জীবন একখান বাঁশবাগান। খালি বাঁশ আর বাঁশ। ফেসবুকে আমি: facebook.com/bamboo.baash জিমেইলে আমি: bashbamboo@gmail.com
যখন তুমি ধ্বংসে উম্মত্ত..
আমি তখন তোমার সীমা’র দেয়াল ।
যখন তুমি আগুন লাগাও..
আমি তখন সীমাবদ্ধতার মাঝেও ..
ফায়ার সার্ভিসের কর্মী’র ভুমিকায়।
যখন তুমি অন্যের স্বপ্ন ভাঙ্গার উল্লাস করো-
আমি তখন তোমার উল্লাসে বাধা হই।
যখন তুমি তোমার হাত ভাইয়ের
রক্তে রঞ্জিত করো-
আমি তখন তোমাকে নিবৃত করি-
তোমাকে থামাতে নিষ্ঠুর হই..
এরপর হই ডাক্তার-ব্রাদার --
অপটু হাতে রক্তের স্রোত থামানোর
অক্লান্তকর প্রচেষ্টা করি ।
তখন আবার তুমি পথের কাঁটা “আমাকে”-
আঘাত করতে উদ্যত হও ।
তুমি করলে হয় বীরের কাজ -
আর আমি করলে হয় মানবতাহীন জঘন্যতা ।
তুমি করলে পাও ফুলের মালা--
আর আমি করলে পাই ধিক্কার-
তোমাকে থামানোর দায়ে দোষী ।
তুমি খেতাব পাও “সোনার ছেলে”
আর আমি পাই শঙ্কা, হই উৎকন্ঠিত-
চাকরি হারানোর লিস্টে নাম...উঠার ভয়ে ভীত ।
তুমি রাজা কিংবা রাজপূত
আর আমি অধম গোলামের পুত--
সত্য স্বীকারে মাথা পেতে নেই
দাদা জমিদার ছিলো না তাই ।
তুমি মানবাধিকার রক্ষায় ও ধ্বংসে হও সোচ্চার
আর আমি মানুষ না তাই--
মানবাধিকার “আমার জন্য না” ।
তুমি তোমার ভাইকে যখন রাস্তায় লাশ করো
আমি তখন তোমার ভাইয়ের লাশ বাহক--
লাশ টানায় দায়িত্ববান ।
আবার তুমি ঐ লাশ নিয়েই
করো রাজনীতি-
লাশ নিয়ে মিছিল করো-
মাছের মায়ের মরাকান্না করো-
গায়েবানা জানাজা করো-
এ সবই করো তোমার-ই স্বার্থে ।
আমি কান্না করি দায়িত্বে,
মানবতায়-
নুন খেয়ে গুন গাওয়ার তাগিদে ।
তুমি স্বপ্নপুরী গড়ো আরেক ভাইয়ের স্বপ্ন ভেঙ্গে
আমি ন্যায়তঃ কিছু করলে আমাকে তুমি-
দলবাজি’র মিথ্যা অপবাদ দাও-
আমাকে করো টার্গেট-
পণ করো আমার
পেটে লাত্থি মারার ।
তুমি ইট-সিমেন্ট-সুরকি’র সুরম্য প্রাসাদে-
রাতে ঘুমে বিভোর থাকো ।
আর আমি কুকুর আর চোরের সংখ্যার
বৃদ্ধি ঘটাই-
রাস্তায় কাটে বিনিদ্র রাত ।
তুমি ঈদ-পূজো-নববর্ষ পালন করো-
পরিবার-পরিজন-বন্ধু নিয়ে ।
আর আমি সেই অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন পালনে-
তোমায় সহায়তা করি-
নিজের সাধ আহ্লাদকে গলা টিপে ।
তুমি কলমের খোচায় লাখ-কোটি সরাও
আর আমি ২/১০ টাকা নিলেই-
দূর্নীতি দমনে মামলা ঠোকো-
পেপার-টিভি’তে সম্প্রচার করো ।
তুমি করো মনের ক্ষুধায়
আর আমি করি পেটের ক্ষুধায় ।
তুমি মানচিত্র ছিবড়ে-খুবলে খাও-
তাতেও তোমার আশ মেটে না ।
আর আমি খাই শক্ত রুটি ছিবড়ে-খুবলে-পরম তৃপ্তিতে ।
এরপর ঢেকুর তুলি ENO না খেয়েই ।
তুমি তোমার সকাল-বিকাল’এর ছায়ার-
দৈর্ঘ্যের সাথে মেপে দেখ -
সুরম্য অট্ট্রালিকার দৈর্ঘ্যের ।
আর আমি পকেটের বাজারের
লিস্টি’র দৈর্ঘ্যের সাথে-
দৈর্ঘ্য মিলাই পকেটের টাকার-
সাধ ও সাধ্যের সমন্বয়হীনতা নিয়েই
বেঁচে থাকি ।
তোমার প্রাপ্তি তোমাকে স্বস্তি,শান্তি দেয় না-
দেয় অস্বস্তি ও অশান্তি ।
আর আমি আমার পাওয়া না-পাওয়া নিয়েই-
চরম শান্তিতে থাকি ।
তুমি এসি রুমে গদিওয়ালা বিছানায় শুয়ে-
কাঁটা’র বিছানায় শোয়ার মতো-
অস্বস্তিতে নির্ঘুম পাশ ফেরো-
স্লিপিং পিলের দ্বারস্থ হও ।
আর আমি এতোটুকু অবসরে-
গভীর ঘুমে নিমজ্জিত হই ।
তুমি জেগে জেগে দিবাস্বপ্ন দেখো-
দেশ খাওয়ার, মানুষ খাওয়ার,টাকা খাওয়ার।
আর আমি ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখি-
ভালোভাবে বেঁচে থাকার-
সবাইকে নিয়ে সুখী পরিবার-দেশ গড়ার ।
তুমি টাকা লুটে ডলার-পাউন্ড বানাও-
একদেশ থেকে অন্যদেশে গিয়ে ফূর্তি করার।
আর আমি তিলে তিলে জমানো টাকা দিয়ে
স্বপ্ন দেখি-
“একটি ধানের শীষের উপর-
একটি শিশির বিন্দু” দেখার ।
তুমি মাইকেল জ্যাকসন-ম্যাডোনা’র গান
শোনো-
এমন হাত-পা ছোড়াছুড়ি করো-
গায়ে বিছুটি পাতা লাগলো যেন !
আর আমি নজরুল-রবীন্দ্র-লালন শুনি -
মনের স্থিরতায়, গানের গভীরতায় ।
এতোকিছু’র পরেও
তুমি-ই মানুষ
আর আমি নাকি মানুষ না,
শুধু-ই পুলিশ। ।
কবি: মোহাম্মদ আশিকুর রহমান
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।