বিশ্বজিৎ দাশ হত্যা মামলার রায়ে গতকাল কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বিচারিক আদালত।
দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক এ বি এম নিজামুল হক রায় ঘোষণার আগে রাজনীতিবিদদের সতর্ক করে 'সংযমী' হওয়ার পরামর্শ দেন। পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, রাজনৈতিক হরতাল, অবরোধ, শোভাযাত্রা বিশৃঙ্খলার দিকে ধাবিত হলে নিকট ভবিষ্যতে হয়তো বিশ্বজিৎ দাশের মতো আরও মৃত্যু দেখতে হবে। শান্তিপ্রিয় ও দেশপ্রেমিক কোনো মানুষের এটি কাম্য হতে পরে না। আদালত আরও বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড অন্য দশটি হত্যাকাণ্ডের মতো নয়, এ ঘটনাটি বিভিন্ন দিক থেকে ব্যতিক্রমী ও স্পর্শকাতর।
এ ঘটনা রাতের অন্ধকার বা গোপনে সংঘটিত হয়নি, বরং প্রকাশ্য দিবালোকে ছুরি, চাপাতি এবং লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে একজন মানুষকে। মানবতা ও নৈতিকতার কোনো স্তরেই নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানি বা রক্তপাত সমর্থনযোগ্য নয়। পর্যবেক্ষণে বলা হয়, বস্তুত এ অপরাধের নিষ্ঠুরতা এমন মর্মান্তিক ছিল যা বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রচারিত হয়েছে; মানুষ হয়েছে হতবাক এবং আতঙ্কিত। এ ঘটনার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রযন্ত্রের স্বাভাবিক ও সহনীয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে বহির্বিশ্ব ও দেশের মানুষের কাছে ভুল বার্তা দেওয়ার প্রয়াস চালিয়েছেন।
আদালত উল্লেখ করেন, সামগ্রিকভাবে অপরাধের মাত্রা ও গভীরতা বিবেচনা করে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করলে ন্যায়বিচার সমুন্নত হবে বলে মনে করেন এ ট্রাইব্যুনাল। রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪/১৪৩ ধারায় অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। বিচারক বলেন, হরতাল-অবরোধের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচির ক্ষেত্রে আহ্বানকারী পক্ষ ও বিরোধীপক্ষকে গণতন্ত্র রক্ষা ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার জন্য গভীর সতর্কতা অবলম্বন করে মানুষের জীবন বিপন্ন, জনসাধারণের শান্তিভঙ্গ বা বিঘি্নত হওয়ার আশঙ্কা, সম্পত্তির ক্ষতিসাধন থেকে মুক্তি দিতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।