শাসকদের পক্ষে সব চেষ্টা করার পরও শুধু আপামর জনগণের কাছেই নয়, বিদেশিদের কাছেও এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। কেউ এ নির্বাচন মেনে নেয়নি। অলৌকিক কিছু না হলে ৫ জানুয়ারি নির্বাচন হবে। নির্বাচনের পর সরকার পক্ষ দেশ ও দেশের বাইরে লবিং করবে। তারা সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করবে নির্বাচন মেনে নেওয়ার।
গত মঙ্গলবার বাংলাভিশনে নিউজ অ্যান্ড ভিউজ শীর্ষক টকশোতে অংশ নিয়ে এসব মন্তব্য করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব ড. সা'দত হোসাইন। আনোয়ার সাদির সঞ্চালনায় টকশোতে আরও অংশ নেন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে সা'দত হোসাইন বলেন, ২০১৩ সাল ছিল সংঘাত-সহিংসতার বছর। কোনো দিক থেকেই শুভ বছর ছিল না। বিভিন্ন রকম রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
৯ ডিসেম্বর বিশ্বজিৎকে হত্যা করা হয়েছে। সেটাই চলছে। এর মধ্যে সরকার একটি নির্বাচন করছে। স্বাভাবিকভাবেই এই নির্বাচন হলেও জনসাধারণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। বিদেশিদের কাছেও এই নির্বাচনের গুরুত্ব নেই।
অনেক আলোচনা করে একটি নির্বাচনী পদ্ধতি তৈরি করেছিলাম। কী রকম সংসদ হবে প্রধান ও বিরোধীদলীয় নেতার ক্ষমতা কী থাকবে। কিন্তু তার কোনোটাই এখন বিদ্যমান নেই। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের দুই-একদিন পর বেগম জিয়া ঘোষণা করেছিলেন, এটা কোনো পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন নয়। এর দুই দিন পরই বলা শুরু করল এটা গ্রহণযোগ্য।
মাঠ থেকে নির্বাচিত সাবেক মন্ত্রীরা এসে তাকে পরামর্শ দেওয়ায় বেগম জিয়া দৃষ্টি পাল্টাতে শুরু করেন। তারা দেশে-বিদেশে এরকম প্রচারণা চালায়। তাই সরকারও গঠিত হলো। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সেই সময় হোটেল শেরাটনে একটি ডিনার হয়েছিল। ডিনারে উপস্থিত একজন জার্মান মন্ত্রীকে সরকারের এক মন্ত্রী বললেন, নির্বাচন নিয়ে উন্নয়নশীল দেশে এমন অভিযোগ তোলা হয়।
এটা নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। বর্তমান সরকারও একই কাজ করবে। তারা প্রচারণা চালাবে, লবিং করবে। সরকারের কয়েকজন এখনই বলা শুরু করেছে। এতে করে হয়তো টিকে থাকা যায় কিন্তু কাজ করা যায় না।
বিশেষ করে বিদেশিদের চাপ সামলানো কঠিন। সরকারের গুরুত্ব না থাকলে বিদেশে বন্ধুহীন হয়ে পড়ে। যে কারণে কেনিয়া, মায়ানমার সমঝোতা করতে বাধ্য হয়েছে। শ্রীলঙ্কা যুদ্ধাপরাধের তদন্ত করতে না চাইলেও এখন করছে। তাই সরকার কতদিন টিকবে? যদি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য না হয়? পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দেশে দলীয়করণ অনেক দিন থেকেই চলছে।
২০১৩ সালে এসে চরম আকার ধারণ করেছে। পোস্টিং দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায়। যার ওপর সামান্য সন্দেহ ছিল তাকে ওএসডি করে রাখা হয়েছে। এত কিছুর পরেও আমাদের সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক সরকার হবে।
তাতে হয়তো আমাদের ১৫ থেকে ২০ বছর সময় লাগবে। এই সংঘাতের মাধ্যমে আপামর জনগণের চাপেই আলোচনা করতে বাধ্য হবে। দুঃশাসন মানুষ বেশিদিন গ্রহণ করে না। এক সময় রুখে দাঁড়ায়। বেশিদিন টিকে থাকে না।
এটাও থাকবে না। এই অস্থিরতার জন্য কখনোই এক পক্ষ দায়ী নয়। অনেকেই দায়ী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।