একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশের পূর্ণাঙ্গ রায় লেখা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তিনি প্রথম আলোকে এসব কথা জানান।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত ১৭ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে কাদের মোল্লাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের প্রধান সমন্বয়কারী এম কে রহমান গতকাল বলেন, ‘বিচারপতিরা কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ রায় লেখা শেষ করেছেন। আশা করি, আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষে দু-এক দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হবে।
’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের মোল্লার আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর ৩০ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করা হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। এরপর তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শাহবাগে গড়ে ওঠে গণজাগরণ মঞ্চ। পরে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সমান সুযোগ রেখে ১৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) সংশোধন বিল, ২০১৩ জাতীয় সংসদে পাস হয়। আগের আইনে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে সরকারের আপিলের সুযোগ ছিল না।
কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে ৩ মার্চ আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আর সাজা থেকে অব্যাহতি চেয়ে পরদিন আপিল করেন কাদের মোল্লা। আপিল বিভাগে ১ এপ্রিল আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়।
আপিলের শুনানি শেষে ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ (৪: ১) মতের ভিত্তিতে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। কাদের মোল্লাকে দোষী সাব্যস্ত করার ব্যাপারে পাঁচ বিচারপতি একমত হলেও মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে এক বিচারপতি ভিন্নমত দেন।
সেদিন রায়ের আদেশের অংশটুকু ঘোষণা করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ রায় লিখেছেন তিনজন বিচারপতি।
সাঈদীর দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি চলছে: জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিলের ওপর শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তার জেরা উপস্থাপন অব্যাহত রেখেছে আসামিপক্ষ। গতকাল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ১৭তম দিনের মতো শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানিতে সাঈদীর পক্ষে আইনজীবী এস এম শাহজাহান রাষ্ট্রপক্ষের ২৮তম ও শেষ সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের জেরা উপস্থাপন করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে সাঈদীর বিরুদ্ধে আনা ২০টি অভিযোগের মধ্যে আটটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। তবে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় অন্য অভিযোগগুলোতে আলাদা করে দণ্ড দেওয়া হয়নি। ২৮ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ আপিল করে।
২৪ সেপ্টেম্বর আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।