যারা দেশের একটু খবরাখবর নেয়ার চেষ্টা করে তারা নিশ্চয়ই একটি ব্যাপারে একমত হবে যে, '৭১ এর বুদ্ধিজীবী নিধন অর্থাৎ এ দেশ থেকে শিক্ষা শব্দটিকে মুছে দেওয়ার প্রক্রিয়া কখনোই শেষ হয়নি। বরং সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে সেটা একেক বার একেক রূপ নিয়েছে। বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হয়, এই দেশ থেকে শিক্ষা নামক পুরো ব্যাপারটি নিশ্চিহ্ন নিদেনপক্ষে পুরোপুরি পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য সেই কাপুরুষ কুকুরের দল এখন একেবারে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
(আন্দোলনের (!) পুরো ব্যাপারটিকে এমন ভাবে সাজানো হয়েছে, যেন খুব সঙ্গত কারণেই মনে হয় শিক্ষা ব্যাবস্থার উপর ঝামেলা হওয়াটা পুরোপুরি কাকতালীয়। এতোদিন স্বেচ্ছায় অনিচ্ছায় তাই ভেবে এসেছি, এখন আর পারছি না।
)
অতিক্ষুদ্র এই মগজ নিয়ে খুব বেশি জিনিস বুঝতে পারি না, শুধু এটুকু জানি, আজকে তারা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে স্থায়ী ভাবে সন্ত্রাস ঢুকয়ে দিয়েছে। স্কুল-কলেজে মাদকসহ বিভিন্ন মাত্রার অপরাধ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ছড়িয়ে দিয়েছে। বাড়ির উপার্জনক্ষম একমাত্র বাবা কিংবা বড় ভাই টি রাস্তায় বের হলে, পোড়া লাশ হয়ে বাড়ি ফেরার ব্যাপারটি তারা নিশ্চিত করেছে। এসব কিছুর পরও যারা দু'চোখ বন্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রেখে লেখাপড়াটাকে চালিয়ে নিচ্ছিল, তাদের শেষ ইচ্ছাটুকুও গলাটিপে হত্য করার জন্য পরীক্ষার সময় গুলো তে আন্দোলনের (!) মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। গত দুইবছর হলো, পূর্বে দেওয়া রুটিন অনুযায়ী কোন পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে বলে মনে করতে পারছি না (পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে রুটিন পরিবর্তন হওয়া যে কতখানি ভয়াবহ ব্যাপার, সেটা এবারের জে এস সি পরীক্ষার্থীদের জিজ্ঞেস করলেই জানা যাবে)।
এত কিছুর পরও যদি একে পরিকল্পিত ভাবে এ দেশ শিক্ষা নিধন করার প্রক্রিয়া না বলি, তবে কি বলব?
২০১৪ সালের এস এস সি পরীক্ষা পরীক্ষার্থী আমি, এই পরীক্ষায় একটা ভাল রেজাল্ট করার স্বপ্ন সবার মাঝেও থাকে, আমার মাঝেও আছে। খুব ভাবতে ইচ্ছা করে, কোন আমাদের পরীক্ষার সময় কোন রকম ঝামেলা হবে না, কিন্তু সে ভাবনা এতটাই হাস্যকর যে, সার্কাসের ক্লাউনের কর্মকান্ডের চেয়েও এতে মানুষ বেশি আনন্দ পাবে।
কিছুদিন আগেও ইচ্ছা করত, দেশের বড় বড় জ্ঞানী মানুষদের কাছে গিয়ে বলি, "আমরা এই দেশটার ছাত্র, আমদের ভবিষ্যৎ কি, একটু বলবেন? প্লিজ!" কিন্তু এখন আর সে ইচ্ছেটুকুও করে না।
কি হবে বলে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।