উপরে যা লিখছি, এটাই শিরোনাম। আপাতত আর কিছু বলার নাই! গ্রাম-বাংলায় একটা কথার প্রচলন আছে – “আদেখলে এক ঘটি পেয়ে, ফকির মরলো পানি খেয়ে”। কথাটা বলতে বাধ্য হলাম সম্প্রতি উদ্ভোধন হওয়া হাতির ঝিল প্রকল্প নিয়ে সবার মাতামাতি দেখে। বর্তমান ঢাকায় অবস্থানকারী যতজন মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন তাদের অধিকাংশের প্রফাইল ঘাটলেই দেখা যাবে, হাতির ঝিলকে জড়িয়ে ধরে অথবা হাতির ঝিল এর উপরে বা আশেপাশে দাঁড়িয়ে অন্যকাউকে জড়িয়ে ধরে তোলা দু’একটি ছবি সবাই আপলোড দিয়েছেন। তাতেও আমার কোন সমস্যা নেই, আর থাকার কথাও না।
এমনকি এই বিষয়ে কথা বলার কারনে চাইলে আমাকে বলতেই পারেন, “আরে ভাই আমার প্রফাইল, আমার ফেসবুক, আমার ইচ্ছা, যা ইচ্ছা তাই আপলোড দিমু; আপনার বাপের কি?”
আমার কথা হলো - সুন্দর জায়গা দেখলেই সবাই একসাথে ছুটে যান তা দেখতে, ফটোসেশন করতে, আড্ডা মারতে, শ্যুটিং করতে, প্রেম করতে, মাদকাসক্তরা যায় সুন্দর পরিবেশে নেশা করতে, পকেটমার-ছিনতাইকারী যায় ধান্দা করতে, কেউ কেউ আবার যায় স্টান্ট দেখাতে (উল্লেখ্য, গতকাল নিজের বাহাদুরি দেখাতে গিয়ে বাইকসহ পালটি খেয়ে আবার দুজন আহতও হয়েছে) ইত্যাদি ইত্যাদি। সব মানলাম, এত সুন্দর একটা প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের প্রায়-ব্যর্থ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতাও স্বীকার করছি। কিন্তু, এই সুন্দর জায়গাগুলো সুন্দর রাখার জন্য কে কি করছেন? হাতির ঝিল দেখতে গিয়ে কয়জন নিজেকে নিজে বলেছেন, যে এই শহরের একজন মানুষ হয়ে এই জায়গার সৌন্দর্য নষ্ট করায় কোন ভুমিকা রাখবেন না? কতজনের মনে হয়েছে এরকম সুন্দর জায়গাগুলোর সৌন্দর্য রক্ষা করার দায়িত্ব্য আপনারও? আপনাদের কতজনের মনে হয়েছে নতুন ঝকঝকা আলো-ঝিলমিল এই জায়গাটার মত সুন্দর পুরো শহরটাও হতে পারে?
পারে। এই দেশে সব সম্ভব। তবে সেটা শুধুমাত্র সরকার, বিরোধীদল, কিংবা বিদেশী দাতাদের ইচ্ছার উপরই নির্ভর করে না।
আমার আপনার আমাদের সবার ইচ্ছার উপরও অনেকখানি নির্ভরশীল। জানি, আমি আপনি ইচ্ছা করলেই রাতারাতি সব করে ফেলতে পারবো না; কিন্তু আমরা চাইলে, আমরা কথা বলতে শুরু করলে, আমরা দাবি করতে শুরু করলে, নিজের জায়গা থেকে নিজের যতটুকু সম্ভব ততটুকু ঠিকভাবে করতে পারলেই এই দেশ একদিন নিশ্চয় বদলে যাবে।
নিজে বদলান, নিজের চারপাশটা বদলান, দেশ বদলাবেই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।