আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রংপুরের ক্ষেপ, খেয়ালের পথ। --- ১

সত্য সুন্দরকে ব্রত করি জীবনে ( এক সকালে ছবি তোলার সময় টাউন হলের সামনে একজন জানতে চাইছিল ' আপনি কি লেখালেখি করেন?' না জবাব দিয়ে ছবি তুলছিলাম মনোযোগ দিয়ে । আজ মনে হোল সেদিনের কথা মিথ্যা প্রমানিত করে লেখালেখি করছি । ) " আসাম মেলে আসবার সময় দেখলুম আড়ংঘাটা ছাড়িয়ে রেলের দু'ধারে বহুদূর পর্যন্ত বন্যার জলে ডুবে আছে। ..... তিস্তা ব্রিজ পার হইনি ১৯০৬ সালের পরে আর কখনও । সেই এসেছিলুম বাবার সঙ্গে রংপুরে, তখন আমি আট-ন' বছরের বালক ।

কত জল তার পরে গঙ্গা দিয়ে বয়ে চলে গিয়েছে !" ( যুঁই-যূথিকা, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ) বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর সেই স্মৃতিধন্য অঞ্চলে বহুদিন পরে গিয়ে মনে হল এই সেই রংপুরের ধাপ, ছোট একটা ছেলে বই-খাতা বুকের কাছে চেপে রংপুর জেলা স্কুলে যাবে বলে বাড়ী থেকে বেরিয়েছে । রোজ যায় পুলিশ সুপারের বাংলোর সামনে দিয়ে চেনা অচেনা লতা-পাতার গন্ধে বিভোর হয়ে, চেনা-অচেনা পাখীর ডাকে কান পেতে । স্কুল ছুটি হলে শংকা মারির শ্মশানের দিকটায় ঘুরতে যেতে পারে ছেলেটি, ঘাঘট নদীর জল তার অবাঁধ স্বাধীন জীবনে প্রভাব ফেলে ; ( বুদ্ধদেব গুহের "ঋভু" দ্রষ্টব্য) ( ঘাঘট নদের তীরে বট গাছ, কালের স্বাক্ষী, কি জানি বুদ্ধদেব গুহ কখনো এটার গায়ে হেলান দিয়ে ভেবেছিল কিনা এ নদের এহেন পরিনতির কথা ) প্রিয় সাহিত্যিকদের তালিকায় শীর্ষে আছে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, আছে বুদ্ধদেব গুহ । তাদের লেখায় প্রকৃতি যেমন প্রান পেয়েছে তেমনি পেয়েছে স্বীকৃতি । প্রকৃতি -বন্দনা শুধু তারা করেননি , প্রকৃতি প্রেমী এ দু'জন নিরন্তর সাধনা করেছেন প্রকৃতির ছবি আঁকতে তাদের লেখনী শক্তি দিয়ে ।

তাদের পদধূলি পড়েছে যেখানে সেই রংপুরকে ভাল না বেসে কি পারা যায় ? "আসাম মেলে রংপুর রওনা হলুম সেখানে সারস্বত-সম্মেলনের সভাপতিত্ব করতে। .. স্টেশনে নেমে ঘোড়ার গাড়ীতে প্রবোধবাবুর বাড়ি গিয়ে উঠলুম । ...পরদিন সকালে সভার অধিবেশন হ'লো টাউন হলে । " ( যুঁই-যূথিকা, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ) (এই সেই টাউন হল ) শিল্প-সাহিত্যে ঐতিহ্যবাহী রংপুরে ১৮৫৪ খৃষ্টাব্দে স্থাপিত রংপুর পাবলিক লাইব্রেরী সম্পর্কে শোনা কথা হোল ভারত উপমহাদেশে জনগনের জন্য স্থাপিত প্রথম দিকে হাতে গোনা কয়েকটি লাইব্রেরীর মধ্যে এটি একটি । ( ১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত রঙপুর সাহিত্য পরিষদ) রংপুর টাউন হল, পাবলিক লাইব্রেরী এবং সাহিত্য পরিষদ একই চত্তরে পাশাপাশি অবস্থিত ।

তার সামনে নীচের ছবির এই ধাতব কারুকার্যমন্ডিত দন্ড ঋজুভঙ্গীতে এখনো দাড়িয়ে আছে । "প্রিন্সিপ্যাল ডি. এন. মল্লিকের সঙ্গে বহুকাল পরে দেখা ... সে আজ চোদ্দো-পনের বছরের কথা । মাথার চুল সব সাদা হয়ে গিয়েছে -- এখন এখানে কারমাইকেল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল । সভার পর দুপুরবেলা প্রবোধবাবুর সঙ্গে মোটরে বার হয়ে কলেজ বেড়িয়ে এলাম । অতবড় কলেজের বাড়িটা বাংলাদেশের অন্য কোন কলেজে নেই বলেই আমার ধারনা ।

" ( যুঁই-যূথিকা, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ) (স্থাপত্যকলার অপূর্ব নিদর্শন নিয়ে দাড়িয়ে আছে কারমাইকেল কলেজ) ( সেই ১৯১৬ সালে শ্বেতপাথরে কে খোদাই করেছিল কথাগুলো? সে এখন কোথায়?) ( কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসের এই বিশাল মহীরূহ যদি কথা বলতে পারত ! কত ঘটনা ওর বাকলে আঁচড় কেটে গেছে ! গাছটাকে দেখে বড় ঈর্ষা হচ্ছিল ) ( ফটোগ্রাফার : মেহবুবা) চলবে...... পরের পর্ব: Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.