আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিআইএর দুর্ধর্ষ যত অভিযান।পর্ব-3

সাধারণ একজন মানুষ

দ্য স্টারগেট প্রজেক্ট ভবিষ্যৎকে বিশ্লেষণ করার অনন্য ক্ষমতা নিয়ে শুরু হয়েছিল দ্য স্টারগেট প্রজেক্ট। এক কথায় বলতে গেলে মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণের জন্যই এ প্রজেক্ট শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকার সিআইএকে দিয়ে করানো সবচেয়ে বড় আকারের প্রজেক্ট হিসেবে কুখ্যাতি পেয়েছিল এই স্টারগেট। মেধাবী সাইকিক তথা মনোবিজ্ঞানীদের হাত করেছিল সিআইএ। তাদের সংখ্যা ঠিক কত ছিল গোপনীয়তা ভেঙে সেটা আজও কেউ বের করতে পারেনি।

তবে তাদের পেছনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ঢালা হয়েছিল। বিজ্ঞান স্বীকৃতি দেয়, অসাধারণ মেধাবীদের যে কোনো পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে অন্য সাধারণের চেয়ে শতকরা ১৫ ভাগ বেশি সঠিক তথ্য বা ভবিষ্যৎ ফলাফল বলে দিতে পারে। আর সাইকিক দিয়ে ঠিক এটাই বের করে আনতে চেয়েছিল সিআইএ। তারপর মাস্টার প্ল্যানটা খুব সহজ। একটি হামলার পর প্রতিপক্ষ ঠিক কি জবাব দেবে সেটা আগেই জেনে ফেলা।

ব্যস, তারপর তো পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে। গোপন নথিপত্র ঘেঁটে শত্রুদের পরিকল্পনা জেনে ফেলার চেয়েও এটা জেনে ফেলা কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা নিশ্চয়ই অনুমেয়। তবে সিআইএ দ্য স্টারগেট প্রজেক্টে হয়তো বা সফলতা পায়নি বলেই অনেকের ধারণা। অসংখ্য সাইকিকের গোপনীয়তা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় প্রজেক্টটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অবশ্য এখনো অনেকে বিশ্বাস করে, সিআইএ প্রজেক্টটি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

অপারেশন নর্থউডস ১৯৬০ সালে সিআইএ'র সামনে একটি চ্যালেঞ্জ এসে দাঁড়ায়_ কিউবার ভিত্তি বলে পরিচিত ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। সিআইএ সবচেয়ে সহজ পথটি খুঁজে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে। শেষে সিআইএ যে পরিকল্পনা কষে সেটা শুনে অাঁতকে ওঠে অনেকেই। কিন্তু পুরো মাস্টার প্ল্যান নিয়ে সিআইএ গুছগাছ শুরু করে। পরিকল্পনাটা ছিল আমেরিকানদের দিয়ে ইউএসের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাকে হত্যা করা হবে।

হত্যা পরিকল্পনার মূলে থাকবে, আমেরিকায় সন্ত্রাস আর খুনের একটা মারাত্দক ছকে বিস্তার করা এবং এই অস্থিরতার দায়ভার দেওয়া হবে কিউবার শক্তিমান ফিদের ক্যাস্ট্রোর ওপর। সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ তুলে পুরো বিশ্বের মনোযোগ কেড়ে নিয়ে কিউবায় সামরিক হামলা এবং ফিদেল ক্যাস্ট্রোর পতন নিশ্চিত করা। এ ভয়াবহ মাস্টার প্ল্যান শুধু জন এফ কেনেডির সম্মতির অভাবে বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু তার মৃত্যুর পর সিআইএ'র এই মাস্টার প্ল্যান গোপন থলে থেকে বেরিয়ে আসে। বোদ্ধারা বলেন, অপারেশন নর্থউডস বাস্তবায়ন না হলেও এই মাস্টার প্ল্যান এখনো নানা দেশে নানাভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

নিজ দেশে সন্ত্রাসী হামলায় অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী দেশকে অভিযুক্ত করে শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে সামরিক হামলা চলছে। সিআইএ'র এই মাস্টার প্ল্যান সর্বকালের সবচেয়ে নগ্ন গোয়েন্দা কৌশল হিসেবে বিবেচিত। অপারেশন ফোনিক্স প্রেসিডেন্ট কেনেডি নিহত হওয়ার পর ভিয়েতনামে মার্কিন অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। তখন এ একটি হত্যা আরও হাজার হাজার মানুষ হত্যার উপলক্ষ হয়ে সামনে চলে আসে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর বদলা নিতে সিআইএ তার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে উঠেপড়ে লেগে যায়।

আর সেই লক্ষ্যে ১৯৬৪ সালে সিআইএ'র পরিকল্পনায় টংকিং উপসাগরের তীরবর্তী এলাকায় উত্তর ভিয়েতনামি সৈন্যদের ছদ্মবেশে অবস্থান নেয় মার্কিন বাহিনী। আর মার্কিন মার্সেনারিদের হামলায় ১০ হাজার দক্ষিণ ভিয়েতনামি নিহত হন। এর পেছনে ছিল আরেক রহস্য। এ হামলার দোহাই দিয়ে আমেরিকা উত্তর ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। একই সঙ্গে পূর্ণতা পায় অপারেশন ফোনিঙ্।

১৯৬৭ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে সিআইএ খুন করে ৩০ হাজারের বেশি উত্তর ভিয়েতনামি রাজনীতিবিদ। এটি ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ও জঘন্য গণহত্যা হিসেবে কুখ্যাত। সিআইএ এত বড় আকারে কোনো অভিযান কমই করেছে। আর তাদের পরিচালিত যে কোনো অভিযানে এত মানুষ হত্যা করার নজিরও নেই। সংগৃহিত


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.