আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অকুতোভয় সেনানায়ক

আপনার ছেলেবেলা সম্পর্কে জানতে চাই।

আমার বাবা উপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত আসামের শিলংয়ে চাকুরি করতেন। সেই সূত্রে শিলংয়ে আমার জন্ম ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি। বাবা এবং আমার মা লাবণ্য প্রভা দত্তের পরম স্নেহে আমি বেড়ে উঠি। শিলংয়েই আমার শৈশব কাটে।

শিলংয়ের লাবান গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করি। বাবা যখন চাকরি থেকে অবসর নেন তখন আমরা চলে যাই সিলেটের হবিগঞ্জ। হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের মিরাশি গ্রামে আমাদের পৈতৃক বাড়ি ছিল এবং সেখানে বসবাস করি। বাবা আমাকে হবিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। আমি সেখানেই পড়াশোনা করতে থাকি।

তারপর ওই স্কুল থেকে ১৯৪৪ সালে মাধ্যমিক পাস করি। এরপর কলকাতার আশুতোষ কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই। বাবা চাইতেন না আমি কলকাতায় ভর্তি হই। আমি হোস্টেলের খরচের জন্য কলকাতা থেকে টাকা চেয়ে বাবার কাছে চিঠি লিখেছিলাম। বাবা আমার জন্য টাকা পাঠিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু সেইসঙ্গে ছাত্রাবাসের সুপারিনটেনডেন্টের কাছেও একটা চিঠি লিখেছিলেন।

ওই চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, তার ছেলের ছাত্রাবাসের খরচ বাবদ তাদের পাওনা টাকা রেখে ছেলের ভর্তি বাতিল করে দিতে। বাবার ধারণা ছিল, কলকাতায় একা একা থাকলে পরে ছেলে বখাটে হয়ে যেতে পারে। বাবার এই ধারণা কতটা সত্যি হতো জানা নেই। তখন সুপারিনটেনডেন্ট আমাকে ডেকে বললেন, তুমি এখানে সিট পাবে না, দেখ কোথায় ভর্তি হবে। আমার কিছু বন্ধু-বান্ধব ছিল খুলনার দৌলতপুরের।

ওরা আমাকে বলল, দাদা আপনি খুলনায় চলে যান। ওখানে দৌলতপুর বিএল কলেজে সিট পাবেন। আমরা আপনাকে ট্রেনে উঠিয়ে দেব। বন্ধুদের কথামতো আমি খুলনায় চলে এসে বিএল কলেজে ভর্তি হলাম। ওখানে সবাই আমাকে পছন্দ করত।

খেলাধুলাও করতাম। একপর্যায়ে আমি বিএল কলেজ থেকে আমি আইএসসি এবং বিএসসি পাস করলাম।

সেনাবাহিনীতে যোগ দিলেন কবে।

আমি বিএসসি পাস করে খুলনাতেই ছিলাম। ওই সময় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখলাম।

পাকিস্তান আর্মিতে অফিসার নিবে। তখন আমি রিক্রুটিং অফিসে গেলাম। অনেক সুন্দর দেখতে বেশ কিছু ছেলে ছিল। আর্মিরা তাদের না নিয়ে আমাকে পছন্দ করল এবং নিয়ে নিল। আর আমি একটু ফট ফট করে ইংরেজিও বলতাম।

শুদ্ধ হোক, ভুল হোক। তখন আমি কমিশন অফিসার হিসেবে যোগ দিতে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে গেলাম। পাকিস্তান সেনানিবাসে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমি ১৯৫১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে 'সেকেন্ড লেফটেনেন্ট' হিসেবে কমিশন লাভ করি। কমিশন পাওয়ার পর বাবা আর কিছু বলেননি। সৈনিক জীবনের নতুন অধ্যায় বেশ উপভোগ করছিলাম।

সেনাবাহিনীর কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রথম দিকে একটু খারাপ লাগলেও পরে অভ্যস্ত হয়ে ওঠি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে আমি একমাত্র পূর্ব পাকিস্তানি হিন্দু কর্মকর্তা। আমি একজন কর্তব্যপরায়ণ সৈনিক হিসেবেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কাজ করছিলাম। ১৯৫৭ সালের ঘটনা, আমি ছুটিতে হবিগঞ্জে বাবা-মায়ের কাছে বেড়াতে এলাম। এসেই তো বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হলো।

বড় একা একা লাগছিল। মোটা বেতন পেতাম। এত টাকা খরচ করব কেমনে। বিয়ে-থা করে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে ফিরে গেলাম পশ্চিম পাকিস্তানে এবং আমার দায়িত্ব পালন করলাম। এরপর ১৯৬৫ সালে আমার সৈনিক জীবনে প্রথম যুদ্ধে লড়াই করি।

ওই সময় পাক-ভারত যুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে আসালংয়ে একটি কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলাম। সে যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পাকিস্তান সরকার আমাকে পুরস্কৃত করেছিল।

মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত হলেন কখন?

সৈনিক বছরে এক মাস ছুটি পায়। একমুলেশন লিভ। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এক মাসের ছুটি নিয়ে হবিগঞ্জে আসা-যাওয়া করতেই চোখের পলকে দিন চলে যেত।

এজন্য আমি বছরের ছুটি জমিয়ে রেখে তৃতীয় বছর একসঙ্গে তিন মাসের ছুটি নিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ হবিগঞ্জে আসতাম। ১৯৫১ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত টানা কুড়ি বছর আমি এভাবে ছুটি কাটিয়েছি।

পশ্চিম পাকিস্তানের ৬ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্ট ছিল আমার কর্মস্থল। ওই সময় আমি পাকিস্তান আর্মির মেজর। ১৯৭১ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসের ছুটি নিয়ে আমি হবিগঞ্জে আসি।

আমি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ি। কারণ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বুঝতে পারতাম না পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ স্বাধীনতার জন্য এতটা ব্যাকুল হয়ে পড়েছে। পশ্চিম পাকিস্তানে সামরিক ঘাঁটিতে আমাকে পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা সম্পর্কে জানানো হতো না। দেখতে দেখতে ছুটি প্রায় শেষ হয়ে আসছিল। এরকম পরিস্থিতিতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আবার পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যাব কি না এ ব্যাপারে বেশ শঙ্কিত ছিলাম।

মার্চ মাসের শুরু থেকে ব্যাপক প্রচারণা শুরু হয়েছিল। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। আমি হবিগঞ্জ থেকে বঙ্গবন্ধুর সেই তেজোদ্দীপ্ত ভাষণ রেডিওতে শুনেছিলাম। 'এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম; তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকো। ' এই কথাগুলো আমাকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল।

আমি সিদ্ধান্ত নিলাম পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যাব না। ২৫ মার্চের ভয়াবহ রাতে আমি হবিগঞ্জে ছিলাম। তখন হবিগঞ্জের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন জেনারেল রব ও কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরী। তারা দুজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমি রাজনীতি করতাম না।

জেনারেল রব আমার চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন। তাকে আমি দাদা ডাকতাম। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাক হানাদারবাহিনী ঢাকা ও দেশের বড় শহরগুলোতে 'অপারেশন সার্চলাইট' নামে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড চালায়, তা প্রথম জানতে পারলাম জেনারেল রব ও মানিক চৌধুরীর মুখে। ২৬ মার্চ সকালে জেনারেল রব কয়েকজন ছাত্রের মাধ্যমে আমাকে খবর পাঠালেন জেনারেল রবের বাড়িতে যাওয়ার জন্য। গিয়ে দেখলাম, হাতিয়ার এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ১৫০ জনের মতো দল যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।

দাদা আমাকে বললেন, 'পাকিস্তানিরা আক্রমণ চালিয়েছে। তারা আমাদের দেশ দখল করে নেবে। আমাদের সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালাবে। আমাদের সোনার বাংলাকে ধ্বংস করে দেবে। বাঁচতে হলে, দেশকে যুক্ত করতে হলে আমাদের যুদ্ধ করতে হবে।

সেই যুদ্ধের জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষিত সৈনিক। তুমি আর্মির অফিসার। তুমি বাঙালি। আর্মিতে ফিরে যাওয়ার তোমার আর কোনো সুযোগ নেই। তুমি আমাদের সঙ্গে যোগ দাও।

' আমি আর্মির লোক, যে কোনো সিদ্ধান্ত হঠাৎ নিতে পারি না। কিন্তু দাদার কথায় তাৎক্ষণিক রাজি হয়ে গেলাম। সিলেট অঞ্চলে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হলো আমার ওপর। আমি হাসিমুখে সে দায়িত্ব গ্রহণ করলাম। দাদা বললেন, সিলেটকে আমরা যেকোনো মূল্যে শত্রুমুক্ত রাখব।

আমি বললাম, সেটাই করব।

সিলেটকে শত্রুমুক্ত করতে আপনারা কোন ধরনের প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে আমার প্রথম দায়িত্ব ছিল ছিল সিলেটকে মুক্ত করা। তখন আমার সঙ্গী মাত্র ১৫০ জনের একটি বাহিনী। এটা মার্চের ২৭ তারিখের কথা।

২৮-২৯ তারিখে আমার সেনাদের সংগঠিত করে দুই প্লাটুন সাতগাঁ পাহাড়ের দিকে পাঠিয়ে দিলাম। শ্রীমঙ্গল থেকে হবিগঞ্জ ও চুনারুঘাটে যদি আসতে হয়, তাহলে সাতগাঁ পাহাড়ের মধ্য দিয়ে আসতে হবে। কারণ, সাতগাঁ পাহাড়ের মাঝ দিয়ে রেললাইন ও বড় রাস্তা গেছে। তখন আমরা রশীদপুরে প্রথম ক্যাম্প বানালাম। ক্যাম্পের আশপাশে ছিল বিশাল চা বাগান।

চা বাগানের বাঙালি ম্যানেজার মোস্তফা এবং আজিজের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। তারা আমাদের ভীষণ সহযোগিতা করেছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। ট্রেনিংয়ের জায়গা ঠিক করে দিয়েছিল। চা বাগানের আড়ালকে কাজে লাগিয়ে আমি যুদ্ধের রণকৌশল নির্ধারণ করেছিলাম।

পরে আক্রমণের সুবিধার্থে পরবর্তীতে আমরা রশীদপুর ছেড়ে মৌলভীবাজারে ক্যাম্প স্থাপন করি।

সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পেলেন কখন?

১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়। তাজউদ্দীন আহমেদ সাহেব প্রধানমন্ত্রী হলেন, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি হিসেব দায়িত্ব দেওয়া হয় এম এ জি ওসমানীকে। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর বাংলাদেশকে মোট ১১টি সেক্টরে ভাগ করেন? সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল এবং খোয়াই শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইন বাদে পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেট-ডাউকি সড়ক পর্যন্ত এলাকা নিয়ে ৪ নম্বর সেক্টর গঠন করা হয়। আর ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার নিযুক্ত করা হয় আমাকে।

এ সেক্টরের ভৌগোলিক অবস্থান ছিল সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল এবং খোয়াই-শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইন বাদে পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেট-ডাউকি সড়ক পর্যন্ত। প্রায় একশ বর্গমাইল।

মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ কোনো স্মৃতি মনে পড়ে কি না।

দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে অনেক মুখোমুখি যুদ্ধে আমরা অবতীর্ণ হয়েছি। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলেটের কানাইঘাটে সংঘটিত যুদ্ধের কথা মনে পড়ছে।

৩ ডিসেম্বর সেক্টর ট্রুপস অগ্রসর হলো। কানাইঘাটে রাস্তার মধ্যে 'কাট অফ' কোম্পানি হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল লে. গিয়াসকে। লে. জহিরকে একটি কোম্পানিসহ কানাইঘাট-চুরখাই সড়কের দায়িত্ব দেওয়া হলো, যাতে চুরখাইয়ের দিকে কোনো শত্রুসৈন্য পালিয়ে না যেতে পারে। আর দুটি কোম্পানির দায়িত্ব ছিল মেজর রবের নেতৃত্বে নদীর পাড় ও মাঝ দিয়ে শত্রুর ওপর হামলা চালিয়ে কানাইঘাটে অভিযান করা। রাত দেড়টায় গোলাগুলি শুরু হলো।

খবর নিয়ে জানলাম, লে. গিয়াসের সঙ্গে পাকিস্তান সৈন্যদের গোলাগুলি হচ্ছে। লে. গিয়াসের কোম্পানিকে ঘিরে ফেলেছে। কিছুক্ষণ পর খবর এলো, ওই কোম্পানির একটি ছেলে শহীদ হয়েছে। কিন্তু লে. গিয়াস গন্তব্যস্থল অভিমুখে এগিয়ে চলেছে। লে. জহিরের কাছ থেকে খবর এলো ওরা ওদের গন্তব্যে পেঁৗছাতে পারেনি।

শত্রুতা ওদের গতিরোধ করার জন্য মর্টার ও এলএমজির সাহায্যে গোলা নিক্ষেপ করছে। ৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল। রাত আড়াইটায় চারদিক থেকে তুমুল যুদ্ধের খবর আসতে শুরু করল। লে. গিয়াসের গন্তব্যস্থলে পৌঁছার খবর পেলাম এবং সে তার কাজ আরম্ভ করে দিয়েছে। এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ওইদিন সকাল ১১টায় কানাইঘাট আমাদের দখলে আসে।

চারদিকে জয়বাংলা ধ্বনি। সব মুক্তিযোদ্ধার মনে দারুণ সাহস জন্মে এবং হাসি ফুটে ওঠে। নানা জায়গায় আমাদের অভিনন্দন জানানো হলো। কানাইঘাট যুদ্ধে মৃত পাকিস্তানি সৈন্যের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০ জন। আহত ২০ জনকে গুলি করে মারা হয়েছিল।

বাঙালি রাজাকার ছিল ২০ জন। পায়ে ধরে মাপ চাওয়ায় ওদের দিয়ে মুটে-মজুরের কাজ করানো হতো। আমাদের পক্ষে শহীদ হয়েছিলেন ১১ জন ও আহত হয়েছিলেন ১৫ জন।

স্বাধীনতার পর আপনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

১৯৭২ সালে আমি রংপুরে ব্রিগেড কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত হই।

এরপর ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য সীমান্তরক্ষা প্রহরী গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আমাকে বিডিআরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমার নেতৃত্বে সীমান্তরক্ষা প্রহরী বা বাংলাদেশ রাইফেলস গঠিত হয়। বর্তমানে এ বাহিনীর নাম বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। আমি বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রথম মহাপরিচালক ছিলাম। ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত আমি আর্মি হেড কোয়ার্টারে চিফ অব লজিস্টিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করি।

১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করি। ১৯৭৯ সালে বিআরটিসির চেয়ারম্যান, ১৯৮২ সালে পুনরায় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৪ সালে অবসর গ্রহণ করি।

আপনারা যে বাংলাদেশ চেয়েছিলেন, তা কতখানি পূরণ হয়েছে।

৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে আমরা জয়ী হয়েছি। এজন্য আমাদের লাখো মানুষ প্রাণ দিয়েছে।

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমি মনে করি, যে স্বপ্ন নিয়ে যুদ্ধ করেছিলাম, তা সফল হয়েছে দেশের স্বাধীনতার ভেতর দিয়ে। আমরা এখন স্বাধীন দেশের অধিবাসী। আমরা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে একসঙ্গে বসবাস করছি।

বর্তমানে আপনার সময় কাটে কীভাবে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আন্দোলন করছি সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম থেকে। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছি। অবসর সময় পত্রিকা পড়ি, টেলিভিশন দেখি। নিয়মিত শরীরচর্চা করি।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।