দিন পেরোলেই নতুন বছর, ২০১৪। স্মৃতি হয়ে যাবে ২০১৩। তবে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনের কোঠরে অনেকদিন জাগরুক থাকবে বছরটি। '১৩' সংখ্যাকে অপয়া বললেও ২০১৩ সাল বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সাফল্যের বছর। এ বছর টাইগারদের দলগত সাফল্য যতটা উজ্জ্বল, ঠিক ততটাই ব্যক্তিগত সাফল্যে ভরা।
অবশ্য কিছু বিতর্কের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে বছরটি। আবার বছর শেষে শঙ্কার কালো মেঘও আনাগোনা করছে দেশের ক্রিকেট আকাশে।
এ বছর টাইগাররা প্রথম সফর করে 'দ্বীপরাস্ট্র' শ্রীলঙ্কায়। এর আগে যতবারই দ্বীপরাস্ট্রে খেলতে গেছে টাইগাররা, ফিরেছে শূন্য হাতে। এবারই প্রথম দেশে ফিরেন মুশফিকরা সাফল্য নিয়ে।
প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ড্র করে ওয়ানডে সিরিজ। বৃষ্টি বিঘি্নত ম্যাচ জিতে নেয়। টেস্টে প্রথমবারের মতো ড্র করে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। গলে ড্র করে টেস্ট। ওই ম্যাচে প্রথমবারের মতো ছয় শতাধিক রান করেন বাংলাদেশ।
গল টেস্টটি দলগত সাফল্যের জন্য যেমন স্মরণীয় হয়ে থাকবে তেমনি সিরিজে ব্যক্তিগত সাফল্যও ছিল অনেক। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি করেন টাইগার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। অবশ্য ডাবল সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও পারেননি। শ্রীলঙ্কার সিরিজের পর বাংলাদেশ খেলতে যায় জিম্বাবুয়ে। কিন্তু সেই সফরটা সুখকর ছিল না টাইগারদের।
টেস্ট সিরিজ ড্র করলেও হেরেছে ওয়ানডে সিরিজে। ওয়ানডে সিরিজে হেরে যাওয়ায় রাগে, দুঃখে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন মুশফিক। পরবর্তীতে অবশ্য সেই অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ান মুশফিক। বিসিবি তার অধিনায়কত্বের মেয়াদ বাড়ান ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত। জিম্বাবুয়ে সফরের পর ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলে টাইগাররা।
ড্র করে ২ ম্যাচ টেস্ট সিরিজ। ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে। ২০১০ সালেও হোয়াইটওয়াশ করেছিল ব্ল্যাক ক্যাপসদের। অবশ্য টি-২০ ম্যাচে হেরে যায় টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের দলগত সাফল্য যেমন অনেক।
তেমনি ব্যক্তিগত সাফল্যও অনেক। চট্টগ্রাম টেস্টে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান সোহাগ গাজী। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে সোহাগ সেঞ্চুরির পাশাপাশি হ্যাটট্রিকসহ পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নেন। একই ম্যাচে ১৮১ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন মুমিনুল হক সৌরভ। আবার ওয়ানডেতেও হ্যাটট্রিক করেন রুবেল হোসেন।
হ্যাটট্রিকসহ ৬ উইকেট নেন রুবেল। নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো তিন শতাধিক স্কোর তাড়া করে ম্যাচ জেতার রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। দেশের দলগত ও ব্যক্তিগত সাফল্যে উজ্জ্বল ছিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২০১৩ সালে টাইগাররা টেস্ট খেলেছে ৬টি। একটি জয়ের বিপক্ষে হেরেছে দুটি।
ড্র তিনটিতে। ৯ ওয়ানডের ৫টিতে এবং হার তিনটিতে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরিত্যক্ত হয় একটি ম্যাচ। চারটি টি-২০ খেলে জয় একটিতে এবং হেরেছে তিনটিতে। ঘরোয়া ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হয় গাজী ট্যাংক (লিজেন্ড অব রূপগঞ্জ)।
বিসিবির নির্বাচনও হয়েছে এবার। প্রথমবারের মতো বিসিবির নির্বাচিত সভাপতি হন নাজমুল হাসান পাপন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের গ্রাফটা উপরের দিকেই ছিল। তবে বিতর্কও ছেয়েছিল এ দেশের ক্রিকেটকে। বিপিএল কলঙ্ক দেশের ক্রিকেটকে লজ্জিত করেছে ক্রিকেট বিশ্বে।
বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকায় মোহাম্মদ আশরাফুল, মোশাররফ হোসেন রুবেল ও মাহাবুবুল আলম রবিনকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয় সব ধরনের ক্রিকেটে। এর বিচারের জন্য একটি ট্রাইব্যুনাল কমিটিও গঠন করে বিসিবি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।