আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধুসর

নিজের সম্পর্কে এখনো অনুসন্ধান চলছে ...তাই এখন কিছু বলতে পারছিনা... অনুসন্ধান কখন শেষ হবে সেটাও জানি না আমি । সচেতন ও বলা যায় না নিজেকে অচেতন ও না তাই আমার এই অবচেতন অবস্থান ।


৩০ শে পৌষ , ১৪২০

অনেক সময় অনেক বড় বড় কষ্টের বিষয় গুলোও তেমন গায়ে লাগে না আমাদের অথচ ক্ষুদ্র ক্ষদ্র বিষয়ে অনেক কষ্ট পেয়ে যাই । যেমন অনেক দিন পর পরিচিত কোন মানুষের সাথে দেখা হলে একটুখানি মুচকি হাসিতেই তাকে খুশি করা যায় অথচ অনেকেই মিথ্যা কিছু অহংকারের দেয়াল ভাংতে পারেনা এবং অপরজন মনে মনে দুঃখ পেয়ে বসে। একটা মানুষ সে যেমনই হোক অন্যের কাছে কতটা গুরুত্বপুর্ণ তা জানি না তবে নিজের কাছে সে সবেচেয়ে বেশি গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তি ।


যাই হোক এসব ভাবতে ভাবতে কৃত্রিম উজ্জ্বল কলঙ্কিত চাঁদের নিচের এই পৃথিবীর এক চক চকে ফ্লাই ওভারের উপর দিয়ে হেটেঁ আসছিলো শাফায়েত । তার মন প্রচন্ড খারাপ আজকে খুব কাছেরই এক বন্ধুর আচরনে চরম কষ্ট পেয়েছে সে। মানুষ কেমনে এতো স্বার্থপর হয় ? “কাজের বেলায় কাজী আর কাজ ফুরোলেই পাজী!” এই বাক্য টা এতো সত্য কেন ? সুর্যের আলোর দিকে এক চোখে তাকিয়ে থাকার ক্ষমতা আছে যার , সেই শাফায়াতের চোখ আজকে চাঁদের আলোকেও যেন ভয় পাচ্ছে ঐ আলোয় চিক চিক করছে তার মুখ। ছেলেদের এসব মানায় না। এসব ন্যাকামী চোখের পানি মেয়েদেরকে মানায় ।

সে ভাবতে থাকে অনেক কিছুই মাঝে মাঝে তার নিজেকে ফেরেশতা মনে হয় মাঝে মাঝে শয়তান। তারপর এই সমীকরনে আসে যে প্রত্যেক মানুষেরই দুটো রূপ থাকে , এসব চিন্তা করতে করতে হঠাত তার মনে পড়লো আর কিছুক্ষন পরেই চেলসি আর ম্যান ইউ এর খেলা! এই খেলা সে কেমনে মিস করবে !? কোন কিছু না ভেবেই দৌড়ানো শুরু করলো সে । পাশেই ব্যস্ত হয়ে গাড়ী গুনছিলো কিছু জনতা , আচমকা আতিক্কা দৌড়ানোর ব্যাপার টা লক্ষ্য করলো তারা এবং নিজ নিজ অবস্থান থেকে কেউ লুঙ্গি তে কোচ মেরে , কেউ হাত থেকে বাদামের ঠোঙ্গা ফেলে , দৌড়ানো শুরু করলো শাফায়েতের পিছনে । বড় হওয়ার পরেও মানুষের খুব দৌড়াতে ইচ্ছে করে কিন্তু সব সময় সে সুযোগ হয় না তাই সুযোগ ছাড়লো না কেউই । দৌড়ানোর এক পর্যায়ে রাস্তা পাড় হতে গিয়ে ট্রাকের নিচে চাপা পড়লো শাফায়েত ।

প্রথমে শুধুমাত্র পায়ের উপর দিয়ে চলে গেলেও পিছনের ট্রাকটা একদম মাথার উপর দিয়ে যায় । নর এর স্যুপের মতো রাস্তায় ছিটিয়ে যায় তার মগজ , একদম চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া শরীর টাতে বসের টমেটো সসের মতো লেগে থাকে রক্ত গুলো । আর এই অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করে অনেকেই । যাই হোক শাফায়েতের আর সুখ দুঃখের সমীকরন নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ হয়নি । সুযোগ হয় নি চেলসি আর ম্যন ইউ এর খেলা টা দেখার।

তবে তার শরীর চ্যপ্টা হলেও চ্যপ্টা না হওয়া মোবাইল টা তখন বেজে উঠলো! কার যেন ম্যসেজ এসেছে! কি ভেবেছেন ? ঐ কাছের বন্ধু টা স্যরি বলে মেসেজ পাঠিয়েছে ?
উহুম ভুল , “টুম হি হো স্রেফ টুম হি হো” গান টি কে কলার টিউন করার আহবান জানিয়ে একটি মেসেজ এসেছে কাস্টমার কেয়ার থেকে । সে এয়ারটেল এর প্রিয় গ্রাহক ছিল । মেসেজ পড়ে লাশটি যেন এখনই খুশিতে নেচে উঠবে , যেন কবিতা বলে উঠবে ,

“অনুভূতি আজ অবশ হোক
ধুসর স্মৃতিরা থাক জেগে ,
স্বপ্ন নিয়ে উড়ে বেড়াবো
জীবন ক্যনভাস যাক রেগে”

মরাল অফ দ্য crap(স্টোরি): রাস্তা সাবধানে পাড় হবেন , সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।