মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস।
১. ফেলানী, ভারতীয় সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলছিল যার লাশ; আমরা তার জন্য কিছুই করতে পারিনি। তার পরিবারের জন্যও না- তার মায়ের জন্য না, ছোট ভাই-বোনদের জন্য না।
এমনকি শেষ পর্যন্ত বিচারটাও পাইনি। হায় ফেলানী, ফেলানীদের জীবন এমনই!
২. ‘আদুরী’, ১১ বছরের শিশু পরিচারিকা। যাকে আমরা চিনতামও না, চিনলে হয়তো মানুষ হিসেবে গণ্য করতাম না। এরা মানুষ না, এই কথিত সভ্যতা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রগতি এদের মানুষ বলে স্বীকার করে না, যদিও এ দেশের মিডিয়াগুলো ক’দিন আদুরীর খবর ফলাও প্রচার করেছে। শিশু পরিচারিকা নির্যাতনের আরেক নাম ‘আদুরী’।
২৩-০৯-২০১৩ সোমবার বিকেলে রাজধানীর ডিওএইচএস বারিধারার একটি ডাস্টবিনে আবর্জনার স্তূপ থেকে পুলিশ যাকে উদ্ধার করেছে আধমরা অবস্থায়। যাকে তার গৃহকর্ত্রী ও দুই মেয়ে দীর্ঘ দু’মাস পাশবিক নির্যাতনের পর মৃত মনে করে ডাস্টবিনে ফেলে যায়! হ্যাঁ, আদুরীদের জীবন এমনই হয়!!
৩. বাংলাদেশ, ভারত, আফ্রিকা, ফিলিস্তিনসহ সারা বিশ্বের এমন অসংখ্য, অগণিত নাম না জানা- আর জানা নামগুলো বলে শেষ করা যাবে না এমন- মেয়েশিশু; যারা নব্বইয়ের তসলিমা আর চলতি দশকের মালালার সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে; যাদের শুধু বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাই শত তসলিমা-মালালার সম্মিলিত সাহস-দুঃসাহসকে হার মানায়; যাদের বর্তমান পণ্যে রূপান্তরিত ‘শিক্ষা’র অধিকার দূরের কথা, পেটের জ্বালা নিবারণ হয় না দিনের পর দিন; যাদের ‘ষষ্ঠ’ চাহিদা পূরণ দূরে থাক- (যে চাহিদা জাগ্রত হয় পঞ্চচাহিদা পূরণের পর, যে চাহিদা পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে কথিত শিক্ষা-উচ্চশিক্ষা-বিত্ত-বৈভবের স্পর্শে, যে চাহিদার জন্য তসলিমার আমরণ সংগ্রাম)- পঞ্চচাহিদারই জোগান নেই; স্বীকৃতি দূরে থাক, বেঁচে থাকারই যাদের অধিকার নেই; সেই সব মৃত ও অর্ধমৃত মেয়েশিশুদের...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।