সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নবীন-প্রবীণের চমক মন্ত্রিসভা আজ দিতে যাচ্ছেন তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় ঐকমত্যের সরকারে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির অন্তত চারজন মন্ত্রী থাকছেন। জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও জেপি থেকেও মন্ত্রী হচ্ছেন। এদিকে বিরোধী দল থেকে মন্ত্রী রাখা না রাখা নিয়ে সরকারের ওপর মহলে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত রয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতারা যেমন সরকারে থাকতে আগ্রহী তেমনি তাদের হয়ে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদও দেনদরবার করছেন।
তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়, মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টিকে রাখতে শেখ হাসিনার মনোভাব ইতিবাচক। এদিকে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে অনুমোদন হয়ে আসা তালিকা ধরে গতকাল রাতেই মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের আজ শপথ গ্রহণের জন্য টেলিফোনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
সূত্র জানায়, আজ বিকালে শপথ নিতে যাওয়া সম্ভাব্য মন্ত্রীদের তালিকার শীর্ষে রয়েছেন আওয়ামী লীগ রাজনীতির দুর্দিনের কাণ্ডারি আমির হোসেন আমু ও এই সময়ের ক্রাইসিস ম্যানেজার তোফায়েল আহমেদ। দীর্ঘ বিরতির পর জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ নাসিম আজ শপথ নেবেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও থাকছেন।
জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, মুজিবুল হক চুন্নু ও মশিউর রহমান রাঙ্গার অন্তর্ভুক্তি অনেকটা নিশ্চিত। একই সঙ্গে জোট শরিক জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন মন্ত্রিসভায় থাকছেন। আজ নতুন মন্ত্রিসভার শপথের আগে যারা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় উপদেষ্টা ছিলেন তাদের বর্তমান পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী নতুনভাবে তার উপদেষ্টা নিয়োগ দেবেন। এবারের মন্ত্রিসভায় দু-এক জন উপমন্ত্রীও থাকবেন।
নানা সূত্রে জানা যায়, বিগত মন্ত্রিসভার সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, ওবায়দুল কাদের, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, নুরুল ইসলাম নাহিদ, শাজাহান খান, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং চট্টগ্রামের ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন ও মুজিবুল হক আজ শপথ নিতে যাচ্ছেন। তবে পররাষ্ট্র ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী কে হবেন তা এখনো নিশ্চিত নয়। অনেকেই মনে করেন চলমান রাজনৈতিক সংকট ও বিশ্বরাজনীতির প্রেক্ষাপটে তোফায়েল আহমেদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হলে সরকারের জন্য সুখকর হবে। এমনকি দলের জন্য তাদের পরামর্শ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আমির হোসেন আমুর হাতে দেওয়া। আমু, তোফায়েলসহ সিনিয়র নেতাদের কেউই কোনো মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
তবে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবার পররাষ্ট্রে যেতে আগ্রহী। ডা. দীপু মনির আগ্রহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শেখ হাসিনা সরকারের সফল যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী আগের জায়গায়ই থাকছেন। সরকারের শুভাকাঙ্ক্ষীরা মনে করেন, জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে পানিসম্পদমন্ত্রীর দায়িত্ব দিলে ইতিবাচক ফলাফল আসবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের দায়িত্বে অনেক বিচক্ষণ রাজনীতিবিদের সাহস না থাকলেও সেই মোহাম্মদ নাসিম এবারও তা কাঁধে নিতে পারেন।
বিগত সরকারের প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি এম তাজুল ইসলাম পূর্ণ মন্ত্রী হতে পারেন। আ হ ম মুস্তাফা কামাল (লোটাস কামাল), মৌলভীবাজারের সৈয়দ মহসিন আলী, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।
এ মন্ত্রিসভায় আইনমন্ত্রী হিসেবে চমক হয়ে আসছেন অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। সাবের হোসেন চৌধুরী, আসাদুজ্জামান নূর, মির্জা আজম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সিমিন হোসেন রিমি, জুনায়েদ আহমেদ পলক, শাহরিয়ার আলম, নারায়ণ চন্দ্র চন্দর নামও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে গতকাল শোনা গেছে। এদিকে আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী থাকলে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে টেকনোক্র্যাট কোটায় আসতে পারেন অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।