অবশেষে যা ঘটলো- তাতে হেফাজতে ইসলামের সব সমালোচকেরাই জবাব পেয়ে গেলো।
উল্লেখ্য, ইদানিং হেফাজতে ইসলামের সমালোচনায় মুখর ছিলো দুই ধরণের মানুষ- হেফাজতের ভূমিকা নিয়ে যাঁদের অভিযোগ ছিলো পরস্পরবিরোধী।
এক দলের অভিযোগ ছিলো- দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে হেফাজতে ইসলাম কোনো কঠোর কর্মসূচি দিচ্ছে না কেন?
আরেক দলের অভিযোগ ছিলো- হেফাজতে ইসলাম এই সহিংস পরিস্থিতিতে শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিলো কী করে?
১ম দলের জবাব- হেফাজতে ইসলাম সর্বোচ্চ চেষ্টা ব্যয় করেছে ২৪ তারিখের সমাবেশ সফল করার জন্য। এমনকি মুহতারাম আমির এবং মহাসচিব এক দিন আগে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানাও দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদেরকে বাধা দেয়।
সরকারি বাধায় শেষ পর্যন্ত সমাবেশ স্থগিত করতে হয়েছে।
২য় দলের জবাব- আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-এর অপমানের নিন্দা জানানোই শুধু হেফাজতে ইসলামের দায়িত্ব নয়। জনগণের আর্তনাদে গর্জে ওঠাও হেফাজতে ইসলামের দায়িত্ব। সরকার জনগণকে স্বীয় ভোটাধিকার প্রয়োগের আগেই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করবে- এ ব্যাপারে কি হেফাজতের কিছুই বলার নেই? যৌথবাহিনী সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে যাকে-তাকে গুলি করে মারবে, মানুষের ঘর-বাড়ি গুড়িয়ে দেবে- এ বিষয়ে কি হেফাজতে ইসলামের কিছুই বলার নেই? আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা, বর্তমানে সরকারের স্বৈরাচারী ভূমিকার সমালোচনা করে অনেক নারী-পুরুষ অসহায় দৃষ্টিতে হেফাজতে ইসলামের হস্তক্ষেপ কামনা করছে। তাঁদের ধারণা, এই মুহূর্তে একমাত্র হেফাজতে ইসলামই পারে জনগণকে নিয়ে এই জালেম সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে।
অনেক যুবা এবং বৃদ্ধ অপেক্ষায় আছে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে বলে। এটা আসলে তাঁদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ। তাঁরা চায়- হেফাজতে ইসলাম সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করুক। কিন্তু হেফাজতে ইসলামের দীর্ঘ নিরবতা দেখে তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে শেষ পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের নিরব ভূমিকার সমালোচনা করতে লাগলো। আস্তে আস্তে মানুষ হেফাজতে ইসলামকে ভুল বুঝতে শুরু করলো।
এসব বিষয় বিবেচনা করলে বর্তমান সময়ে হেফাজতে ইসলাম কর্তৃক একটি বড় ধরণের কর্মসূচি ঘোষণা আবশ্যক হয়ে দাঁড়ায়। হেফাজতে ইসলাম তো সরকারের বিরুদ্ধে সমাবেশ ডাকে নি। বরং ১৩ দফা দাবি আদায় এবং বর্তমানের অরাজক পরিস্থিতি দূর করার আহ্বান জানানোর লক্ষ্যেই ঘোষিত সমাবেশকে সফল করার জন্য সরকার ও বিরোধীদল উভয়ের সহযোগিতা চেয়েছে। হেফাজতে ইসলাম শান্তিপূর্ণ সমাবেশেরই আহ্বান করেছিলো। সরকার চাইলে এ সমাবেশের অনুমতি দিতে পারতো।
কিন্তু সরকার সে সুযোগ দেই নি। পুলিশ দিয়ে বাধা প্রদান করেছে। টিভির খবরে বা অন্য যে কোনো উপায়ে দেশের জনগণ ইতিমধ্যেই এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরেছে। যাঁরা হেফাজতে ইসলামের নিষ্ক্রীয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলো, এখন আশা করি- হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে তাঁদের নেতিবাচক ধারণা দূর হবে। তাঁদের সমালোচনার জবাব তাঁরা পেয়ে যাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।