএলওর উদ্যোগে গত মে মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ও সমঝোতা এবং পরে জেনেভা থেকে ঘোষিত 'সাসটেইনেবিলিটি কমপ্যাক্ট প্রোগ্রাম' বাস্তবায়নে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। শ্রম পরিস্থিতির উন্নয়ন, বিশেষ করে সাভারের রানা প্লাজায় ধস ও তাজরিন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগি্নকাণ্ড প্রতিরোধ করতে এসব উদ্যোগ।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইএলওর ওইসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে সক্রিয় সহযোগিতা করছে।
সঙ্গে আছে কানাডা, ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডস। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিশ্ব সম্প্রদায় সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকারও বেশ তৎপর। এ লক্ষ্যে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম বড় কর্মসূচি হচ্ছে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস সরকার এবং ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অব ইউকের সহযোগিতায় শ্রম মন্ত্রণালয় গৃহীত কর্মসূচি। এর সমন্বয়কের ভূমিকায় থাকছে আইএলও।
শীঘ্রই ২৪.৫ মিলিয়ন ডলারের পাঁচ বছর মেয়াদি ওই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হচ্ছে। কার্যসূচিতে পাঁচটি অংশ থাকছে। কারখানার অগি্ন নিরাপত্তা, ভবন নিরাপত্তা এবং বৈদ্যুতিক নিরাপত্তার সঙ্গে শ্রম বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের ক্ষমতা বৃদ্ধির নিরাপত্তাও রয়েছে। আছে স্টেকহোল্ডারদের সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়টিও। তা ছাড়া শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ যাতায়াত, অবস্থান এবং তাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের বিষয়গুলোও থাকছে।
কিন্তু লাখ লাখ গার্মেন্ট শ্রমিকের নূ্যনতম মজুরি প্রদান সম্পর্কে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। কথা ছিল, তা আসন্ন নভেম্বরের মধ্যে মজুরি বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী প্রদান করা হবে। কিন্তু কার্যত দেখা যাচ্ছে, মজুরি বোর্ডের খসড়া সুপারিশ জমা দেওয়ার পর তার ওপর জনমত সংগ্রহ করা, শ্রম মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনা, আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই (ভেটিং) শেষ করে চূড়ান্ত সুপারিশ প্রণয়ন পর্যন্ত যে সুদীর্ঘ প্রক্রিয়া তা অনুসরণ করে সুপারিশমালা ঘোষণা করতে নভেম্বর পার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। জানা গেছে, গত বছর নভেম্বরে তাজরিন ফ্যাশনসে অগি্নকাণ্ডে শতাধিক এবং গত এপ্রিল মাসে রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক শ্রমিকের প্রাণহানির ফলে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে বিরাজমান কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের স্বল্প মজুরির বিষয়টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সামনে চলে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক জেলা জজ অমূল্য কুমার রায়কে প্রধান করে শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণে ছয় সদস্যবিশিষ্ট বোর্ড গঠন করেছে শ্রম মন্ত্রণালয়।
বোর্ডকে ছয় মাসের মধ্যে শ্রমিকদের নূ্যনতম বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করতে বলা হয়। এ পর্যন্ত মোট পাঁচটি সভা করেছে বোর্ড। চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিতে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় পাবে বোর্ড। এর আগে সর্বশেষ ২০১০ সালে ২৭ জুলাই পোশাক শ্রমিকদের নূ্যনতম মজুরি নির্ধারিত হয়েছিল মাসিক মাত্র তিন হাজার টাকা। এই নূ্যনতম বেতন হার নূ্যনতম গ্রহণযোগ্যতাও পায়নি।
চলমান অক্টোবর মাসেই এই বেতন কাঠামোর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে এবং নভেম্বর থেকে নতুন বেতন কাঠামো চালু হওয়ার প্রয়োজন থাকলেও তা বাস্তবে সম্ভব হচ্ছে না।
গত সেপ্টেম্বরে শ্রমিকদের ক্রমবর্ধমান দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান মালিক ও শ্রমিক নেতারাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানরা যৌথসভা করেন। ওই বৈঠক থেকে নভেম্বরের মধ্যে নূ্যনতম বেতন কাঠামো ঘোষণা করার জন্য মজুরি বোর্ডকে অনুরোধ জানিয়ে প্রস্তাব গৃহীত হয়। নভেম্বরে তা করা হবে কি না সে সম্পর্কে জানতে চাইলে শ্রমসচিব মিখাইল সিপার বলেন, মজুরি বোর্ডের বৈঠকের পর যেসব নিয়মিত কাজকর্ম রয়েছে তাতে আরও ২০-২৫ দিন সময় লেগে যাবে। আর মজুরি বোর্ডের আরও কিছু সময় লাগবে তা প্রকাশ করতে।
এসব বিবেচনায় নিলে ডিসেম্বর নাগাদ হয়তো চূড়ান্ত সুপারিশমালা পাওয়া যাবে। তার পর শুরু হতে পারে তার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া। এতেও মালিকরা তাদের স্বভাবসুলভ কায়দায় ওই সুপারিশমালা কার্যকর করতে সময় নিতে পারেন। ফলে নিশ্চিতভাবেই নভেম্বর থেকে নতুন করে গার্মেন্ট শিল্প সেক্টরে শ্রমিকদের প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হওয়ার সমূহ আশঙ্কা বিদ্যমান।
এ গেল বেতন কাঠামো সংক্রান্ত পরিস্থিতির কথা।
এ ছাড়া কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ, শিল্পায়ন ও আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতিযোগিতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে টিকে থাকার জন্য জাতীয় পোশাক ও স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা নীতিমালা ২০১৩ বিগত ২১ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। এ নীতিমালার অধীনে একটি কমিশন গঠন করা হবে। নীতিমালায় সরকার, মালিকপক্ষ, নিয়োগকর্তার ভূমিকা উল্লেখ করা হয়েছে। শ্রমিকদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ চিহ্নিত করে তা নিরাপদ করতে সচেতনতা, মৌলিক প্রশিক্ষণ, রাসায়নিক দ্রব্য সম্পর্কে সচেতনতা জাতীয় মানোন্নয়ন, নারী ও শিশুদের সার্বিক নিরাপত্তায় বিশেষ নজর দেওয়া। নিরাপত্তার যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে ওই নীতিমালায়।
অপরদিকে গার্মেন্ট শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে আইএলও ১৯৪ কোটি টাকা দেবে বলে ঘোষণা করেছে। কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত গুরুত্ববহ, বিশেষত তাজরিন ফ্যাশনস ও রানা প্লাজার মর্মান্তিক ঘটনাবলী থেকে প্রকৃত শিক্ষা নিতে চাইলে। কিন্তু আজতক তার জন্য কোনো ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের কোনো অর্থবহ সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগের কোনো খবর নজরে পড়েনি। এক্ষেত্রে অর্থাভাব কোনো ব্যাপার নয়, মূল ব্যাপারটি হলো সরকারি অবহেলা, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা ও মালিকদের সীমাহীন অর্থলিপ্সা। অথচ এ সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান না করলে পোশাক শ্রমিকদের ভাগ্যে হয়তো আরও বড় বিপর্যয় নেমে আসবে।
পোশাক শিল্পের স্বার্থে এ মুহূর্তে প্রয়োজন দায়িত্বশীল ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন। তেমন সংগঠনই পারে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করে ন্যায্য দাবিগুলো আদায় করে নিতে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও ভয়াবহ শূন্যতা বিদ্যমান। অপরপক্ষে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় আহত-নিহতদের বা তাদের পরিবারবর্গের মধ্যে অনেকেই এযাবৎকাল ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি বলে জানা গেছে। প্রথম প্রথম এ ব্যাপারে সরকার ও অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানই অনেক আকর্ষণীয় প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনেকেরই নজর কেড়েছে।
কিন্তু দু-তিন মাসের মধ্যেই ঘটনা নিষ্প্রভ হয়ে আসায় বেশির ভাগ প্রতিশ্রুতিই যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। তাই প্রশ্ন জাগে, মানুষ বাঁচাতে, শ্রমিক ও শিল্প বাঁচাতে সবার ঘুম কি ভাঙবে?
লেখক : রাজনীতিক।
ই-মেইল :raneshmaitra@gmail.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।