আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুইটি বিজাতীয় মতবাদ ও প্রকৃত মুসলিমদের দায়িত্ব



(মুসলিম অমুসলিম সবাই পুরোটা পড়ুন)
ভুমিকাঃ বিসমিল্লাহির রহমানমানির রহিম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য(সুরা ফাতিহা-১) .আল্লাহর রহমতে নতুন একটি লেখা লিখলাম। হে আল্লাহ আমার লেখায় যদি কোন ভুল থাকে তাহলে আপনি তা ক্ষমা করে দিন। বন্ধুগন, আপনারা যদি কেউ কোন ভুল ধরতে পারেন তাহলে তা বিনা সঙ্কচে জানাবেন।
ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ ও গনতন্ত্র দুটি বিষয় নিয়ে অতি সংক্ষেপে লিখলাম।

যদিও এই দুটি বিষয় নিয়ে অনেক আলোচনা করা যায়। ইসলামিক লেখা বাজার পায়না, লোকজন এই ধরনের লেখার ধারে কাছেও ঘেঁষে না। তাই অতি সংক্ষেপে লিখলাম। ইনশা আল্লাহ্‌ আশা করি মুসলিম-অমুসলিম সবাই পড়বেন এবং বিশেষভাবে অমুসলিম ভাইরা বেশ উপকৃত হবেন।



১. Secularism বা ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদঃ
“সাধারণত যেকোনো রাষ্ট্রে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বাস করে।

তাদের নিরাপত্তা ও সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে কোন রাষ্ট্রকে অবশ্যই ধর্মনিরপেক্ষ হতে হবে। ” ভাল, খুব ভালো। যদিও আপাত দৃষ্টিতে এই মতবাদটিকে খুব ভালো বলে মনে হবে কিন্তু এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে বিরাট বড় শয়তানি ধোঁকা। এর জন্য আপনাদেরকে নিয়ে যাব এই মতবাদটির গোঁড়ার দিকে এবং ইনশা আল্লাহ প্রমান করে দিব, এটি সম্পূর্ণ রুপে একটি কুফরি মতবাদ।

Secularism বা ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ এর জন্ম উনবিংশ শতাব্দীর মাঝের দিকে।

এর মুল বক্তব্য, “Religion shouldn’t be allowed to come into politics, it is merely matter between man and god.” বাংলা ভাবানুবাদ করলে হয়, “ধর্মকে রাজনীতিতে প্রবেশ করতে দেয়া উচিৎ নয়, এটি মানুষ ও ঈশ্বরের মাঝে নিছকই একটি সম্পর্ক। ”

খ্রিস্টান ধর্মে রাষ্ট্র পরিচালনার কোন আইন না থাকলেও মধ্যযুগ হতে অষ্টাদশ-উনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত খ্রিস্টান ধর্মযাজকরা রাষ্ট্র পরিচালনায় ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ নিত। কিন্তু তাদের আচরন ছিল ন্যায়ভ্রষ্ট। সবার জন্য সমান অধিকার তারা নিশ্চিত করতে পারেননি। তাই তাদের এই হঠকারিতা হতে মানবজাতিকে মুক্তি দিতে জন্ম হয় দুটি ধারনার।

একটি “Secularism বা ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ” এবং অপরটি “Communism বা সমাজতন্ত্র” ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের রুপকাররা ও কার্ল মারক্সের কাছে ইসলামের বানী পৌঁছায়নি। যদি পৌঁছাত তাহলে এই দুটি ধারনার সৃষ্টি নাও হতে পারত। সাধারন মানুষকে মুক্তি দিতে চার্চের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া এই মতবাদদুটি ইসলামে অচল। কারন, ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা বা পূর্ণাঙগ দ্বীন। এই মতবাদটির মাধ্যমে ইসলামকে শুধুমাত্র মসজিদে আটকিয়ে রাখা হয়েছে।

আপনি যদি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়া মুসলিমও হন, কিন্তু শিকার করেন, ইসলামের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশাধিকার নেই (বা ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদে বিশ্বাস করেন) তাহলে সোজা কথায় আপনি কাফির।

তথাকথিত উদারতার নামে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে এই মতবাদ চালু করা হয়েছে। যার মুল কথাই হল রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে ইসলামের কোন বিধান চলবে না। এই মতবাদটির মুল উদ্দেশ্য হল,
I> ইসলামকে বৈষয়িক জীবন থেকে বিতারিত করে আধ্যাত্মিক জীবনে আটকিয়ে ফেলা।
II> অতঃপর সেখান থেকে ক্রমে ক্রমে মানুষকে পুরো নাস্তিক ও বস্তুবাদি করে ফেলা।


অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, ইহুদি-খ্রিস্টান ও দেশিয়ও লম্বা গোঁফওয়ালা বুদ্ধিজীবীরা প্রথম ধাপটি অত্যন্ত সফলতার সাথে করতে পেরেছে। সর্বক্ষেত্রে এই মতবাদের প্রচলনের ফলে মুসলিমরাও এখন ইসলামকে অপূর্ণ ও বিকলাঙ্গ ভাবতে শুরু করেছে।
তাই, আপনাদের কাছে অনুরোধ রইল আপনারা এই কুফর থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকুন।

আনুষঙ্গিক প্রশ্নঃ

১. তাহলে কি মুসলিম দেশে অমুসলিমদের কোন স্থান নেই???
২. যেখানেই অমুসলিম দেখা যাবে সেখানেই তাদেরকে হত্যা করা হবে???
৩. মুসলিম দেশে অমুসলিমদের বিধান কি??
৪. মুসলিম হবার পরেও এমন কোন রাজনৈতিক দলে যোগদান করা জায়েজ হবে কি যাদের মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ???
উত্তরঃ
১>> মুহাম্মাদ (সা), আবু বকর (রা), উমার (রা) প্রমুখ ছিলেন একই সাথে সর্বোচ্চ ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় নেতা। মাধ্যমিক সিলেবাসের উমার ফারুক কবিতাটি আমরা সবাই পড়েছি।

রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে উমারের ছেলের মৃত্যু হলেও তিনি ন্যায়বিচার থেকে একটুও সরে আসেননি। এরকম ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে প্রচুর।
মুহাম্মাদ (সা) যখন মদিনায় ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন সেখানে ইহুদি-নাসারা ছিল। কিন্তু তারা একটুও অন্যায়ের শিকার হননি। এছাড়াও বর্তমানে আরব বিশ্বে প্রায় দের কোটির মত কপটিক খ্রিস্টান* রয়েছে।

তারাও কখনো বৈষম্যের শিকার হননি। (কপটিক খ্রিস্টান মানে বংশ পরম্পরায় খ্রিস্টান)

২>> বিনা কারনে তাদের কাউকেই হত্যা করা যাবে না। আল্লাহ্‌ বলেন, “বিনা অপরাধে মুসলিম অমুসলিম যে কাউকে হত্যা করা সম্পূর্ণ মানব জাতিকে হত্যা করার সমান”

৩>> অমুসলিমরা মুসলিম দেশে শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান করবে। সরকার তাদেরকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিবে। তাদের মূর্তি, মন্দির, গির্জা যেন ভাঙ্গা না হয় সেদিকে সরকার দৃষ্টি রাখবে।

কারন ইসলামে সন্ত্রাসবাদের কোন স্থান নেই। একইসাথে তাদেরকে ভদ্র ভাষায় দাওয়াত দিতে হবে। তাদের সাথে কোনপ্রকার জোর জবরদস্তি করা যাবেনা। ইসা (আ)* এর পুনরায় আগমনের পূর্ব পর্যন্ত ইসলাম গ্রহন করা না করা তাদের ব্যক্তিগত ব্যপার। * (খ্রিস্টানরা যাকে জিশু খ্রিষ্ট বলে থাকে)

৪>> মুসলিম হবার পরেও এমন কোন রাজনৈতিক দলে যোগদান করা সম্পূর্ণ হারাম যাদের মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ।

বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ। তাই এই দলে যোগদান করা কোন মুসলিমের পক্ষে সম্পূর্ণ অনুচিত। এই দলটি ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতার কথা বললেও বিগত পাঁচ বছরে আমরা দেখেছি কিভাবে এই দলটি সঙ্খালঘুদের মন্দির, বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে অন্য দলের উপর দোষ চাপিয়েছে। তাদের নেতা কর্মীরা পুলিশের হাতে ধরা খেলেও তাদের কোন বিচার হয়নি। হয়তবা তাদের জামিনও হয়ে গেছে।






২. Democracy বা গনতন্ত্র
Democracy গ্রিক শব্দ। এর মানে “জনগনের শাসন” .বহু আগে থেকেই গ্রিসে গণতন্ত্র চলে আসলেও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন (১৮০৯-১৮৬৫) এর মাধ্যমে বিশ্ববাসি গণতন্ত্রের একটি আধুনিক ধারনা পায়। তার মতে “Democracy is a government of the people, by the people and for the people”. বাংলা ভাবানুবাদ করলে হয়, “গনতন্ত্র হল এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে ক্ষমতার মালিক জনগণ এবং জনগণের মাধ্যমে ও জনগণের ভালোর জন্য শাসনকার্য পরিচালিত হয়। ” আপাত দৃষ্টিতে এটাকেও খুব ভালো মনে হবে। মনে হবে, এর চেয়ে ভালো রাষ্ট্র ব্যবস্থা আর হয়না।

হ্যাঁ, আসলেই তাই। অন্যান্য মানব রচিত জীবন বিধানের চেয়ে এটা অনেক উন্নত।

কিন্তু শয়তান বরাবরের মত এবারো মানুষকে ধোঁকা দিয়ে তার আকিদায় (বিশ্বাসে) শিরক ঢুকিয়ে দিয়েছে। কি?? ভাবতে অবাক লাগছে গনতন্ত্র শিরক কিভাবে??? তাহলে পড়তে থাকুন...
যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয়, আপনার চারপাশে যা কিছু দেখতে পাচ্ছেন মাটি, গাছপালা, পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র, পশু-পাখি, টাকা-পয়সা, এমনকি আপনার নিজের মালিক কে??? আপনি যদি মুসলিম হন তাহলে উত্তর দিবেন... কে আবার?? ““আল্লাহ সুবহানাতাআলা””। ভালো।

আপনার উত্তর আপনার কাছে রাখুন।
আবার আপনাকে প্রশ্ন করা হল, আপনি যে সবসময় গনতন্ত্র গনতন্ত্র বলে চিল্লাছেন এই গনতন্ত্রে মালিক কারা??? আপনি আবারো নির্দ্বিধায় উত্তর দিবেন.... ““জনগণ””

হ্যাঁ, গনতন্ত্রে সার্বভৌমত্ব ক্ষমতার মালিক জনগণ। অর্থাৎ আপনি নিজের অজান্তেই শিরক করে বসেছেন। আল্লাহতাআলাকে জনগণ দ্বারা প্রতিস্থাপন করেছেন। এ কারনেই আল্লাহ্‌ বলেন, “অধিকাংশ লোক আল্লাহর প্রতি ইমান আনার পরেও মুশরিক” (ইউসুফ-১০৬)

গনতন্ত্রের প্রথম কথাটি শিরক হলেও এর পরবর্তী কথা দুটিতে কোন সমস্যা নেই।

জনগণের মাধ্যমে ও জনগণের ভালোর জন্য শাসনকার্য পরিচালিত হয়। ইসলামিক শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রযন্ত্র জনগণের মাধ্যমেই ও জনগণের ভালোর জন্যই পরিচালিত হয়। সম্ভবত বর্তমান সরকার সংবিধান হতে “সকল ক্ষমতার মালিক আল্লাহ” বাদ দিয়ে “সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ” করেছে। সংবিধানে যদি ওই কথাটা থাকত তাহলে হিন্দু খ্রিস্টান বৌদ্ধ কারও কি কোন ক্ষতি হত??

যাই হোক, আল্লাহ্‌ যেন তাদের কে হেদায়েত দেন। আমিন।

এবং আমি সকল দ্বীনি মুসলিম ভাই বোনদের পক্ষ হতে দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় শাসকবর্গকে কুরআন সুন্নাহর আলোকে সংবিধান গড়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

আনুষঙ্গিক প্রশ্নঃ
১. আপনার মতে গনতন্ত্র শিরক ও কুফর। তার মানে দেশের অধিকাংশ লোক মুশরিক-কাফির আর আপনারাই প্রকৃত মুসলিম???
২. ইসলামে কি ভোট ব্যবস্থা হারাম??? যদি তাই হয় তাহলে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের উপায় কি??
৩. গনতান্ত্রিক কর্মসূচি হিসেবে হরতাল-অবরোধ, রাজপথে মিছিল-জনসভা, মোমবাতি/ মশাল মিছিল ইত্যাদি করা কি বৈধ??
উত্তরঃ
১>> সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক জনগন। এই বিষয়টাই শিরক। যদি আপনি আল্লহকে বাদ দিয়ে জনগণকে সার্বভৌমত্ব ক্ষমতার মালিক বানিয়ে দেন তাহলে তো আপনাকে মুশরিক বলতে কোন আপত্তি নাই।

এই বিধান অনুযায়ী, অধিকাংশ লোকই মুশরিক-কাফির। কারন, আল্লাহ্‌ বলেন, “হকের পথে সামান্য সঙ্খক লোকই অটুট থাকবে” . তিনি আরও বলেন, “অধিকাংশ লোক আল্লাহর প্রতি ইমান আনার পরেও মুশরিক” (ইউসুফ-১০৬)

২>> শরিয়ত মানার পদ্ধতি দুই প্রকার। (নাম মনে আসছে না, আপনারা কেউ জানলে বলে দিবেন)
I) গৎবাঁধা ইবাদাতের (সালাত, সাওম, যাকাত ইত্যাদি) ক্ষেত্রে কোন কিছুই করা বৈধ নয় যতক্ষণ না দলিল পাওয়া যায়। অর্থাৎ সালাত, সাওম, যাকাত ইত্যাদির ক্ষেত্রে খুঁজতে হবে “হ্যাঁ এর দলিল”. যেমন, ফজরের ফরজ সালাত ২ রাকাত হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তাই আমরা ২ রাকাত ফজরের ফরজ সালাত আদায় করি।

প্রতি রাকাত সালাতে সূরা ফাতিহা পড়া বাধ্যতামূলক, সূরা ফাতিহা ছাড়া সালাত হবে না। এটি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তাই আমরা প্রতি রাকাত সালাতে সূরা ফাতিহা পড়ে থাকি। প্রতি রাকাত সালাত শেষে ইমাম মুক্তাদি সম্মিলিত মুনাজাত, মিলাদ/ দোয়া মাহফিল হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। অর্থাৎ বিদাআত।

তাই আমরা এসব করি না।
II) দৈনন্দিন জীবনের যেকোনো বিষয়ের (পোশাক, খাদ্য, পেশা ইত্যাদি) ক্ষেত্রে সবকিছুই হালাল হবে যতক্ষণ পর্যন্ত “না এর দলিল” পাওয়া না যায়। যেমন, সকল খাদ্য আমাদের জন্য হালাল। কিন্তু দলিল পাওয়া গেল, আলকোহল, শুকর হারাম। তাই আমরা এগুলো খাই না।

সকল পোশাক পরা আমাদের জন্য জায়েজ কিন্তু দলিল পাওয়া গেল, টাইট-ফিটিং পোশাক হারাম। তাই আমরা টাইট-ফিটিং পোশাক পরি না। আবার অনেক বিষয় বিজ্ঞ আলেমগনের ফতোয়ার (কুরআন হাদিস অনুযায়ী) মাধ্যমে নিস্পত্তি হয়ে থাকে। যেমন, সালাতে মাইক ব্যবহার, কম্পিউটার মোবাইল ব্যবহার ইত্যাদি।
একইভাবে ভোট দ্বিতীয় শ্রেণীর অন্তর্গত।

তাই এটি শরিয়তে প্রত্যক্ষভাবে হারাম নয়। বেশিরভাগ আলেমই এই পদ্ধতিকে সমর্থন দিলেও অনেকেই এটাকে ১০০% হালাল বলে ঘোষণা করেননি। তাদের মতে, “মনে করেন আপনি কোন এলাকায় গেছেন যেখানে শুকর ছাড়া আর কিছু নাই, তখন আপনাকে জীবন বাঁচানোর তাগিদে অবশ্যই শুকর খেতে হবে। ভোট পদ্ধতি ঠিক এইরকমই একটা ব্যপার। ”
তবে আমাদের মত অশিক্ষিত দেশে এটি যে কোন সুফল বয়ে আনতে পারবে না, তা বিগত ২২ বছরের ইতিহাসে স্পষ্ট।

এই পদ্ধতিতে একজন পিএইচডি ধারি আর অশিক্ষিত লোকের ভোটের অধিকার সমান। এর ফলে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন সচরাচরই বাধাগ্রস্থ হবে। আবার এটাতে বিপুল পরিমান সম্পদের অপচয় হয়। (এবার সম্ভাব্য খরচ ৫০০ কোটি টাকা!!) তবে রাতারাতি সব সম্ভব নয়। ধৈর্য ধরুন, একদিন এদেশে ইসলামিক আইন বাস্তবায়ন হবেই ইনশা আল্লাহ্‌।


দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের আল্লাহ্‌ভীরু, বিজ্ঞ, ন্যায়পরায়ন, বুদ্ধিসম্পন্ন লোকদের একটি দলের বৈঠকের মাধ্যমে ইসলামিক রাষ্ট্রের প্রধান কে হবেন, তা ঠিক করা হবে। এতে করে ভোট পদ্ধতির মত একটি ব্যয়বহুল ব্যপার হতে দেশ রক্ষা পাবে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় পুরো বাংলাদেশে এমন লোক ৫ জনও আছেন কিনা সন্দেহ।

৩>> গনতান্ত্রিক কর্মসূচি হিসেবে হরতাল-অবরোধ, রাজপথে মিছিল-জনসভা, মোমবাতি/ মশাল মিছিল ইত্যাদি করা সম্পূর্ণ হারাম। কারন,
I) ব্যপক জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হওয়া।

হরতাল অবরোধে সাধারন মানুষের যে কষ্ট হয় তা তো আপনারা ভালই জানেন। সাধারণত মতিঝিল থেকে মোহাম্মাদপুর যেতে ২ ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু শাহবাগে আন্দোলন চলার সময় এই সময়টা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৪-৫ ঘণ্টায়। এই ধরনের আন্দোলনের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার জন্য কিয়ামতের মাঠে তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। ইসলামি ঐক্যজোট, জামায়াতে ইসলামি, হেফাজতে ইসলাম নিজেদেরকে ইসলামি দল বলে দাবি করলেও তারাও বিভিন্ন সময়ে হরতাল অবরোধের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছেন।

যেসব ইসলামি দল ইসলামের নামে এমন কর্মসূচি দেয় তারা কতটুকু ইসলাম মানে তা প্রশ্নের দাবি রাখে।
II) দেশের বিপুল পরিমান অর্থনৈতিক ক্ষতি।
III) মোমবাতি মিছিল, মশাল মিছিল এর মাধ্যমে অপচয় ছাড়া আর কিছুই হয় না। এই টাকা গরিবদের জীবন যাত্রার মানোন্নয়নে খরচ করা হলে অনেক লাভ হত। অনেক আলেমের মতে এটা অগ্নিপুজার শামিল।


IV) মানবমনে ভীতির সঞ্ছার হয়।
V) দেশের নোংরা রাজনিতির শিকার হয়ে অসংখ্য মানুষ মৃত্যুবরণ করে।



উপসংহারঃ পরিশেষে এই কথা বলা যায় যে, যদি আপনি আপনার মুসলিমত্ব বজায় রাখতে চান অর্থাৎ পরকালে জান্নাতে যেতে চান তাহলে এই দুটি মতবাদ থেকে নিজেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখুন। আশা করি, আপনারা সবাইকে এই দুটি হতে বিরত থাকার জন্য দাওয়াত দিবেন। আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুক।

আমিন।

বি. দ্র. আল্লাহ্‌ তাআলা যদি ইচ্ছা করেন তাহলে সমাজতন্ত্র (communism) ও জাতীয়তাবাদ (nationalism) সম্পর্কে লিখা হবে।


আরও পড়তে পারেন..........

শিরকের বেড়াজালে সমাজ-পর্ব ১ (বড় শিরক-১)


শিরকের বেড়াজালে সমাজ-পর্ব ২ (বড় শিরক-২ )


ডা. জাকির নায়েকের সমালোচনার রহস্য উৎঘাটন এবং তাঁর প্রতি আমাদের মনোভাব কেমন হওয়া উচিৎ


ডা. জাকির নায়েক, নতুন ফেরকা??? নাকি আলোর দিশারি???


বর্তমানে আমাদের সমাজে সবচেয়ে ভ্রান্তভাবে প্রচলিত দুটি শব্দঃ জিহাদ এবং মৌলবাদ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।