টানা চার দিনের হরতালের পর আবারও পুরোনো চেহারায় ফিরে এসেছে ঢাকা। যানজটে নাকাল নগরবাসী। নিয়মিত কাজের পাশাপাশি হরতালের কারণে আটকে থাকা কাজ শেষ করতে বেরিয়ে পড়েছে সবাই। তাই রাজপথে গাড়ির সারি, ফুটপাতেও ব্যস্ত মানুষের ছুটে চলা।
জনপরিবহনে প্রচণ্ড ভিড়।
তার পরও গন্তব্যে পৌঁছতে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সবাই। ভিড় ঠেলে গাড়িতে ওঠার চেষ্টা। সকালের দিকে রাস্তার অবস্থা সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও দুপুরের পর থেকে যেন থমকে যায় পুরো শহর। প্রতিটি সড়কে যানবাহনের লাইন।
বিকেলে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে কথা হলো সাইদুর রহমানের সঙ্গে।
বায়িং হাউজে কাজ করেন। তিনি বলেন, বনানী থেকে কারওয়ান বাজারে আসতে প্রায় দুই ঘণ্টা লেগেছে। মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সাবরিনা চৌধুরী কারওয়ান বাজারের সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে এসেছিলেন জন্ম নিবন্ধনের সার্টিফিকেট তুলতে। কাজ শেষে বাসায় ফিরে যাওয়ার অপেক্ষা করছিলেন এক ঘণ্টারও বেশি। কোনো অটোরিকশা বা রিকশা পাচ্ছেন না তিনি।
আজমেরী গ্লোরি পরিবহনের সুপারভাইজার শরিফুল ইসলামের সঙ্গে বিকেল চারটার দিকে কথা হচ্ছিল পল্টনে। তিনি প্রথম আলো ডটকমকে জানান, সকাল ১০টায় চন্দ্রা থেকে ছেড়ে আসা তাঁদের বাস তখনও গুলিস্তান পৌঁছতে পারেনি। অন্য সময় এই বাস আসতে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা সময় লাগে।
প্রেসক্লাবের সামনে দেখা হলো আজাদ হোসেন-স্বপ্না দম্পতির সঙ্গে। দীর্ঘ সময় বাসের অপেক্ষায় থেকে রাস্তার পাশে বসে পড়েছেন তাঁরা।
স্বপ্না বেগম প্রথম আলো ডটকমকে জানান, যাত্রী বোঝাই থাকার কারণে এক ঘণ্টা চেষ্টা করেও বাসে উঠতে পারছেন না।
‘জ্যামের মধ্যে আটকাইয়া থাকলেই লস’
অন্যদিকে রিকশাচালকেরাও যেদিকে যানজট সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে, কেবল সেদিকেই যেতে চাচ্ছেন। জিরো পয়েন্টে কথা হলো রিকশাচালক লালন মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকার যে কয়ডা খ্যাপ পাইছি সবগুলাই ফিরাইয়া দিছি। জ্যামের মধ্যে আটকাইয়া থাকলেই লস।
’
প্রায় প্রতিটি এলাকায় গাড়ির চাপ বেশি হওয়ায় থেমে থেমেই চলছে যানবাহন। দুপুরে বনানী থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা একরকম থেমেই ছিল যান চলাচল। ফার্মগেট, সোনারগাঁও হোটেল মোড়, বনানী, মহাখালী, গুলশান-১, গুলশান-২, মগবাজার, শুক্রাবাদ মোড়সহ মিরপুর রোড, বেগম রোকেয়া সরণি, শ্যামলী, গুলিস্তানসহ অধিকাংশ মোড়েই যানজটে আটকে আছে মানুষ। গুলিস্তানে আওয়ামী লীগ অফিসে মনোনয়নপত্র কেনার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের জমায়েত এবং মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আনা গাড়ির কারণে যানজট প্রকট আকারে রয়েছে।
হরতালের কারণে সপ্তাহের প্রথম চার কর্মদিবস কাজ করতে না পারা এবং পরবর্তী সময় হরতালের মতো আরও কর্মসূচি আসতে পারে এই ধারনায় অনেক মানুষই বাসা থেকে বেরিয়ে এসেছেন জরুরি প্রয়োজনীয় কাজ সারতে।
তবে সবার সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, যানজটের কথা মাথায় নিয়ে বের হলেও ককটেল-বোমা বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটতে পারে, এ ধরনের আশঙ্কা নিয়েও অনেকে বেরিয়েছেন। আজ জামায়াতের বিক্ষোভ কর্মসূচি উপলক্ষে কয়েকটি এলাকায় গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও সবার এই আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।