আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাদের মোল্লা নাকি “কসাই কাদের” নয়!! (একটি কপি-পেস্ট পোস্ট)

বলব, পরে- এখন নয়।

এই লেখাটা আমার নিজের লেখা নয়। পিনাকী ভট্টাচার্যের একটা লেখা পেলাম অনলাইনে। তিনি নিজেও পুরোটা লেখেন নি, মোজাম্মেল এইচ খান নামের এক ব্যক্তির (কাদের মোল্লার সহপাঠী) লেখা থেকে তুলে এনেছেন। কসাই মোল্লা আর কাদের মোল্লা এক ব্যক্তি নয় এমন একটা ধুঁয়া তোলার চেষ্টা হচ্ছে মাঝে মাঝেই।

আমি অবাক হচ্ছি এই দেখে যে, কসাই কাদের আর কাদের মোল্লা যদি এক ব্যক্তি না হবেন তো এত সামান্য বিষয় জামাতের ধুরন্ধর আইনজ্ঞরা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলো কেন? দু জন ব্যক্তি ভিন্ন এটা প্রমাণ করা কি খুব কঠিন বিষয়? তারা শুধু মোল্লার পরিবারের বক্তব্য উদ্ধৃত করেছে, প্রমাণের কোন চেষ্টা করে নি। কারণ তাতে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসার সম্ভবনা ছিল। ---------------------------------------------------------------------------- কাদের মোল্লা নাকি “কসাই কাদের” নয়!! পিনাকী ভট্টাচার্য কাদের মোল্লা কসাই কাদের নয়- এই প্রচারণা কাদের মোল্লার বিচার চলাকালীন সময় থেকে চালানো হচ্ছে। ঠিক যেমন ভাবে প্রচার চালানো হয়েছিলো দেলোয়ার হোসেন সাঈদি “দেইল্লা রাজাকার” নয়। এই প্রসঙ্গে কাদের মোল্লার সহপাঠী বর্তমানে ক্যানাডা প্রবাসী মোজাম্মেল এইচ খান দুইটি লেখা লেখেন।

প্রথম টি ডেইলি স্টারে ৯ ই ফেব্রুয়ারী “অ্যা শকিং ভারডিক্ট” শিরোনামে,যেখানে তিনি বলেন, আব্দুল কাদের মোল্লা এবং আলি আহসান মুজাহিদ দুজনেই তাঁর সহপাঠী ছিলেন। এর আগেও যখন আলি আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ বাংলাদেশের মন্ত্রী হন তখন তিনি ডেইলি স্টার ২০০৪ সালের ৪ ঠা মার্চ একটি ছোট লেখা লেখেন, । সেই সময়ে সঙ্গত কারণেই যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রসঙ্গ আসার কথা নয়। রাজাকার সহপাঠীর গাড়িতে স্বাধীন দেশের পতাকা দেখে ক্ষোভের সঙ্গে মোজাম্মেল এইচ খান লিখেছিলেন, “I had two classmates in my hometown college; we were activist of the same student party (no Islamic Chattra Shangha at that time). Over the years, they changed their political belief and in 1971, we were on the opposite sides. As leaders of the infamous Badar-Bahini, they assisted the occupation forces in carrying out genocide on our people. One of them became a cabinet minister during the last BNP-led alliance government and flew the hard-earned green-red flag of my country whose creation he opposed tooth and nail. Had I been in Bangladesh, I would probably be bound by protocol to salute him. Would I be able to do that? This query is because he was instrumental in torturing and killing our people, while I was risking my life to save them at the most critical juncture of our nation.” এর পরে ২২ শে সেপ্টেম্বর দৈনিক জনকণ্ঠে তিনি আরেকটা লেখা লেখেন “কাদের মোল্লাকে নিয়ে আমার দেশ পত্রিকার আষাঢ়ে কাহিনী” শিরোনামে । সেই রচনায় তিনি লেখেন ,” কাদের মোল্লা হলেন আমাদের রাজেন্দ্র কলেজের ১৯৬৪-১৯৬৬ এইচএসসি ব্যাচের সবচেয়ে পরিচিত মুখ এবং তিনি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমধিক পরিচিত ব্যক্তি, তা সে যে কারণেই হোক না কেন।

এমন কি তিনি আমাদের সে সময়ের আর এক সহপাঠী বেগম জিয়ার বিগত শাসনামালের মন্ত্রী আলী আহসান মুজাহিদকেও পরিচিতির দিক দিয়ে ছাড়িয়ে গেছেন, যদিও মুজাহিদও একইভাবে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলার অপেক্ষায় রয়েছেন, যদি না সুপ্রীমকোর্ট তার দ-কে উল্টে না দেয়। কাদের মোল্লা শুধু আমার সহপাঠীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন আমার হোমমেট। আমরা দু’ডজনের মতো ছাত্র একটি স্টুডেন্টস হোমে দু’বছর একসঙ্গে বাস করেছি, খেয়েছি এবং নামাজ আদায় করেছি (এটা ছিল সুপারের আদেশে বাধ্যতামূলক)। ১৯৬৬ সালে আমি ঢাকায় চলে আসি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য। কাদেরের এইচএসসি ফলাফল ভাল না হওয়ায় সে ওই কলেজেই পাস কোর্সে বিএসসি পড়া শুরু করে।

“ জনকণ্ঠে প্রকাশিত লেখার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি দ্বিতীয়বার তার সম্পর্কে লিখতাম না যদি না অলিউল্লাহ নোমান নামে আমার দেশ পত্রিকার এক বিশেষ প্রতিনিধির লেখা,যিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত হিসেবে উল্লেখ করেছেন,ওই পত্রিকার ২০ সেপ্টেম্বরের সংস্করণের কাদের মোল্লাকে নিয়ে লেখা একটি নিবন্ধ আমার চোখে না পড়ত। পাঠক অচিরেই বুঝতে পারবেন এটাকে নিবন্ধ না বলে আষাঢ়ে কাহিনী বলাই ঠিক হবে। একটা কত বড় মিথ্যা যে কোন এক দৈনিক সংবাদপত্র গর্বের সঙ্গে প্রকাশ করতে পারে সেটা আমার এ নিবন্ধ না পড়লে কেউ সম্ভবত বিশ্বাস করতে পারবে না। প্রকৃতপক্ষে মিথ্যা প্রচারই ওই পত্রিকার সবচেয়ে বড় শক্তি। কোন সভ্য এবং গণতান্ত্রিক সমাজে এ ধরনের পত্রিকার অবস্থিতির কথা চিন্তাই করা যায় না।

নাইন ইলেভেনের পরে যদি এ ধরনের কোন সংবাদপত্র উত্তর আমেরিকায় থাকত তাহলে বিশেষ করে মুসলমানদের পশ্চিমা দুনিয়ায় বাস করা দুষ্কর ও দুঃসহ হয়ে যেত। আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে মিথ্যা কত প্রকার এবং কি কি? আমার উত্তর হবে মিথ্যা তিন প্রকার : মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা এবং আমার দেশ। “ জামতের প্রচারণা এবং আমার দেশের লেখা থেকে তিনি বলেন,”‘আদালতের বাইরে চাউড় রয়েছে আবদুল কাদের মোল্লা রাজাকার নন, ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে আবদুল কাদের মোল্লা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন সমাপ্ত করেছেন। তাঁর ডিপার্টমেন্টে তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় এত বড় কসাই রাজাকার হয়ে থাকলে ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাপটের সঙ্গে অধ্যয়ন সমাপ্ত করার কথা নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শেষে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত উদয়ন স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। কসাই রাজাকার হয়ে থাকলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের পর পর তখনই উদয়ন স্কুলে চাকরি পাওয়ারও কথা নয়। তখন শেখ মুজিবুর রহমানের দাপুটে শাসন চলছিল। এত বড় কসাই রাজাকার শেখ মুজিবের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম তারপর উদয়ন স্কুলে চাকরি প্রাপ্তি! বিষয়টা যেন কেমন লাগে।

“ তারপর উনি আসল ঘটনা তুলে ধরেন। “আবদুল কাদের মোল্লার স্ত্রীর একটি স্টেটমেন্ট অনুযায়ী শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে চাকরিও দিয়েছিলেন। সেটা সত্য হয়ে থাকলে আর আবদুল কাদের মোল্লা কসাই রাজাকার হলে শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে চাকরি দিলেন কেমন করে! রাজাকার হলে তো অন্তত তাঁকে চাকরি দেয়ার কথা নয়। এছাড়া ১৯৭৭ সালে আবদুল কাদের মোল্লা রাইফেলস্ স্কুল এ্যান্ড কলেজে চাকরি করেন এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। তখন পর্যন্ত কিন্তু আবদুল কাদের মোল্লা এত বড় কসাই রাজাকার ছিলেন বলে কেউ শোনেননি।

’ ১৯ সেপ্টেম্বর তারিখে কাদের মোল্লার পরিবার দেশবাসীর উদ্দেশে এক আবেদন করেছে। দেখা যাক, ওই আবেদনে তার শিক্ষা এবং অতীত সম্পর্কে কি বলা হয়েছে। ‘তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হন ১৯৬৯ সালে। স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে শেখ মুজিবর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের পরে আবদুল কাদের মোল্লা গ্রামের বাড়িতে চলে যান এবং যুদ্ধের পুরো সময় তিনি গ্রামেই অবস্থান করেন। ১৯৭২ সালে তিনি পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসে শহীদুল্লাহ হলে অবস্থান করে অধ্যয়ন অব্যাহত রাখেন ও ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।

১৯৭৯ সালে জনাব আবদুল কাদের মোল্লা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। ’ পাঠক লক্ষ্য করুন, কাদেরের পরিবারের বিবরণে তিনি ১৯৭২ সালে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে ‘তাঁর ডিপার্টমেন্টে তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন’ এ ধরনের কোন দাবি নেই; বরঞ্চ তিনি যে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন সে কথাই বলা হয়েছে। এমন কি তিনি যে কোন ডিগ্রী পেয়েছেন সেটার কোন উল্লেখ নেই। তেমনিভাবে ‘যুদ্ধের পুরো সময় তিনি গ্রামেই অবস্থান করেন’ সে কথা বলা হয়েছে, কিন্তু তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন সেটার কোন উল্লেখ নেই। তেমনিভাবে ‘শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে চাকরিও দিয়েছিলেন’ সেটাও কাদেরের পরিবার উল্লেখ করেনি।

কাদেরের পরিবার কিছু তথ্য গোপন করেছে টাইম লাইন মেলানোর জন্য। এইচএসসি ফলাফলে কাদের গড়পড়তা ছাত্রের থেকে নিচে ছিল যার ফলে সরাসরি সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ার যোগ্যতা অর্জন করেনি। যার ফলে সে রাজেন্দ্র কলেজেই বিএসসি পড়ে (১৯৬৬-১৯৬৮) এবং ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাস কোর্সে এমএসসিতে ভর্তি হয় যেটা তার পরিবারের দেয়া সময়ের সঙ্গে সম্পূর্ণ মিলে যাচ্ছে, যদিও তার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী সে এসএসসি পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। অথচ কাদের আমাদের সঙ্গে এসএসসি পাস করেছে ১৯৬৬ সালে। তাহলে এর মাঝে দুই বছরের বেশি সময় তিনি কি করেছেন? তার পরিবার বলেছে সে স্বাধীনতার পর পরই ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসে এবং ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত সেখানে অধ্যয়ন করে।

এ বক্তব্যের প্রথম অংশটুকু সত্য নয় এবং যে কোন পাঠকই বুঝতে পারবেন দুই বছরের এমএসসি ডিগ্রীর জন্য ৮ বছর (১৯৬৯-১৯৭১, ১৯৭২-১৯৭৭) বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করার হিসাব মেলানো যায় না। আমাদের ব্যাচের সবাই ১৯৭২ সালের মধ্যেই এমএ বা এমএসসি ডিগ্রী শেষ করে। প্রকৃত ঘটনা হলো। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের পর কাদের আত্মগোপন করে এবং ১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমান যখন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন তখন সে আত্মগোপনতা থেকে বেরিয়ে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় ভর্তি হয় এবং ১৯৭৭ অবধি সে ছাত্র ছিল। কাদেরের রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে আমার দেশ প্রতিনিধির কল্পনাটা এ রকম: ‘আবদুল কাদের মোল্লা ছাত্রজীবনে দীর্ঘ সময় প্রগতির দাবিদার ছাত্র ইউনিয়ন করেছেন।

“ আসল তথ্য হলো আমাদের সময়ে (১৯৬৪-১৯৬৬) রাজেন্দ্র কলেজে সরকার সমর্থিত এনএসএফ ছাড়া আরও দুটি ছাত্র সংগঠন ছিল। সবচেয়ে শক্তিশালীটি ছিল প্রগ্রেসিভ স্টুডেন্ট ফ্রন্ট, পিএসএফ (ছদ্মাবরণে ছাত্র ইউনিয়ন) এবং ছাত্রলীগ। আমাদের ধারণা ছিল পিএসএফ কমিউনিস্টপন্থী এবং ছাত্রলীগ কমিউনিস্টবিরোধী। প্রচ- কমিউনিস্টবিরোধী হিসেবে কাদের (এবং মুজাহিদ) ছাত্রলীগের সমর্থক ছিল। আমিও একই ছাত্র সংগঠনের সমর্থক হওয়াতে আমাদের মাঝে আরও একটু বেশি সখ্য ছিল।

১৯৬৭ সালে (আমি তখন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র) মুজাহিদের (ওর বাবা মাওলানা আবদুল আলী ছিলেন ফরিদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি) নেতৃত্বে রাজন্দ্র কলেজে ইসলামী ছাত্রসংঘের পত্তন হয় এবং কাদের এবং আমাদের দু’জনেরই আর এক হোমমেট বন্ধু হাফিজ (রাজবাড়ী কলেজের অধ্যাপক) তখন ইসলামী ছাত্রসংঘে যোগদান করে এবং দু’জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ছাত্র রাজনীতি বজায় রাখে। আমাদের তখনকার সহপাঠীদের মধ্যে দু’জন জাতীয়ভাবে পরিচিত। তাদের একজন হলেন বাংলা একাডেমী পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী এবং অন্যজন হলেন বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. সিএস করিম। তাদের কাছে আমার দেয়া তথ্য যাচাই করা যেতে পারে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তাদের দলের ধারাবাহিকতায় কাদের এবং মুজাহিদ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিপরীত দিকে অবস্থান নেয় এবং পরবর্তীতে আলবদর বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হলে দু’জনেই সেটার নেতৃত্ব দেয়।

১৬ ডিসেম্বরের পর দু’জনেই আত্মগোপনে যায় এবং ১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমান যখন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন তখন আত্মগোপন থেকে বেরিয়ে আসে। ১৯৭৩ সালের প্রথমার্ধে আমি যখন উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে আসি তখন জানতাম না কাদের কোথায় আছে। ১৯৭৯ সালে আমি দেশে বেড়াতে গেলে একদিন যখন ঢাকার মগবাজারের রাস্তা দিয়ে হাঁটছি তখন পেছন থেকে একজন আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘তুই কি মোজাম্মেল?আমি কাদের। ’ আমার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল,‘কাদের,তুই বেঁচে আছিস?’ কাদেরের উত্তর ছিল,‘হ্যাঁ, আমি ভালভাবে বেঁচে আছি এবং এখন আমি দৈনিক সংগ্রামের নির্বাহী সম্পাদক। তোর “জয় বাংলা” এখন এদেশ থেকে নির্বাসিত; ফিরে এসেছে আমাদের জিন্দাবাদ এবং এটা এখনপ্রচণ্ড ভাবে জাগ্রত।

’ যেহেতু কাদের সত্য কথাই বলেছিল, সেহেতু আমি ওর কথার কোন জবাব দিতে পারিনি। কয়েক সপ্তাহ পরে আমি যখন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাই তখন সংবাদপত্রে পড়লাম প্রেসক্লাবে একটি বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিল কাদের মোল্লা;একেই বলে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! অবশ্য স্বাধীন বাংলাদেশে কাদের এবং মুজাহিদ যত সম্মানে সম্মানিত হোন না কেন, ১৯৬৪-১৯৬৬ সালে রাজেন্দ্র কলেজে তার সতীর্থরা দেশ তথা মানবতার বিরুদ্ধে তাদের অপকর্মের কথা ভোলেনি বা ক্ষমা করেনি। কয়েক বছর আগে মুজাহিদ যখন ত্রিশ লাখ শহীদের পবিত্র রক্তে কেনা আমার প্রিয় দেশের লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে চলছিলেন, তখন আমাদের ওই ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে কাদের এবং মুজাহিদের উপস্থিতিক নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। দীর্ঘজীবী হোক আমার সতীর্থরা, দীর্ঘজীবী হোক আমার প্রিয় দেশ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। সূত্র


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.