ভবনে ফাটল ধরা পড়ায় বন্দরনগরী চট্টগ্রামে চারটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে তিনটির নাম জানা গেছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলো হচ্ছে- ম্যানস অ্যাপারেলস, ডে ফ্যাশন এবং ডে অ্যাপারেলস। চট্টগ্রামের আতরের ডিপোতে একটি ছয়তলা ভবনে ওই কারখানাগুলো ছিল।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বহুতলা ভবনটির অন্তত দুটি কলামে ফাটল আবিষ্কৃত হয়।
এ ছাড়া পুরো ভবনটির ভিত্তি ছিল অত্যন্ত দুর্বল। কলকারখানা পরিদর্শকরা যখন পরিদর্শনে যান তখন তাদের কাছে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হয়। তারা আমাদের কাছে প্রতিবেদন দেওয়ার পর এ সংক্রান্ত সরকারের প্যানেল গত ৫ এপ্রিল পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে গত মাসে একই কারণে ঢাকার দুটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানায় শ্রম মন্ত্রণালয়। মিরপুর-১২ এ মোল্লা বিল্ডিং নামে ওই ভবনটিকেও ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করে কলকারখানা পরিদর্শন পরিদফতরের কর্মকর্তারা।
মোল্লা বিল্ডিংয়ে সফট টেঙ্ এবং ডায়মন্ড সুয়েটার নামে দুটি পোশাক কারখানায় প্রায় চার হাজার শ্রমিক কাজ করত বলে জানা গেছে। শ্রম মন্ত্রণালয় আরও জানায়, গত বছর রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে এমন আরও ৯৪৩টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে সরকার। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩ হাজার ১৯৭টি ভবন পরিদর্শন করে কলকারখানা পরিদর্শন পরিদফতর ও ফায়ার সার্ভিস এই ভবনগুলোকে চিহ্নিত করে। এর মধ্যে কলকারখানা পরিদর্শন পরিদফতর ২ হাজার ৪০০ ভবন পরিদর্শন করে ৭০০ ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং ফায়ার সার্ভিস আরও ৭৯৭টি ভবন পরিদর্শন করে ২৪৩ ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রেখেছে।
তালিকাভুক্ত ভবনগুলো সরকারের গভীর পর্যবেক্ষণে রয়েছে দাবি করে শ্রম সচিব জানান, ওইসব ভবনে ঝুঁকির মাত্রা কম থাকায় সেগুলো এখনো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
তবে ভবনগুলোতে থাকা পোশাক কারখানা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য মালিকদের বলা হয়েছে। এদিকে ভবনে ফাটল ধরা পড়ায় বাংলাদেশে পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও গুরুত্বসহকারে প্রচার করা হচ্ছে। বুধবার আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। এ ছাড়া হংকংভিত্তিক বার্তা সংস্থা 'দ্য স্ট্যান্ডার্ড' এটিকে বুধবারের ব্রেকিং নিউজে স্থান দেয়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে ওই ভবনে থাকা ৫টি গার্মেন্ট কারখানার এক হাজার ১৩৫ শ্রমিক নিহত হয়।
রানা প্লাজা ধসের পর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো খুঁজে বের করার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।