বহরমপুরে অধীর চৌধুরীর কংগ্রেস দুর্গে জোড়া ঘাসফুল ফোটার খবর মিলেছিল সোমবারের পৌরসভার ভোটের ফলে। আজ গনি পরিবারের খাসতালুক মালদহ এবং প্রিয়রঞ্জন-দীপা দাসমুন্সির রায়গঞ্জে এসে কংগ্রেসের জনসমর্থনে ভাঙন ধরানোর ক্ষেত্রে আরও কিছুটা এগোনোর ইঙ্গিত দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে এই প্রথম মালদহ এবং রায়গঞ্জে পা রাখলেন তিনি। আর দু'জায়গাতেই তাকে ঘিরে যা হল, এক কথায় তা জনপ্লাবন। এই ভিড়, এই উল্লাস যদি জনসমর্থনের কিছুমাত্র ইঙ্গিত হয়ে থাকে, তবে বলতেই হবে, এই দুই জায়গায় আগামী লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস চাপে পড়ল।
জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক এবং সরকারি সাহায্যদান প্রকল্প নিয়ে গোটা রাজ্যের সব জেলায় ঘুরছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই উপলক্ষে তার আজকের কর্মসূচি ছিল মালদহ শহর এবং উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ঘেঁষা কর্ণজোড়ায়। কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে মালদহ কলেজ মাঠে নেমে প্রথমে প্রশাসনিক বৈঠক, তার পর সহায়তা দান উপলক্ষে জনসভা।
ভিড়ের বহর শুরু হয়েছিল হেলিপ্যাড থেকেই। প্রশাসনিক বৈঠক সেরে যখন তিনি বৃন্দাবনী মাঠের জনসভায় রওনা দেন, পথের দু’পাশ তখন লোকারণ্য। মাঠেও তিলধারণের স্থান নেই। গাদাগাদি ভিড়ে যে কোনও সময় অঘটন ঘটার মতো পরিস্থিতি।
লোকসভা নির্বাচনের দোরগোড়ায় প্রয়াত বরকত গনি খানের জমিতে দাঁড়িয়ে মমতা সেই সমাবেশকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করতে ভুল করেননি।
তিনি বলেন, মালদহ জেলা বরকতদার জেলা। বরকতদার বাড়িতে অনেক বার এসেছি। বরকতদাকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। বরকতদাও আমাকে খুব স্নেহ করতেন। বরকতদা মালদহে ছিলেন বলেই আমি এখানে কিছু করিনি।
আমি অনেক ঘটনার সাক্ষী। এখন আমি মালদহের জন্য কাজ করতে চাই। আগামী দিনে আপনাদের ঘরের মেয়ে হয়ে থাকব।
এর পরেই চিঁড়েচ্যাপ্টা ভিড়ের উদ্দেশে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন: "বলুন, আপনাদের কাছে আবার আসব তো?" সমর্থনের আওয়াজটা শোনা গেল প্রায় সমুদ্রগর্জনের মতো। তবে কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, "এখন ওরা ক্ষমতায় আছেন।
আজ এটা করে দেব, ওটা করে দেব এই আশা দেখিয়ে মাঠে লোক টানা হয়েছিল। যারা মমতাকে পছন্দ করেন না, তারাও এ দিন মাঠে ভিড় জমিয়েছিলেন। এতে আমাদের খুব বিচলিত হওয়ার কারণ নেই। কারণ, মালদহের জনসাধারণ জানেন তারা কোথায় ভোট দেবেন। "
যদিও মালদহ থেকে রায়গঞ্জের পথে জনসমুদ্র সাঁতরে এল মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়।
মালদহের গাজল, উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার পেরিয়ে রায়গঞ্জে পৌঁছতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা বেজে গেল। পথের দু'পাশে আগাগোড়াই আবালবৃদ্ধবণিতার ভিড় উপচে পড়ছে। বিভিন্ন জায়গায় চোখে পড়ছে তার ছবি লাগানো বড় বড় তোরণ। রায়গঞ্জের রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় শাঁখ-উলু-ঢাকের বাদ্যি তো ছিলই, সুসজ্জিত মেয়েরা বরণডালা সাজিয়ে, প্রদীপ জ্বেলে তাঁকে স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মমতা অবশ্য এ দিন এখানে কোনও জনসভা করেননি।
শুধু প্রশাসনিক বৈঠক করেন।
সূত্র: আনন্দবাজার
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।