থেমে যাবো বলে তো পথ চলা শুরু করিনি।
মূল লেখাঃ http://www.shobdoneer.com/minsomnaz/37887
আজকে হরতাল। হরতাল মানেই হল আমার জন্য ছুটি। ঘুম থেকে উঠেই কলেজে যাওয়ার জন্য ছুটোছুটি করতে হবে না। অলস ভাবে সময়টা পার করা যাবে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে কি ঘটবে আমার মাথাব্যথা নাই। আমার ছুটি আজ । এতেই আমি খুশী। তবে বিশ্বজিত এর মত কাউকে হারাতে চাই না। আর চাই না মারামারি কাটাকাটি রক্তপাত হোক।
বাস, ট্রাক, সি এন জি পোড়ানোর মত মহোৎসব হোক। হরতাল হলেই কি এসব করতে হবে ? যারাই বিরোধী দলে থাকে তারাই ভাবে এটাই বুঝি প্রতিবাদের ভাষা। মানুষকে কষ্ট দিয়ে আবার জানাতে চায় আমরা ভাই তোমাদের সুখের জন্যেই এই সর্বনাশের হোলি খেলা খেলি। তোমরা একটু সহ্য করো। তোমাদের সুখের দিন সামনে।
আজব এই জানানোর কায়দা।
ব্লগ বিশেষ করে সামু ব্লগে সাইদির একটা অডিও স্ক্যান্ডাল নিয়ে খুব হইচই হচ্ছে। একপক্ষ সত্যি বলছে আর এক পক্ষ বলছে যে এটা সত্যি না। সে যাই হোক এটা সত্যি কিংবা মিথ্যে হোক আমার কিছু যায় আসে না।
অনেকদিন আগে সাইদির একটা অডিও শুনছিলাম।
আমার আম্মা আব্বা আবার খুব ভক্ত সাইদি সাহেবের। তিনি নাকি মাওলানা। আমিও ভাবতাম হয়তো কামেল লোক। কিন্তু একদিন তার একটা অডিও ক্যাসেট শুনলাম।
উনি বলছেন – কি বলছেন ? মেয়েরা কিভাবে পেট কাটা, পিঠ কাটা, নাভি কাটা, হাত কাটা, গলা কাটা, আরো কত কাটা কাটির ড্রেস পড়ে।
তার ভাষা ছিল জোরালো। আর একসাথে প্রচুর কথা বলতে পারেন। মানুষকে প্রভাবিত করতে পারেন ভালই এসব ওয়াজ নসিহত করে।
বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষের অবস্থা খারাপ। অর্থনৈতিক ভাবে আরো।
তাই যারা শুনছিল তারা মজা পাচ্ছিল। তারা তাদের স্ত্রীদের সব চাহিদা পুরণ করতে পারেনা। ঐ সময় যখন তিনি ওয়াজ করছিলেন তখন এরশাদের সময়কাল। মেয়েরা কে কতজন নিজে ইনকাম করছিল ! স্বামী বেচারা যা এনে দিচ্ছে তাই তো সে পড়ছে। সংসার ছেলেমেয়ের খরচ সামলে স্ত্রীর সৌখিনতার সামাল কতজনেই বা ঐসময় দিতে পারতেন।
আবার ওই সময় টাতে সবারই ছেলেমেয়ে বেশি ছিল। চারজন পাঁচজন অন্তত। যেমন আমরা পাঁচ ভাই বোন, আবার আমাদের প্রতিবেশী যারা তাদের সবাই ই ভাইবোন বেশি ছিল। তাই সংসার সামলে ওরকম সৌখিনতার সামাল দেয়া এত সহজ ছিল না। দু একজনকে দেখে মনে হয় ওনার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিল।
এরপর উগরে দিয়েছেন জনগনের মধ্যে। আবাল জনতা না বুঝে খুব মজা পেয়েছে আবার আলোচনা করেছে। মানুষের এই ভেতরের নীচ জায়গাটাতে তিনি আলোড়ন তুলেন আর জাগিয়ে তুলেন তাদের। তার অডিও ক্যাসেট এর শ্রোতা ব্যাপক অর্ধশিক্ষিত অশিক্ষিত জনগোষ্ঠী। তারা কখনো কোন ভাল বই পড়ে না, গল্প পড়তে পারে না, কবিতা পড়তে পারে না কিছু না।
মানুষ জন্ম থেকে খারাপ হয় না। কিন্তু ভেতরে একই সাথে পশুভাব থাকে আবার দেবতাভাব ও থাকে। মানুষের কাজ হল সেই দেবতার সন্ধান করা। উনি করেন পশুর সন্ধান। এরপর ওয়াজ নসিহত করে সেটাকে হালাল করেন।
মানুষ তো ভাবে ইনি তো বিরাট বড় মাওলানা সাহেব। আমার আম্মা আব্বাও ভাবেন। আম্মাকে বোঝালাম যিনি মেয়েদের নিয়ে বাজে কথা বলেন তিনি কখনো ভাল হতে পারেন না। আম্মা বুঝে না। আব্বা বুঝেন।
বুঝে চুপ করে থাকেন কিন্তু আবার ওয়াজ নসিহত এর সময় হলে পাজামা পাঞ্জাবী টুপি পড়ে ওনার ওয়াজ শুনতে যান । তিনি নাকি ভাল তফসির করেন।
আর একটা জায়গায় বলেছিলেন মেয়েরা নাকি হাতে ফুটানি ব্যাগ নিয়ে হাঁটে । শপিং করে। আর যারা শুনছে তারা খুব মজা নিয়ে শুনছে।
কেননা মেয়েদের প্রতি সবার একটা বিদ্বেষ যেমন থাকে তেমনি থাকে নিষিদ্ধ আকর্ষণ । তাই তারা অনেক মজা করে শুনেন। আমার খুব ইচ্ছে হয় ওনাকে জিজ্ঞেস করি মেয়েরা বাইরে কি বাজারের ব্যাগ অথবা ছালার ব্যাগ নিয়ে যাবে ? তাহলে কি তার খুব খুশী লাগতো ? ওনার স্ত্রী, মেয়ে,ছেলের বউ, নাতিনরা কি ছালার ব্যাগ নিয়ে বাইরে যায় ? আমার খুব দেখার ইচ্ছে।
ওনার আবার টেকনিক আছে। এরপর আবার সুর করে বলেন মায়ের পায়ের নীচে বেহেশত।
তাই সবাই মেয়েদের যেন সম্মান করে। একটু আগে অসম্মান করলেন সেটা আর কেউ মনে রাখবে না। আমরা বেশীর ভাগ মানুষ ইমোশনাল। উনি মানুষের ইমাশনের জায়গাটাতেও আঘাত করেন। এটা কি তার টেকনিক ? নাকি সব রাজনীতিবিদ দের ?
তবে আমরা রাজনীতিতে পরিশুদ্ধ মানুষ চাই।
সত্যিকারের নেতা চাই। একজন ভাল নেতাই পারেন সত্যিকারের পথের সন্ধান দিতে যিনি আমাদের একটা সমৃদ্ধ জায়গায় নিয়ে পৌছাবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।