ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে রাজধানীর প্রধান নদী বুড়িগঙ্গা। প্রতিদিন টনকে টন আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এ নদীতে। রাজধানীর দেড় কোটি মানুষের মলমূত্র ও কলকারখানার বর্জ্য বুড়িগঙ্গায় পতিত হওয়ায় এ নদীর পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বহু আগেই। পরিবেশ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর গৃহস্থালি ও কলকারখানায় সাত হাজার টনেরও বেশি বর্জ্যের ৬৩ ভাগ বিভিন্ন খাল দিয়ে বুড়িগঙ্গায় পতিত হয়। ঢাকা সিটি করপোরেশনের একাংশের ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এ নদীকে। নদী তীর দখল করে রাজনৈতিক দলের অফিস তৈরি করা হচ্ছে। ট্রাক স্ট্যান্ড, টেম্পোস্ট্যান্ড, দোকানপাটও তৈরি করা হচ্ছে নদী তীর ভরাট করে। বুড়িগঙ্গার অস্তিত্ব বিনাশী নানা অপপ্রয়াস চলছে সরকার তথা প্রশাসনের নাকের ডগায়। দেশের বৃহত্তম স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ঢাকা সিটি করপোরেশন তো বুড়িগঙ্গা বিনাশে ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। রাজধানীর পরিবেশ সমুন্নত রাখা ঢাকা সিটি করপোরেশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কিন্তু তাদের দ্বারা বুড়িগঙ্গা নদীর যে ক্ষতি হচ্ছে তা ক্ষমার অযোগ্য বললেও বাড়িয়ে বলা হবে না। বুড়িগঙ্গা নদী তীরেই সেই মোগল আমলে ঢাকাকে রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল। ঢাকা আজ বিশ্বের মেগা সিটিগুলোর একটি। বুড়িগঙ্গা না থাকলে ঢাকায় রাজধানী স্থাপন করা হতো কিনা এটি একটি প্রশ্ন। একইভাবে আমাদের কাণ্ডজ্ঞানহীনতায় রাজধানীর এ বৃহত্তম নদীটি অস্তিত্ব হারালে ঢাকা বাসযোগ্য নগরী থাকবে কিনা সে সংশয়ও থেকে যায়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, বুড়িগঙ্গার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা যাদের দায়িত্ব তারাই নদীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। জনগণের ট্যাঙ্রে টাকায় যাদের পোষা হয় দায়িত্ব পালনে তাদের অবহেলার কারণেই বুড়িগঙ্গার তীর ভরাট হয়ে যাচ্ছে। জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবার ব্যর্থতাও এ ক্ষেত্রে দায়ী। রাজধানীতে জীবনধারণের পরিবেশ বজায় রাখতে বুড়িগঙ্গাসহ রাজধানীর সব নদী ও জলাশয়কে টিকিয়ে রাখতে হবে। নদী দূষণ ও ভরাটের দুষ্ট চক্রকে প্রতিহত করতে হবে। এ ব্যাপারে গড়ে তুলতে হবে জনসচেতনতা। বুড়িগঙ্গা বাঁচাতে গড়ে
তুলতে হবে সামাজিক আন্দোলন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।