পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা সমুদ্রবন্দর ঘিরে শিল্প ও অর্থনীতির নতুন এক দিগন্ত দেখছেন ব্যবসায়ীরা। বন্দরের কাছাকাছি এলাকায় কলকারখানা গড়ে ওঠার যেমন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি দেশের আমদানি-রপ্তানিতেও এটি গতি আনবে বলে মনে করেন তারা। বন্দর-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাগর পাড়ের জনপদে একদিকে পর্যটন এলাকা কুয়াকাটা, আরেক দিকে সমুদ্রবন্দর পায়রা-৩। ফলে পর্যটনের সঙ্গে এখন অন্যান্য শিল্পও দ্রুত বিকশিত হবে। বন্দর ঘিরে নির্মাণ করা হবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও।
জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে গড়ে উঠবে জাহাজ ভাঙার (জাহাজ রিসাইক্লিন) শিল্প। মোটকথা অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলা ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পটুয়াখালী-বরিশালসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলই বদলে যাবে। ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে। বন্দর তদারকি প্রতিষ্ঠান সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে টিয়াখালী ও লালুয়া এলাকা সংলগ্ন রামনাবাদ চ্যানেলে এ বন্দরের অবস্থান। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ অর্ডিন্যান্স-২০১৩ গত ৫ নভেম্বর সংসদে পাস হয়।
১০ বছরে বন্দরের পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো নির্মাণ করতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। ১০০ একর জমিতে স্থাপন করা হচ্ছে প্রশাসনিক ও লাইটার জাহাজ নোঙরের জেটি এলাকা। পূর্ণাঙ্গ বন্দর স্থাপনে আরও চার হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। বন্দরের কারিগরি কাজের জন্য রয়েছে নৌ-বাহিনীর ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশের একটি ভ্রাম্যমাণ জাহাজ। পুরো কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৯ নভেম্বর সীমিত পরিসরে এর কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন।
দুটি পন্টুন, একটি প্রশাসনিক ভবন ও একটি গুদাম নির্মাণ করে আপাতত ছোট ভ্যাসেলের সাহায্যে পণ্য খালাস করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, রামনাবাদ চ্যানেলে গভীরতা বেশি থাকায় বন্দরের জেটিতে মাদার ভ্যাসেল আসতে পারবে। পণ্য সরাসরি লোড-আনলোড করা যাবে। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরে গভীরতা কম থাকায় মাদার ভ্যাসেল ভিড়তে পারে না। এ জন্য ভ্যাসেল থেকে প্রথমে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য তুলে জেটিতে নিয়ে খালাস করা হয়।
ফলে পণ্য লোড-আনলোডে সময়ের সঙ্গে খরচও বেড়ে যায়। এ বন্দর চালু হলে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের ওপর চাপ কমবে। ভোগান্তি কমবে ব্যবসায়ীদের। বন্দর সূত্র জানায়, নিরাপত্তা বাড়াতে একটি নৌঘাঁটি স্থাপনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে সমুদ্রসীমায় সন্ত্রাসী-ডাকাতি, চোরাচালান, অস্ত্র পাচার ও অবৈধ মৎস্য আহরণ কমে আসবে।
প্রতিরক্ষার পাশাপাশি দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রেও এটি সহায়ক হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।