আজ ভয়াল ১৫ নভেম্বর। বিভীষিকাময় এক রাত। উপকূলবাসীর কাছে এর নাম সর্বগ্রাসী রাক্ষুসের মরণছোবল। ৬ বছর আগে এ রাতে প্রলয়ঙ্ককারী সিডর আঘাত হানে উপকূলীয় জনপদে। ঘণ্টায় ২৪০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার গতির বাতাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় বাগেরহাট, বরগুনা, কলাপাড়া, ঝালকাঠি ও সাতক্ষীরার বিস্তীর্ণ এলাকা।
প্রাণ হারায় কয়েক হাজার মানুষ। থমকে যায় চার লাখ মানুষের জীবনযাত্রা। উপকূলবাসী আজও ভয়াল সেই দিনের দগদগে ক্ষত হয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। ছয় বছর পার হলেও দুর্গতদের পুর্নঃবাসন ও পুনর্গঠন সম্ভব হয়নি। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের সাউথখালীতে শুধু ৭ শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর প্রকাশ হলেও বেসরকারি মতে এর সংখ্যা ছিল দ্বিগুণ।
সিডরের ৬ বছর পার হলেও দুর্গতদের পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন সম্ভব হয়নি। এখনো টেকসই বেড়িবাঁধ তৈরি হয়নি। মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। উত্তর সাউথখালী গ্রামের সিডরে আহত হালিমশাহ, আনোয়ার হোসেন বলেন, এখন আর বিচ্ছিন্নভাবে সাহায্য না দিয়ে আমাগো মতো খেটে খাওয়া মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিলে বাঁচতে পারব। বরগুনা প্রতিনিধি জানান, প্রলয়ঙ্করী সিডরের বরগুনায় প্রাণ হারায় প্রায় দেড় হাজার মানুষ।
যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, কৃষি ও মৎস্য ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়। ভেঙে যায় কয়েকশ মিটার বেড়িবাঁধ। কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, ছয় বছর পরও ক্ষতিগ্রস্ত চার সহস্রাধিক পরিবার পুনর্বাসিত হয়নি। এসব পরিবার এখনো চরম ঝুঁকিতে বসবাস করছে। কবে এদের পুনর্বাসিত করা হবে তা সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলও জানে না।
আজও নিখোঁজের তালিকায় রয়েছে ৭ জেলে ও এক শিশু। সম্পূর্ণভাবে ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে ১২ হাজার ৯০০ পরিবার। অনেকে হয়েছে নিঃস্ব। ধার-দেনার বোঝা বইয়ে বেড়াচ্ছে অনেকে।
ঝালকাঠি প্রতিনিধি জানান, সিডরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা রাজাপুরের বিষখালীর তীরবর্তী পালট-বড়ইয়া।
এই এলাকার অনেক পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন। অনেকে ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি জমিয়েছেন। সর্বনাশা সেই সিডরের কথা আজও মনে উঠলে আতঙ্কে কেঁপে ওঠেন এই জনপদের মানুষ। সিডর পরবর্তী অনেক সাহায্যই যথাযথ পাননি এখানকার ক্ষতিগ্রস্তরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।