নানা নাটকীয়তার মধ্যে বিএনপিবিহীন দশম সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনে ভোটে জয়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হাসপাতাল থেকে শনিবার সংসদ ভবনে গিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিজয়ীদের শপথ অনুষ্ঠানে গত বৃহস্পতিবার অনুপস্থিত থাকা এরশাদ এদিন দুপুরে আকস্মিকভাবে সংসদ ভবনে যান, তিনি স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কক্ষে শপথ নেন।
শপথ অনুষ্ঠানে থাকা নাম প্রকাশে সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শপথ নিতে ঢোকার পর স্পিকার হাসতে হাসতে এরশাদকে জিজ্ঞেস করেন- ‘আপনি আসলেন’।
“তখন এরশাদ বলেন, ‘রংপুরের মানুষ ভোট দিয়েছে, তাই আসতে হল’। ”
স্যুটপরা এরশাদকে স্পিকারের কক্ষে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়।
তিনি কক্ষে ঢুকেই তিনি শিরীন শারমিনকে সালাম দেন। এরপর শপথ নেন।
স্পিকারের কক্ষ থেকে বেরিয়ে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ঢোকেন সংসদ সচিবের কক্ষে। সেখানে শপথনামায় স্বাক্ষরের পর সোয়া ১২টার দিকে সংসদ ভবন ছাড়েন তিনি।
অন্য সংসদ সদস্যরা যে পথে আসেন, সেই পথে আসেননি সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ।
তিনি সংসদ ভবনে ঢোকেন গণভবনের বিপরীত দিকের প্রবেশপথ দিয়ে, যেদিক দিয়ে সাধারণত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ উপনেতা ঢোকেন।
প্রায় ২৫ মিনিট সংসদ ভবনে অবস্থানের সময় সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান এরশাদ। তার শপথ অনুষ্ঠানে সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা ছাড়া অন্যদের থাকার কড়াকড়ি ছিল।
নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত, এরপর নির্বাচনের যাওয়ার ঘোষণা, মনোয়নপত্র দাখিলের পর আবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে র্যাব পাহারায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে সরাসরি এরশাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে না।
এর মধ্যেই জাতীয় পার্টি থেকে রংপুর-৩ আসনে ভোটে বিজয়ী হন এরশাদ, তবে লালমনিরহাটের আসনে হারেন তিনি।
লালমনিরহাটের আরেকটি আসনে হারেন এরশাদের ভাই মন্ত্রী জি এম কাদেরও।
এরশাদ তিনটি আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও পরে তার পক্ষে তা প্রত্যাহারের আবেদনও হয়েছিল। কিন্তু ঢাকা-১৭ আসনে প্রত্যাহারের আবেদন ইসি গ্রহণ করলেও রংপুর ও লালমনিরহাটের দুটি আসনে সেই আবেদন গৃহীত না হওয়ায় ব্যালট পেপারে তার নাম থেকে যায়।
১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পর এ নিয়ে চতুর্থবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন ৮৪ বছর বয়সি এরশাদ।
৫ জানুয়ারির ভোটে ১৩ জন এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ২০ জনকে নিয়ে বিএনপিবিহীন দশম সংসদে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এরশাদের দল জাতীয় পার্টি।
তবে দলীয় চেয়ারপারসন হলেও সংসদে বিরোধী দলের নেতা তিনি হচ্ছেন না। তার স্ত্রী দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রওশন এরশাদকে সংসদীয় দলের প্রধান নির্বাচিত করে তাকে বিরোধীদলীয় নেতা হওয়ার পথও তৈরি করে দিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা।
এতে এরশাদের সায় রয়েছে বলেও বৃহস্পতিবার শপথ নেয়ার পর রওশন সাংবাদিকদের জানান।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।