তিনি বলেন, “আমি মনে করি, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ০ দশমিক ৫ বা ০ দশমিক ৬ শতাংশ হারে কমছে। ”
বুধবার রাজধানীতে ইউএন এসকাপের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জরিপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন এই উপদেষ্টা।
বিশ্ব মন্দার মধ্যে দেশে দারুণ প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও বিশ্ব ব্যাংক চলতি অর্থবছরের জন্য দেশের ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে।
মির্জ্জা আজিজ বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।
“এটা রপ্তানি, উৎপাদনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
”
তবে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়েও বাংলাদেশ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৪টি দেশের মধ্যে থাকবে বলে আশা করেন তিনি।
তার মন্তব্য, “কিন্তু সমস্যা হলো মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। ওটা অর্জন করতে হলে আমাদের ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি লাগবে। ”
এসকাপ ২০১৩ প্রতিবেদনে ‘সর্বাত্মক ও টেকসই উন্নয়নের জন্য অগ্রমুখী ব্যাষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিমালা’র কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ হবে বলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন অধ্যয়ন ইনস্টিটেউটের মহাপরিচালক মুস্তফা কে মুজেরীর মতে, এই প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছিল ডিসেম্বরে, যখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ‘ততটা অস্থিতিশীল’ ছিল না।
প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসগরীয় ১০টি দেশে ‘সর্বাত্মক ও টেকসই’ উন্নয়নে বিনিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, কর্মসংস্থান নিরাপত্তা কর্মসূচি, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে সবার জন্য সার্বজনীন অ-অংশগ্রহণমূলক পেনশন, শারিরীকভাবে অক্ষম সব ব্যক্তির জন্য সুবিধা, জনস্বাস্থ্য ব্যয়ে অংশগ্রহণ বাড়ানো ও প্রাথমিক শিক্ষার সার্বজনীনতা নিশ্চিত করাসহ উন্নয়ন কর্মসূচির একটি প্যাকেজের জন্য বাংলাদেশকে জিডিপির ২২ শতাংশ বিনিয়োগ করতে হবে।
তবে সাবেক উপদেষ্টা বলেন, প্যাকেজের জন্য জিডিপির ২২ শতাংশ বিনিয়োগ করা কঠিন হবে। “সরকার যা করতে পারে তা হলো- কর রাজস্ব আহরণ বাড়ানো।
অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক নিল ওয়াকার বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে অনেক কিছু করতে হবে।
তার মতে, “এজন্য কর রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি; শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোতে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে, দুর্নীতির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনায় প্রতিশ্রুত একটি দেশ নিশ্চিত করতে হবে। ”
ওয়াকারের মতে, আহরণের স্তর বাড়িয়ে কর রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। “কর আহরণের হার এত কম হলে আমরা কোনোভাবেই প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে পারব না। ”
রাজনৈতিক দলগুলো চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার অর্থনৈতিক প্রভাবকে ‘প্রায়ই অস্বীকার করেন ও কম গুরুত্ব দেন’।
তিনি বলেন, “তারা যদি নির্বাচনের শর্ত নিয়ে আলোচনা করে নির্বাচনের সময়ের সরকারের ধরণ ঠিক করে এবং বিশেষ করে অর্থনৈতিক বিনিয়োগের জন্য সার্বিক পরিবেশ উন্নত করেতে তারা সহিংসতাকে পরিহার করেন তাহলে তা হবে খুব ভাল। ”
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক দুর্নীতিকে বাংলাদেশের জন্য ‘দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহাসিক মহামারী’ আখ্যা দেন।
‘দুর্নীতি’ নির্মূল করার জন্য রাজনীতিকদের ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন তিনি।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জরিপ হলো এ অঞ্চলের সবচেয়ে পুরনো এবং সবচেয়ে বিস্তৃত অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ে বার্ষিক পর্যালোচনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।