ছোট্ট একটা গল্প বলি, শোন।
না না , গল্প নয় তা,
সত্যি কথাই , জেনো।
ও গাঁয়ের ঠিক শেষ বাড়িটায়
একটা ছোট পুতুল ছিল,
নামটি কিন্তু পুতুল নয় তার,
দেখতে ওযে পুতুল ছিল যেন।
নুন আনতে পানতা ফুরোয়,
এমন ঘরে জন্ম যার,
সেই মেয়ে কি পায় কখনো
আদর স্নেহ বাবা, দাদা'র?
হাটি হাটি পা পা করে
কখন যে সে বড় হলো?
তার জন্যেই সেই বাড়িতে
আঁধার কেটে আলো এলো।
সন্ধ্যেবেলা উঠোনধারে মালতীফুল
তুলতো যখন;
টোলপড়া সেই ফোকলাবুড়ী'র
আলোকঝড়া মুখটা দেখে
গোমরামুখো বাবার মুখেও
হাসির রেখা ফুটতো তখন।
মায়ের চোখের সেই মণিটি
ভর্তি হল ইস্কুলেতে।
হেলে দুলে বেণী নেড়ে,
গল্পকথার ফুলকী ঝেড়ে
আসতো যেতো গাঁয়ের পথে।
আসা যাওয়ার পথের পাশে
পুতুল দেখে রোজই কিছু
হিংস্র কুকুর থাকে বসে।
কখনোবা সিটি বাজায়,
কখনোবা নোংরা কথার ঢিল ছুঁড়ে দেয়।
থরো থরো কাঁপন নিয়ে
পুতুল এসে মাকে বলে,
"পড়তে আমি যাবো না আর,
বড্ড যে মা ভয় করে"।
"ধুর পাগলি, কুকুররা তো করেই অমন,
তাই বলে কি ওদের ভয়ে আঁধার ঘরে
বসে থেকে করবি আমার স্বপ্ন দমন"?
চঞ্চলা সেই ঝর্ণা এবার শান্ত শীতল নদী হল।
ভয়কাতুরে চোখ দুটোতে অশ্রু সদাই টলমল।
একদিন এক বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যেবেলা,
পাড়াশুদ্ধ লোকজন সব হয় উতলা।
মা করছেন আহাজারী,
পুতুল যে আজ ফেরেনি বাড়ি।
হন্যে হয়ে খুঁজছে সবাই,
পুতুল ওদের গেল কোথায়?
রাত গড়িয়ে ভোর হল,
পুতুল এবার দেখা দিল।
পুকুরধারের বাঁশঝারে, এ কোন পুতুল আছে পড়ে?
হিংস্র সে সব কুকরগুলো, প্রাণটি যে তার নিলই কেড়ে।
বিচার কেন চাইতে গেলো?
সেই কারণে মা বাবা আজ ভিটেহারা।
কুকুরগুলো আজও আছে।
একই পথে দাঁড়িয়ে থেকে,
অন্য আরও পুতুলদেরকে করছে তাড়া।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।