আমাদের ব্যর্থতার জন্যই কূটনীতিকদের এই তৎপরতা। সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘ থেকে শুরু করে সব কূটনীতিকই ভূমিকা রাখছেন। নিজেরা নির্বাচন করতে পারলে তারা এটা করতে পারতেন না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক কূটনীতিক মো. মোয়াজ্জেম আলী। গত শনিবার ইটিভিতে একুশের রাত শীর্ষক টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন। মঞ্জুরুল আলম পান্নার সঞ্চালনায় টকশোতে আরও অংশ নেন সাবেক রাষ্ট্রদূত খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা মোফাজ্জল করিম ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান।
সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে মোয়াজ্জেম আলী বলেন, আমাদের বিদ্যমান রাজনীতিই সাংঘর্ষিক। নির্বাচনকালীন এটি চরম রূপ নিয়েছে। আগেও এটা হয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে নির্বাচন। আর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়।
বিগত সময়ের সব নির্বাচনে এটা হয়েছে। তিনি বলেন, এই অস্থিরতার মূল কারণ হচ্ছে জয়ীরা সব নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। পরাজিতরা সব কিছু হারান। এমনকি বিরোধী দল সংসদে গঠনমূলক ভূমিকা রাখে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলেও তারা একই কথা বলে।
গত তিনটি নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হওয়ার পরেও পরাজিতরা বলেছে কারচুপি হয়েছে।
মোয়াজ্জেম আলী বলেন, ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল অবলুপ্ত করার সময়ে বিরোধী দল যদি সংসদে কিছু করত তাহলে এত সংঘর্ষ হতো না। তাদের কথা সংসদে টিকত না। তবুও জাতির সামনে তাদের বলা উচিত ছিল। তা না করে রাজপথে গিয়ে সহিংস আন্দোলন করছে।
সহিংসতার কারণ এটাই। সংসদে গেলে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি অনেকটাই এড়ানো যেত। সাবেক কূটনীতিক বলেন, বিদেশিরাও ভাবছে জাতি হিসেবে আমরা বিভক্ত। এর সুযোগ তারা নিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোও এর থেকে সুবিধা নিতে চায়।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ ও পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন সঠিক ভাবে করার সহযোগিতার জন্য আমাদের সেনাবাহিনী পাঠানো হয়। আর এখন তারা দেখছে আমরাই নির্বাচন করতে পারি না। তাই যারা নিজেদের নির্বাচন করতে পারে না তাদের সেনাবাহিনী নিয়ে কি হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব এই উদ্বেগ থেকেই বার্তা পাঠাচ্ছেন। দুই নেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি হয়তো বাংলাদেশে আসবেন তার ক্ষেত্র তৈরি করতে আরেকজন কূটনীতিককে বিশেষ বার্তা নিয়ে পাঠাচ্ছেন। এটা বাংলাদেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গুরুত্ববহন করে এই কারণেই। তবে একটি নির্বাচনের জন্য বিদেশিদের এই উদ্বেগ তৎপরতার একটি কারণ সেটা হচ্ছে আমাদের ব্যর্থতা।
সম্প্রতি ভুটানে নির্বাচন হয়েছে, নেপালে হয়েছে, ভারতেও নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। সেখানে বিদেশিদের কোনো তৎপরতা নেই। তার প্রয়োজন হয়নি। নির্বাচন করে প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা থাকলে এটা হতো না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।