আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাবমেরিন ডুবেই জীবনাবসান

হরেস লসন হানলের জন্ম তিউনিসে ১৮২৩ সালের ২০ জুন। বাবা-মার সঙ্গে তিনি পাড়ি জমান আমেরিকায়, মাত্র ৪০ বছরের জীবনে তিনি আইন প্রণেতা এবং আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন। তবে তার ব্যাপক পরিচিতি ঘটে পৃথিবীর প্রথম হস্তচালিত ডুবোজাহাজ বা সাবমেরিন আবিষ্কারক হিসেবে। ১৮৬১ থেকে ১৮৬৫ সাল পর্যন্ত আমেরিকার গৃহযুদ্ধে পেশা, বয়স কিংবা লিঙ্গ ভেদে প্রায় সব আমেরিকান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় হানলে দাস রাজ্যগুলোর সদস্যদের নিয়ে গঠিত সশস্ত্র বাহিনীর নৌ শাখায় মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন।

এ সময় শত্রু বাহিনীর শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজকে ধরাশায়ী করতে হরেস লসন প্রথম হাতে চালিত ডুবো জাহাজ বা সাবমেরিন আবিষ্কার করেন। তার মৃত্যুর পর এই সাবমেরিনকে তারই নামে আদলে এইচ এল হানলে নামে নামকরণ করা হয়। তার সহযোগীদের প্রচেষ্টায় দুটি সাবমেরিন তৈরির প্রকল্প ব্যর্থ হওয়ার পর হানলে নিজ অর্থে তৃতীয় সাবমেরিনটি তৈরিতে মন দেন। কিছুদিনের মধ্যে তৈরিও হয়ে গেল এইচ এল হানলে নামের সাবমেরিন। এবার পরীক্ষার পালা।

যাত্রা করল এইচ এল হানলে, কিন্তু বিধিবাম, সাবমেরিনটির পাশ দিয়ে যাওয়া এক জাহাজের ঢেউয়ের পানি সাবমেরিনের খোলা মুখ বা হ্যাচ দিয়ে ঢুকে পড়ে। এতে সাবমেরিনটির পাঁচজন মৃত্যুবরণ করেন। কিছু সংস্কার করে আবারও যাত্রার প্রস্তুতি নেন এইচ এল হানলে। যাত্রার তারিখ নির্ধারিত হয় ১৫ অক্টোবর ১৮৬৩ সাল। যদিও হানলের যাওয়ার কথা ছিল না, তবুও জেদ করেই হানলে অন্য সাত ক্রু নিয়ে নিজেই নেতৃত্ব দিয়ে জলে ডোবালেন নিজের তৈরি সাবমেরিনটি।

এবারও বিধিবাম, আবার ডুবে গেল সাবমেরিনটি। মারা গেলেন হরেস লসেন হানলেসহ আট ক্রু। কিন্তু হাল ছাড়েননি হানলের সহকর্মীরা। সাবমেরিনটিকে উদ্ধার করে আবার সংশোধন করা হয়। ১৮৬৪ সালে আমেরিকার নৌবাহিনীর নৌ অবরোধ মোকাবিলা করতে নয় ত্রুদ্ধ নিয়ে আবারও যাত্রা করে এইচ এন হানলে এবং সাফল্যের সঙ্গে পৃথিবীর প্রথম সাবমেরিন হিসেবে শত্রুর তথা আমেরিকার নৌবাহিনী শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস হোউসাটনিকের গায়ে আঘাত হাতে।

হতবিহ্বল আমেরিকার নৌবাহিনীর সদস্যরা কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই পালাতে থাকে সাবমেরিনটি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এবারও ডুবে যায় সাবমেরিনটি। আর সলিল সমাধি ঘটে সাবমেরিনে থাকা নয় ত্রুদ্ধর সবার। সাবমেরিনের আবিষ্কারক হরেস লসন হানলেকে মৃত্যুর পর পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় দক্ষিণ কেরোলিনার কার্লসটনে সমাহিত করা হয়। আর তার আবিষ্কৃত সাবমেরিনটি ১৩৬ বছর সমুদ্রে ডুবে থাকার পর ২০০০ সালে উদ্ধার করা হয় এবং হানলের সমাধিস্থলের পাশে কার্লস ইন পুরাতন নৌঘাঁটিতে রাখা হয়।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.